শিশুকে সুশিক্ষায় শিক্ষিত করার পেছনে পরিবারের মায়ের ভূমিকা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এই জন্যেই নেপোলিয়ন বলেছিলেন- আমাকে একটি শিক্ষিত মা দাও, আমি তোমাদের একটি শিক্ষিত জাতি দেব। একজন মা-ই নিশ্চিত করে তার সন্তান কিভাবে গড়ে ওঠবে। মা যদি তার সন্তানকে- রাষ্ট্রের নিয়ম শৃঙ্খলা রক্ষা, নাগরিকের অধিকার ও কর্তব্য, সৎ কাজে আদেশ, অসৎ কাজে নিষেধ, দেশপ্রেম, মানবসেবা ইত্যাদি কাজগুলো শিক্ষা দেয় সে সন্তান কখনো খারাপ বা পথভ্রষ্ট হতে পারে না।
সুনাগরিক গঠনে পরিবারই শিশুর প্রথম শিক্ষক। তাই সুনাগরিক গঠনে পরিবারের ভূমিকাই মূখ্য বলা যায়।
আমরা প্রায়ই পত্রপত্রিকা, টেলিভিশন, সোশ্যাল মিডিয়াতে শিশু- কিশোর অপরাধের খবর শুনতে পাই। এসব ঘটনা পর্যবেক্ষণ করলেই দেখা যায়, সে অপরাধীর পরিবারের অসচেতনতা, কার্যকর পদক্ষেপের অভাবে সে শিশু বা কিশোর অপরাধ জগতে প্রবেশ করেছে। আবার শিশুদেরকে অতিরিক্ত পড়াশোনার চাপ, কড়া শাসন, পারিবারিক কলহের কারণেও সন্তানের মানসিকতা বিকৃত হতে পারে।
তবে এ আলোচনার বহির্ভূত ব্যতিক্রমী কিছু দিক রয়েছে। বাংলাদেশ মধ্য আয়ের দেশ হলেও এখানে অনেক পরিবারে অশিক্ষা, পুষ্টিহীনতা, অস্বাস্থ্য, বস্ত্রহীনতা ও বাসস্থানের অভাব লক্ষণীয়। বর্তমানে বাংলাদের অনেক মানুষের যেখানে খাদ্য ও বাসস্থানের জোগাড় নেই সেখানে সুশিক্ষা ও সুনাগরিক পাওয়া দুষ্কর। মানুষের পাঁচটি মৌলিক অধিকারের ন্যূনতম পূরণ না হলে সেখানে পরিবর্তনের আলো জ্বালোনো কঠিন ব্যাপার হবে।
তবে বর্তমান সরকার মানুষের মৌলিক অধিকার পূরণে যেসব কর্মসূচি হাতে নিয়েছে সেসব বাস্তবায়ন হলে আশার বাতি দেশের প্রতি ঘরেই জ্বলবে। সরকারের শিক্ষা সহায়তা কর্মসূচি, আশ্রয়ণ, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি,খাদ্য সহায়তা কর্মসূচিসহ অন্যান্য উন্নয়নমূলক প্রকল্পগুলো মানুষের শতভাগ আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে। ফলে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী সবার সাথে একসাথে চলতে পারবে।
অতঃপর শিক্ষিত সমাজ, সচেতন মানুষ, পরিবার, সরকারের সহায়তায় প্রত্যেক পরিবারের শিশু গড়ে ওঠবে সুশিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে। আর সে শিক্ষিতরাই সুনাগরিক হয়ে দেশের কল্যাণে এগিয়ে আসবে-সে আশা আমার, আপনার ও সবারই।