মানুষের শরীরে রোগ হয় কেন? - ScienceBee প্রশ্নোত্তর

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রশ্নোত্তর দুনিয়ায় আপনাকে স্বাগতম! প্রশ্ন-উত্তর দিয়ে জিতে নিন পুরস্কার, বিস্তারিত এখানে দেখুন।

+3 টি ভোট
765 বার দেখা হয়েছে
"স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা" বিভাগে করেছেন (150 পয়েন্ট)
সম্পাদিত করেছেন
#চিকিৎসা

4 উত্তর

0 টি ভোট
করেছেন (140 পয়েন্ট)
মানুষের জীবনের কোনো না কোনো সময় অসুস্থ হয়-এটা অত্যন্ত সহজসরল কথা। কিন্তু মানুষ কেন অসুস্থ হয়-এক কথায় এর উত্তর দেওয়া সোজা কথা নয়।

সৃষ্টির আদিকাল থেকে দার্শনিক ও চিকিৎসাবিজ্ঞানীরা এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজে বেড়াচ্ছেন এবং স্থান-কাল-পাত্রভেদে পণ্ডিতরা তাদের নিজেদের মতো করে এর উত্তর দিয়েছেন। প্রাচীনকালে মানুষ মনে করত-রোগ-শোক হলো সৃষ্টিকর্তার অভিশাপ।

 

কেউ কোনো পাপ করলে এর শাস্তিস্বরূপ সৃষ্টিকর্তা তাকে রোগ দিতেন এবং রোগ থেকে সেরে ওঠার মাধ্যমে কোনো মানুষ পাপ থেকে পরিত্রাণ পেত।

 

একবিংশ শতাব্দীতে এসেও আমরা অনেকেই এখনো একই বিশ্বাস পোষণ করি। অনুন্নত দেশগুলোতে গ্রামে-গঞ্জে মানুষ বহু রোগকে ‘জিন বা ভূতের আসর’ বলে আখ্যায়িত করে। কেউ মনে করে-রোগ হলো অশুভ দৃষ্টি বা আত্মার প্রভাব।

 

আবার বহু মানুষ মনে করে-বয়োজ্যেষ্ঠ আত্মীয়স্বজন বা মা-বাবার সঙ্গে খারাপ আচরণ, অশ্লীল বা মন্দকাজ, দুর্ভাগ্য, খারাপ অভ্যাস, অনিয়ম, আলস্য, অপুষ্টি প্রভৃতি হলো রোগের মূল কারণ। প্রথম শতাব্দীর গ্রিক চিকিৎসাবিদ সেলসুস মনে করতেন-অসুস্থতার কারণ উদ্ঘাটন গুরুত্বপূর্ণ নয়, গুরুত্বপূর্ণ হলো রোগের চিকিৎসা।

 

তার আধ্যাত্মিক শিষ্য থিওফ্রেটাস বোম্বাসটুস হোহেনহাইম, যিনি পরে প্যারাসেলসুস নামে আখ্যায়িত হয়েছিলেন এবং একজন সফল চিকিৎসাবিদ হিসাবে সুনাম অর্জন করেছিলেন; তিনি মনে করতেন, উল্লিখিত কারণগুলো ছাড়া আরও কতগুলো ভিন্ন কারণ রোগ সৃষ্টির পেছনে কাজ করে। সেই কারণগুলো সংক্ষিপ্ত, সঠিক এবং অধিকতর বাস্তবসম্মত বলে আধুনিক চিকিৎসাশাস্ত্র মনে করে।

 

প্যারাসেলসুস, যিনি পঞ্চদশ শতাব্দীর শেষ থেকে ষোড়শ শতাব্দীর প্রথম দিক পর্যন্ত বেঁচে ছিলেন, মনে করতেন রোগ উৎপত্তির পেছনে মূলত পাঁচটি কারণ কাজ করে। এগুলো হলো-বহিরাগত (পরিবেশ), বিষ বা বিষাক্ত দ্রব্য (দূষিত দ্রব্যাদি), মনস্তাত্ত্বিক (আবেগপ্রবণতা), বংশানুক্রমিক (জন্মগত) ও কর্মফলজনিত (আধ্যাত্মিক)। এখানে আলাদা আলাদাভাবে প্রতিটি কারণের বিশদ বিবরণ উপস্থাপন করা যেতে পারে।

 

