কোনো সিস্টেমে তাপের পরিমান একই রেখে, তাপমাত্রা বৃদ্ধি বা হ্রাস করলে সিস্টেম বা সিস্টেমের বাহিরে যে বিশৃঙ্খলা তৈরি হয় সেটাই এন্ট্রপি।
কোনো একটি সংস্থা বা চক্রের তাপমাত্রা সাপেক্ষে গৃহীত বা বর্জিত তাপের পরিবর্তনের হার দ্বারা এন্ট্রপি পরিমাপ করা হয়।
মনে করি একগ্লাস পানি যা স্বাভাবিক অবস্থায় স্থির। এখন যত তাপমাত্রা বৃদ্ধি করবো পানির অনুগুলো ততই কাপতে থাকবে অর্থাৎ স্থির থেকে অস্থির হবে।
তাই যত তাপমাত্রা বৃদ্ধি করবো এন্ট্রপি ততই বাড়তে থাকবে। এবার বিপরীতটা করি, একগ্লাস গরম পানিকে ঠান্ডা করি,যেহেতু গরম থেকে ঠান্ডা করতেছি তাই এক্ষেত্রে পানির অণুগুলো অস্থির থেকে স্থির হচ্ছে অর্থাৎ পানির এন্ট্রপি কমে যাচ্ছে। এক্ষেত্রে পানির এন্ট্রপি কমে যাচ্ছে ঠিকই কিন্তু পানি পরিবেশকে সেই তাপ প্রদান করে পরিবেশে থাকা বাতাসের অণুগুলোকে বিশৃঙ্খল করে। অর্থাৎ পরিবেশের এন্ট্রপি বেড়ে দিচ্ছে। সুতারাং এ থেকে বোঝা যায় এন্ট্রপি কখনো কমেনা, এন্ট্রপি সবসময় বাড়ে।
এন্ট্রপি বৃদ্ধির হার ,কঠিন পদার্থে সবচেয়ে কম বাড়ে,তরলে কঠিনের চেয়ে বেশি এবং গ্যাসে সবচেয়ে বেশি।
এখন প্রশ্ন আসতে পারে, এন্ট্রপি শুধু বাড়েই কেন?
ধরি একটুকরা কাঠ, স্বাভাবিক অবস্থায় কাঠের মধ্যে কাঠের অণু গুলো সাজানো গোছানো থাকে, কিন্তু সেই কাঠ যখন আমরা পোড়াই তখন কাঠের অণু বিশৃঙ্খল হয়, সাথে কাঠ দ্বারা উৎপন্ন তাপশক্তি পরিবেশের এন্ট্রপি বাড়িয়ে দেয়। কিন্তু যদি আমরা কাঠের টুকরাটি কাঠের টুকরার জায়গায় রেখে দিতাম তাহলে এন্ট্রপি কমতো না ঠিকই কিন্ত বাড়তোও না। আমরা এন্ট্রপি বাড়াই আমাদের জীবনের প্রয়োজনে, অথবা আনন্দ উপভোগ করতে। যেমন খাবার রান্না করতে তাপশক্তি লাগে আর তাপশক্তি মানে এন্ট্রপি বৃধি। আমরা জানি এন্ট্রপি বাড়বে কিন্তু তবুও আমাদের জীবন ধারনের প্রয়োজনে আমরা এন্ট্রপি বাড়াই। যদিও অনেক ক্ষেত্রে নিছক আনন্দ উপভোগের জন্য আমরা এন্ট্রপি বাড়াই, যেমন ধুমপান করা।।
এজন্য বলা যায় এন্ট্রপি বাড়া কোনো সমস্যা না।কারন মোট এন্ট্রপির পরিবর্তনের মান কোনোমতেই কমানো যাবে না।
কিন্তু যদি বলা হয় যে পৃথীবির এন্ট্রপি বাড়ছে তবে,
এই জগতের সব কিছুই সাম্য অবস্থা পেতে চায়। এতে করে সব বস্তুরই এনট্রপি দিনদিন বাড়ছে। সার্বিক অর্থে জগতের এনট্রপি দিনদিন বাড়ছে। এনট্রপি বাড়া মানে তাপমাত্রা বাড়ছে। তাই বলা যায় জগতের সব কিছুর তাপমাত্রা বাড়ছে। আমাদের পৃথিবীর প্রায় সব সিস্টেমই অপ্রতাবর্তী, তাই পৃথিবীর এনট্রপি বেড়েই চলেছে। এভাবে দেখা যায় আজ যেখানে ৩০ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রায় কাজ হয়, পরবর্তী শতকে কাজ করতে হলে হয়তো তাপমাত্রা ৩০ ডিগ্রী সেলসিয়াস কিছুটা বাড়াতে হবে।
তথ্যসুত্রেঃ ১ সেকেন্ড স্কুল