আপনি ঠিকমতো প্রশ্নই লিখতে পারেন নি। তবুও আপনি যা বুঝাতে চেয়েছেন তা হয়তো বুঝতে পেরেছি।
আপনার প্রশ্ন হয়তো এরূপঃ সূর্যের আলো যেহেতু উপর থেকে আসে, তাই পৃথিবীর ভূপৃষ্ঠের তুলনায় উপরে তো বেশী গরম থাকার কথা কিন্তু উপরে বায়ুমন্ডলের কিছু অঞ্চলে তাপমাত্রা কমে যায় কেন?
উপরের ছবিটি আমাদের বায়ুমন্ডলের বিভিন্ন স্তর
ভূপৃষ্ঠের কাছাকাছি বাতাসের চাপ বেশি থাকে। কারণ, এখানে চাপ প্রয়োগকারী বায়ুমন্ডলের স্তর বেশি। যত উচ্চতায় উঠবো, সেখান থেকে ওপরের বায়ুর স্তর কমতে থাকবে, তাই চাপও কমে যাবে। সহজ ভাষায় – উচ্চতার সাথে সাথে বায়ুমণ্ডলের চাপ কমে যায়।
খুব সহজে বোঝার জন্য বায়ুমণ্ডলের বাকি সব জটিল প্রক্রিয়া বাদ দিয়ে দেই। এখন ধরে নিন, একটা কাল্পনিক বাতাসের পার্সেল(বাতাসের কাল্পনিক বেলুনের মত) ভূপৃষ্ঠ থেকে উপরে উঠছে। তখন ওই নির্দিষ্ট পার্সেলটি বায়ুমণ্ডলের চাপ কমে যাবার জন্য সম্প্রসারিত হবে বা ছড়িয়ে যাবে। আর ওই এরোসল স্প্রে-এর কায়দায় এর তাপমাত্রা কমে যাবে। পার্সেলটি যত উপরে উঠবে তাপমাত্রা তত কমতে থাকবে। তাপগতিবিদ্যার ব্যাখ্যায় বলতে গেলে, পার্সেল যত সম্প্রসারিত হচ্ছে, এটা চারিদিকের বাতাসকে ঠেলছে, তারমানে তাপগতিবিদ্যার কাজ(work) করছে। লক্ষ্য করুন – এখানে কিন্তু বাইরে থেকে কোনো তাপ দেয়া হচ্ছে না। তাই, যেহেতু পার্সেল কাজ করছে, কিন্তু কোনো তাপ পাচ্ছে না , এটা আভ্যন্তরীণ শক্তি (internal energy) হারাচ্ছে। ফলে তাপমাত্রা কমে যাচ্ছে। সোজা ভাষায়, পার্সেল এর তাপমাত্রা কমছে শুধু চাপ কমার ফলে আয়তন বাড়ার জন্য। আবার মনে করিয়ে দিচ্ছি, উচ্চতা বাড়ছে, বায়ুমণ্ডলের চাপ কমছে, তাই আয়তন বাড়ছে; আর ফলশ্রুতিতে বায়ুমণ্ডলের তাপমাত্রা কমছে। আর তাপ আদান-প্রদান বিহীন এই তাপমাত্রা কমাটা হচ্ছে সম্পূর্ণ ভাবে ‘Adiabatic Process’-এ। তাপমাত্রা কমার এই হারকে বলে ‘Adiabatic Lapse Rate’.