ফোবিয়া থেকে মুক্তি পাওয়ার বা কাটানোর বিশেষজ্ঞদের মতে কার্যকরী ৯ উপায় :
১।অনুভূতি গুছিয়ে রাখুন
মনে মনে ভাবুন আপনার কোনো বড় সমস্যা বা অসুবিধা নেই৷ যে কোনো পরিস্থিতির জন্য আপনি নিজেকে তৈরি রাখুন৷ তাহলে অকারণে যেটুকু ভয় আপনার হচ্ছে সেটা আস্তে আস্তে চলে যাবে৷ কারণ, মানসিক প্রস্তুতিই হচ্ছে জীবনের সবচেয়ে বড় প্রস্তুতি৷
২।সমীক্ষা যা বলছে
রবার্ট কখ ইন্সটিটিউটের করা এক সমীক্ষায় জানা গেছে শতকরা ৩ দশমিক ৯ ভাগ জার্মান জীবনের কোনো-না-কোনো সময় আতঙ্ক বা ভয়ের সম্মুখীন হয়েছেন৷ আরেক সমীক্ষা বলছে, শতকরা ২০ ভাগ মানুষের জীবনের কোনো এক সময় প্যানিক অ্যাটাক হয়৷ কখনো কোনো ভয় পেলে মনের মধ্যে সেটিকে নেগেটিভ সিরিয়াস মাইন্ডে নেয়া যাবে না। রাতে একা এই বিষয়ে নেগেটিভ বেশি চিন্তা করা ঠিক না।
৩।স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন
বিশেষজ্ঞরা জানান, সুস্থ জীবনযাত্রাই কিন্তু মানুষকে যে কোনো আতঙ্ক থেকে রক্ষা করতে পারে৷ ক্যাফেইন, নিকোটিন অ্যালকোহল এড়িয়ে চলুন৷ খাওয়া-দাওয়া এবং ঘুম সময়মতো করুন৷
৪।ভয় নিয়ে কথা বলুন
প্লেনে ভ্রমন করতে অনেকেই ভয় পায়৷ আবার অনেকে উঁচু বা নীচের দিকে তাকালে ভয় পায়৷ আবার কেউবা জনগণের সামনে বক্তৃতা দিতে গিয়ে ভীষণ নার্ভাস বোধ করেন৷ এমনকি অনেকে শপিং মল বা রাস্তায় বেশি মানুষ দেখলেও আতঙ্কিত হয়ে যান৷ যদিও বা জানেন, এতে ভয় বা আতংকের কোনো কারণই নেই, তার পরেও তাঁদের ভয় হয়৷ এসব ক্ষেত্রে ভয় নিয়ে অন্যদের সাথে কথা বলুন, দেখবেন ধীরে ধীরে ভয় কেটে যাবে৷
৫।নিজেকে ভালো করে চিনুন
ভয়ের কারণ নিয়ে নিজেই একটু ভাবুন৷ এর আগে কী এমন কিছু ঘটেছে যার কারণে আপনার এই আতংক? নাকি এমনিতেই ভয়?
৬।নেতৃত্বের প্রস্তুতি নিন
মনোচিকিৎসক আন্দ্রেয়াস স্ট্র্যোলে জানান, যেসব পরিস্থিতির কারণে মানুষ ভয় পায়, সেগুলো থেকে দূরে সরে না গিয়ে বরং এই পরিস্থিতিতে কথা বলার বা নেতৃত্ব দেয়ার জন্য নিজেকে প্রস্তুত করা উচিৎ৷ তাছাড়া আয়নার সামনে নিজে নিজে কথা বললেও ভয় কেটে যায়৷ তবে মানুষের সামনে নাচ, গান আবৃত্তির মতো অনুশীলনের মধ্য দিয়ে খুব সহজেই ভয়কে জয় করা সম্ভব৷
৭।খেলাধুলা
বয়ঃসন্ধিকালে অনেকেরই মস্তিষ্ক এলোমেলো থাকে, ওরা ঠিক কী করবে বা করা উচিৎ বুঝতে পারেনা৷ কথায় কথায় রাগ, দুঃখ, আতঙ্ক কাজ করে মনের ভেতরে৷ মনোচিকিৎসক ডা.আন্দ্রেয়াস স্ট্র্যোলে জানান, খেলাধুলা, ব্যয়াম বা বক্সিংয়ের মধ্যে দিয়ে নিজের রাগ, দুঃখ, ভয় বা অভিমানকে নাকি খুব সহজে বের করে ফেলা সম্ভব ৷ সোজা কথায় বলা যায়, আতঙ্ক দূর করতে শারীরিকভাবে সক্রিয় হওয়া প্রয়োজন।
৮।বাড়তি চাপ নয় কিন্তু !
স্কুলে ভালো ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে ক্লাসে সেরা হওয়ার প্রতিযোগিতাও অনেকসময় মস্তিষ্কে প্রচন্ড চাপও আতঙ্কের কারণ হয়ে দাড়ায়৷ এই পরিস্থিতিতে মেয়ে বা ছেলেটিকে মা-বাবা এবং শিক্ষককে বোঝানোর দায়িত্ব নিতে হবে যে , প্রথম বা দ্বিতীয় হওয়াটাই যেন জীবনের একমাত্র লক্ষ্য না হয়৷ আর এতে দেখা যাবে সন্তানটি কোনোরকম চাপ ছাড়াই ভালো রেজাল্ট করছে৷
৯।ভয়কেই জিইয়ে রাখা উচিৎ নয়
তবে কোনো ভয়কেই জিইয়ে রাখা উচিৎ নয়৷ ভয়ের কারণ নিয়ে প্রথমে পরিবার বা বন্ধুদের সাথে কথা বলুন৷ সফল না হলে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন৷ তা না হলে ছোট ছোট ভয়ই পরে প্যানিক অ্যাটাকের মতো বড় আকার ধারণ করতে পারে৷
জরুরী কথা: মূলত এটি একটা সাইকোলজিক্যাল নীরব ঘাতক। প্রয়োজনীয় পরিশ্রম এটি কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করতে পারে। যে বিষয়ে ভয় সেটা পাশ কাটিয়ে যাওয়া পরিহার করতে হবে নতুবা এটি মারাত্মক পেইন এটাক এ পরিণত হতে পারে
সূত্র : DW বাংলা।
Psychological health zone.
Kingdom of PHOBIA