মুখের মধ্যে আলসার বা ঘা খুব স্বাভাবিক এক ঘটনা যেখানে অল্প ফোলা এবং যন্ত্রণা-সহ একটি ক্ষত তৈরি হয়। প্রাথমিকভাবে মুখের মধ্যে ঝিল্লি বা মেমব্রেনের ক্ষতি হওয়ায় এটি সৃষ্টি হয় কারণ ঝিল্লি খুব সংবেদনশীল এবং স্পর্শকাতর। বিভিন্ন বয়সে, একাধিক কারণের জন্য মুখের আলসার হওয়া খুবই সাধারণ ঘটনা, কারণের মধ্যে থাকতে পারে আঘাত, পুষ্টির অভাব এবং মুখের স্বাস্থ্যের অবনতি। খুব সহজেই শারীরিক পরীক্ষা করে এগুলি নির্ণয় করা যায় এবং কোনও ধরনের রক্ত পরীক্ষা করার প্রয়োজন হয় না। তবে, বারবার মুখের আলসার বা ঘা হলে প্রকৃত কারণ নির্ণয়ের জন্য রক্ত পরীক্ষা করা যেতে পারে। সাধারণত একজন চিকিৎসক আলসার নিরাময় ত্বরান্বিত করার জন্য ওষুধ দিতে পারেন। বেশ কিছু ঘরোয়া প্রতিশেধক আছে যা মুখের আলসার বা ঘা নিরাময়ে সাহায্য করে।
মুখের আলসার বা ঘা নিরাময়ের চিকিৎসা খুবই প্রাচীন এবং অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল মাউথওয়াশ, ভিটামিন B কমপ্লেক্স ঘাটতি পূরণ এবং নির্দিষ্ট জায়গার যন্ত্রণা দূরীকরণের জন্য জেল ব্যবহার করা হয়ে থাকে। প্রতিশেধক হিসাবে ভিটামিন B12 বা রিবোফ্লাভিন এবং ফলিক অ্যাসিড পূর্ণ খাবার খাওয়া প্রয়োজন।
মুখের ঘা এর উপসর্গ - Symptoms of Mouth Ulcer in Bengali
গালের বা ঠোঁটের ভিতরের দিকে বা এমনকি জিভের ওপরে মাউথ আলসার দেখা দিতে পারে। যে কোনও ব্যক্তির একই সঙ্গে একাধিক মাউথ আলসার হতে পারে। সাধারণত একটি জায়গা ফুলে ওঠে, ক্ষতের চারপাশে লাল হয়ে ওঠে। ক্ষতটির কেন্দ্রটি হলুদ বা ধূসর রঙের হয়ে থাকে।
মাউথ আলসারের অত্যন্ত সাধারণ উপসর্গের মধ্যে থাকে:
• মুখের ভিতরে নরম লাল ক্ষত।
• কথা বলা বা খাওয়ার সময় ব্যাথা।
• জ্বালার অনুভূতি।
• প্রদাহ।
• অতিরিক্ত মাত্রায় লালা নির্গত হওয়া।
মুখের মধ্যে আলসার বা ঘা সাধারণত কয়েকদিনের মধ্যে নিরাময় হয়। তবে, যদি নিম্নোক্ত অবস্থা দেখা যায় তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন:
• ক্ষতের অনুরূপ চেহারা দেখা যাচ্ছে কিন্তু সেখানে কোনও
যন্ত্রণা নেই।
• নতুন এলাকায় আলসার ছড়িয়ে যাচ্ছে।
• ক্ষত 2-3 সপ্তাহের বেশি ধরে থাকছে।
• যে সমস্ত আলসার বা ঘা আকারে বড় হয়ে যাচ্ছে।
• ক্ষতের সঙ্গে জ্বর আসছে।
কী করতে হবে?
• দাঁত পরিষ্কার করার জন্য একটি নরম ও উন্নত মানের ব্রাশ ব্যবহার করুন। দিনে দু'বার ব্রাশ করুন।
• অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যেমন ভিটামিন এ, সি এবং ই সমৃদ্ধ খাবার, উদাহরণস্বরূপ অন্যান্য খাবারের সঙ্গে সাইট্রাস ফল, পেঁপে, আম, গাজর, লেবু, পেয়ারা, বেল পেপার (রঙিন ক্যাপসিকাম), কাঠবাদাম, আমলা খান।
• যেসব খাবার চিবোতে সুবিধা হয়, সেসব খাবার খান। নির্দিষ্ট সময় অন্তর দাঁতের পরীক্ষা করান।
• বেশি করে জল খান।
কী করা চলবে না?
• মশলাদার বা অম্লজাতীয় (অ্যাসিডিক) খাবার খাওয়া।
• সোডা খাওয়া।
• কড়া মাউথওয়াশ বা টুথপেস্ট ব্যবহার করা।
• মুখের আলসার টিপে পুঁজ বার করার চেষ্টা
• বারবার মুখের ক্ষতে হাত দেওয়া।
• মদ্যপান বা ধূমপান।
• খুব গরম পানীয় খাওয়া।
• বেশি মাত্রায় চকোলেট এবং বাদাম খাওয়া এবং দিনের মধ্যে বারবার কফি পান করা।