বৈজ্ঞানিক গবেষণা অনুসারে, একজন মানুষ একটানা প্রায় ২৫-৪০ মিনিট ধরে একটি বিষয়ে মনোযোগী থাকতে পারে। এরপর তার মনোযোগে ভাটা পড়তে শুরু করে এবং সে অন্য কাজে মনযোগী হতে চায়। এই সময়টিকে বলা হয় "ফোকাস ডেডলাইন" (focus deadline)।
মনোযোগের এই সীমাবদ্ধতাটিকে ব্যাখ্যা করার জন্য বেশ কয়েকটি বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব রয়েছে। একটি তত্ত্ব অনুসারে, মানুষের মস্তিষ্ক একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য একটি নির্দিষ্ট কাজের উপর ফোকাস করতে পারে। এই সময়ের পর মস্তিষ্ক ক্লান্ত হয়ে পড়ে এবং অন্য কাজে মনোযোগী হতে চায়।
আরেকটি তত্ত্ব অনুসারে, মানুষের মনোযোগ একটি সীমিত সম্পদ। একই সময়ে একাধিক কাজের উপর মনোযোগ দেওয়ার চেষ্টা করলে মনোযোগের এই সম্পদটি কমে যায়। ফলে একটি নির্দিষ্ট কাজের উপর মনোযোগ ধরে রাখা কঠিন হয়ে পড়ে।
মনোযোগের এই সীমাবদ্ধতাটিকে কাটিয়ে উঠতে বেশ কিছু কৌশল রয়েছে। যেমন:
- কাজের মধ্যে নিয়মিত বিরতি নেওয়া। প্রতি ২০-৩০ মিনিটের পর ৫-১০ মিনিটের বিরতি নিলে মনোযোগের ঘাটতি কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করে।
- কাজটিকে ছোট ছোট অংশে ভাগ করে নেওয়া। এতে কাজটিকে সহজ মনে হয় এবং মনোযোগ ধরে রাখা সহজ হয়।
- কাজের জন্য একটি উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করা। যেখানে কাজের জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম এবং উপকরণ সহজেই পাওয়া যায় এবং কোনো অপ্রয়োজনীয় শব্দ বা দৃষ্টি আকর্ষণকারী জিনিস না থাকে।
মনোযোগের সীমাবদ্ধতাটি সম্পর্কে সচেতন থাকলে এবং এটিকে কাটিয়ে উঠার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করলে আমরা আমাদের কাজের দক্ষতা এবং ফলপ্রসূতা বাড়াতে পারি।
এছাড়াও, নিম্নলিখিত বিষয়গুলি একজন মানুষের মনোযোগের সময়কে প্রভাবিত করতে পারে:
- বয়স: বয়স বাড়ার সাথে সাথে মনোযোগের সময় হ্রাস পায়।
- স্বাস্থ্য: শারীরিক বা মানসিক অসুস্থতা মনোযোগের সময়কে প্রভাবিত করতে পারে।
- মনস্তাত্ত্বিক অবস্থা: উদ্বেগ, দুশ্চিন্তা বা ক্লান্তি মনোযোগের সময়কে হ্রাস করতে পারে।
- পরিবেশ: শব্দ, আলো বা তাপমাত্রার মতো পরিবেশগত কারণগুলি মনোযোগের সময়কে প্রভাবিত করতে পারে।
- কাজের ধরন: কিছু কাজ অন্য কাজের তুলনায় বেশি মনোযোগের প্রয়োজন হয়।
এই বিষয়গুলিকে বিবেচনায় নিলে আমরা আমাদের মনোযোগের সময়কে আরও কার্যকরভাবে ব্যবহার করতে পারি।
আশা করি উত্তরটি পেয়েছেন। ধন্যবাদ!