অভিকর্ষ বলের প্রভাবে ভূ-পৃষ্ঠে মুক্তভাবে পড়ন্ত কোনো বস্তুর বেগ বৃদ্ধির হারকে অভিকর্ষজ ত্বরণ বলে।
এই জিনিসটি বুঝতে হলে প্রথমেই বুঝতে হবে- ত্বরণ কী? মনে করুন, একটি গাড়ি ঘণ্টায় ২০ কি.মি. যায়। তাহলে গাড়িটির গতি হবে ২০ কি.মি./ঘণ্টা^২। এখন যদি গাড়িটি গতি বাড়ায় এবং তাহলে এর বেগে পরিবর্তন আসবে অর্থাৎ বেগ বাড়বে। মনে করুন আরও ৫ কি.মি./ঘণ্টা^২ বেগ বেড়ে বেগ দাঁড়ালো ২৫কি.মি./ঘণ্টা। এই যে ৫ কি.মি./ঘণ্টা^২ বেগ বাড়লো এটাই হলো ত্বরণ।
আর অভিকর্ষ বলের প্রভাবে যে ত্বরণ হয় সেটাই অভিকর্ষজ ত্বরণ। পৃথবীতে অভিকর্ষজ ত্বরণ ৯.৮ মিটার/সেকেন্ড^২ মানে কোনো বস্তুকে উপর থেকে ছেড়ে দিলে তার গতি প্রতি সেকেন্ডে ৯.৮ মিটার/সেকেন্ড^২ করে বাড়বে। ধরুন উপর থেকে কোনো বস্তুকে ছেড়ে দেওয়া হলো। এক্ষেত্র প্রথমে তো এর বেগ থাকবে ০ মিটার/সেকেন্ড^২। ছেড়ে দেওয়ার সাথে সাথে বেগ ৯.৮ মিটার/সেকেন্ড হবে। এক সেকেন্ড পর (৯.৮+৯.৮)মিটার/সেকেন্ড^২ বা, ১৯.৬ মিটার/সেকেন্ড^২ হবে, দুই সেকেন্ড পর (১৯.৬+৯.৮)মিটার/সেকেন্ড^২ বা, ২৯.৪ মিটার/সেকেন্ড হবে।
এখন এই অভিকর্ষজ ত্বরণের মান নির্ভর করে কোনো গ্রহের মহাকর্ষ বলের উপর। যেমন, বৃহস্পতি গ্রহের মহাকর্ষ বেশি, আবার পৃথিবীর মহাকর্ষ বৃহস্পতির তুলনায় কম। আর এভাবেই পৃথিবীর মহাকর্ষের উপর নির্ভর করে এর অভিকর্ষজ ত্বরণ হয় ৯.৮মিটার/সেকেন্ড^২।
এর গাণিতিক হিসাব:
g = GM/d^2
এখানে, M হলো পৃথিবীর ভর, G হলো মহাকর্ষীয় ধ্রুবক এবং d হলো পৃথিবীর কেন্দ্র হতে বস্তুর দূরত্ব। এই মানগুলো বসিয়ে পুরো সমীকরণ সমাধান করলে পৃথিবীতে অভিকর্ষজ ত্বরণ আসে ৯.৮ এর কাছাকাছি একটি মান। মেরু অঞ্চল, ক্রান্তীয় অঞ্চল, বিষুবীয় অঞ্চলে আলাদা আলাদা অভিকর্ষজ ত্বরণ আসে। তাই হিসাবের সুবিধার জন্য একে ৯.৮ মিটার/সেকেন্ড^২