কাটা হাত বা মৃত ব্যক্তির হাতের আঙুলের ছাপ ইলেক্ট্রনিক ডিভাইসে কাজ করবে না। তবে হ্যাঁ সদ্য মৃত বা মৃত্যুর কয়েক ঘন্টার মধ্যে হাতের ছাপ কাজ করতেও পারে। তবে বিজ্ঞানীরা এই সময়ের সীমার ব্যাপারে কোনো মতামত দেননি।
আমি যে বললাম যে কাজ করবে না এটি আপনি বিশ্বাস করবেন কেনো? তাহলে আপনি একটি পরীক্ষা করতে পারেন। কোনো ব্যক্তির মৃত্যুর ১০/১২ ঘণ্টার পর তার ফোনের লক ফিংগারপ্রিন্ট দিয়ে খোলার চেষ্টা করবেনে। আমার কথার প্রমাণ পেয়ে যাবেন।
আঙ্গুলের ছাপ সনাক্তকরণের উপর দীর্ঘদিন ধরে গবেষণারত, মিশিগান স্টেইট বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং এর অধ্যাপক (“হ্যান্ডবুক অফ ফিঙ্গারপ্রিন্ট রিকগনিশন” বইয়ের অন্যতম লেখক) অনিল জৈন বলেন, মৃত ব্যক্তির আঙ্গুলের ছাপের সাহায্যে ফোন খোলার সম্ভাবনা নির্ভর করে ঐ ব্যক্তি কতক্ষণ আগে মারা গেছেন তার উপর।
অনিল জৈন সংবাদ মাধ্যমে ব্যাখ্যা করেন, এর কারণ হল অধিকাংশ স্মার্টফোনের ক্ষেত্রে ফিঙ্গারপ্রিন্ট সনাক্তকরণটি বৈদ্যুতিক সঞ্চালনের মাধ্যমে কাজ করে।
আমাদের সবার শরীরে কিছু পরিমান বিদ্যুত প্রবাহিত হয়। যখন আমরা একটি আঙ্গুলের ছাপ সনাক্তকরন যন্ত্রের উপরে আঙ্গুল রাখি, তখন আমাদের আঙ্গুলের ছাপের ধারগুলি যন্ত্রের উপরিতল স্পর্শ করলেও, এর খাঁজগুলি স্পর্শ করে না। ইলেকট্রিক চার্জ সঞ্চয়কারী ক্ষুদ্র ক্যাপাসিটারগুলো আঙ্গুল থেকে আসা ইলেকট্রিক চার্জ অনেক বেশি পরিমানে সংগ্রহ করতে পারে যদি ক্যাপাসিটরগুলো আঙ্গুলের ছাপের খাঁজ গুলির উপর না বসে ধারের উপর বসে। সেন্সরগুলো আঙ্গুলের ধারের এই নকশাগুলো ব্যবহার করে একটি বিশদ চিত্র গঠন করে। কিন্তু যখন একজন ব্যক্তি মারা যায়, তখন তার শরীরে বিদ্যুতের প্রবাহ বন্ধ হয়ে যায় এবং স্ক্যানারের সঙ্গে যোগাযোগের আর কোন সম্ভাবনা থাকে না।
বিজ্ঞানীরা নিশ্চিত না যে একজন ব্যক্তির মৃত্যুর ঠিক কতক্ষণ পর এই বিদ্যুৎ পরিবাহিতা বন্ধ হয়ে যায়। অনিল জৈনের ভাষ্যমতে, এটা পরীক্ষা করে বের করার জন্যে আপনার “অনেক মৃতদেহের প্রয়োজন এবং আপনাকে প্রতি ঘন্টা অন্তর মৃত ব্যক্তির আঙ্গুলের ছাপ দিয়ে ফোন খোলার চেষ্টা করে যেতে হবে … আপনাকে একটানা মর্গে অপেক্ষা করতে হবে”। তিনি আরো বলেন, “এটা বেশ কঠিন একটি পরীক্ষা।”
তবে কাজ করবে কি করবে না সেটা নির্ভর করবে কি ধরনের পদ্ধতি ব্যাবহার করা হয়েছে।যদি সেটা ইলেকট্রন এর উপর নির্ভর করে হয় তাহলে মৃত্যুর অনেক পরে কাজ করবে না,যেমন মোবাইল ফোনের পিছনে দিকে যেসকল সেন্সর থাকে। কিন্তু যদি সেটা আলোক নির্ভর হয় তাহলে মৃত্যুর অনেক পরেও কাজ করবে যদি পচে না যায়,যেমন ফোনের ইন-ডিসপ্লে সেন্সর,সিম নিবন্ধনের অপটিক্যাল সেন্সর।