এক. পরিবেশ থেকে উদ্ভূত কোনো ফ্যাক্টর যদি আমাদের শরীরে প্রবেশ করা বা সংস্পর্শে আসার পর কোনো রোগের সৃষ্টি হয়, তখন তাকে আমরা বহিরাগত কারণ হিসাবে আখ্যায়িত করি। এই কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে তীব্র দাবদাহ, প্রচণ্ড ঠান্ডা, আর্দ্রতা, ভারি বৃষ্টি এবং বর্তমান সময়ে আমরা যাকে বলি পরিবেশ দূষণ, অম্লবৃষ্টি (অ্যাসিড রেইন), বিদ্যুৎ-চুম্বক-গুণসম্পন্ন ক্ষেত্র (ইলেকট্রোম্যাগনেটিক ফিল্ড), বায়বীয় কীটনাশক, কৃষিতে ব্যবহৃত রাসায়নিক দ্রব্যাদি, তেজস্ক্রিয় দূষণ বা বিকিরণ প্রভৃতি। সর্দিগর্মি বা হিমায়িত হওয়ার দরুন দেহকলার জখম বা হিমদংশ অতি সহজে ডায়গনোজ ও চিকিৎসা করা সম্ভব হলেও আধুনিককালের পরিবেশ দূষণের কারণে সৃষ্ট রোগ চিহ্নিত করা এক দুঃসাধ্য ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে যারা সরাসরি বিষাক্ত রাসায়নিক দ্রব্যাদি নিয়ে কাজকর্ম করেন তাদের ক্ষেত্রে রোগ নির্ণয় তেমন জটিল হয় না। জীবাণু আরেক ধরনের বহিরাগত ফ্যাক্টর, যা মানুষকে অতি সহজেই সংক্রমিত করতে পারে।

 

জীবাণু শরীরে ঢুকলেই রোগ হবে-এটা সবসময় ঠিক নয়। জীবাণু শরীরে ঢুকলে শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা ও জীবাণুর আক্রমণ ক্ষমতার মধ্যে যুদ্ধ হয়। শরীর দুর্বল হলে অর্থাৎ শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল বা অকার্যকর হয়ে পড়লে এবং জীবাণুর আক্রমণ বেশি প্রবল হলে মানুষ রোগাক্রান্ত হয়। সুস্থসবল শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি থাকে, রোগের প্রকোপ বা ব্যাপকতা কমে যায়।

 

দুই. বিষ বা ক্ষতিকর দ্রব্যাদি গ্রহণ করার কারণে আমরা অসুস্থ হয়ে পড়ি। এসব ক্ষতিকর পদার্থের মধ্যে রয়েছে পচা-বাসি খাবার, দূষিত খাবার বা পানীয়, বিষাক্ত দ্রব্যাদি; খারাপ, পরিশোধিত বা জাঙ্কফুড; রাসায়নিক পদার্থ দ্বারা দূষিত খাবার, শাকসবজি, ফল, মাছ-মাংস; ফার্মাসিউটিক্যাল বা লাইফ-স্টাইল ড্রাগ, অ্যালকোহল, কফি, মাদক বা উত্তেজকজাতীয় খাবার। তামাক, বিড়ি বা সিগারেট বর্তমান বিশ্বে স্বাস্থ্যঝুঁকি বা স্বাস্থ্য বিপর্যয়ের অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

 

শিশুদের জন্য উৎপাদিত পরিশোধিত খাবারের ফর্মুলা আজকাল অস্বাস্থ্যকর খাবারের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে। এসব খাবার খেয়ে শিশুরা বেঁচে থাকে সত্যি, তবে তা শিশুদের শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা তেমন বাড়ায় না, যেমনটি বাড়ায় মায়ের বুকের দুধ।

 

শিশু জন্মের দুই থেকে তিন দিন পর্যন্ত মায়ের স্তনে প্রস্তুত হয় কোলস্ট্রাম নামের এক ধরনের পানীয়, যাকে আমরা শালদুধ হিসাবে চিনি। শালদুধ অপবিত্র নয়, ফেলে দেওয়ারও কোনো জিনিস নয়, শিশুর শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরির এক আবশ্যকীয় খাদ্য।

 

শালদুধ না খাওয়ালে শিশু আজীবন শারীরিক প্রতিরোধ ক্ষমতার অভাবে নানা রোগ-বিমারিতে আক্রান্ত হবে এবং এসব অনাকাঙ্ক্ষিত রোগ-বিমারির প্রতিকারে ওষুধের ওপর সম্পূর্ণ নির্ভরশীল হয়ে পড়বে। প্রেসক্রিপশন ড্রাগের (যেসব ওষুধ কিনতে প্রেসক্রিপশন লাগে) পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কারণে বিশ্বব্যাপী লাখ লাখ মানুষ মারা যাচ্ছে, লক্ষ-কোটি মানুষ অসুস্থ হওয়া ছাড়াও বিভিন্নভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বর্তমান বিশ্বে অসংখ্য জটিল রোগ সারাতে গিয়ে ক্ষতিকর ওষুধ গ্রহণ করে ব্যাপকহারে মানুষ রোগাক্রান্ত হয়ে পড়ছে। এ প্রসঙ্গে দুয়েকটি উদাহরণ দেওয়া যেতে পারে। রক্তে কোলেস্টেরল কমানোর স্ট্যাটিনজাতীয় ওষুধ খেলে মাংসপেশির সমস্যা দেখা দেয়। অনেক ব্যথা নিবারক ওষুধের কারণে কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দেয়, যার জন্য আবার ওষুধ খেতে হয়। সাধারণ ওষুধ প্যারাসিটামল ও অ্যাসপিরিনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও বিপজ্জনক হতে পারে। ওষুধ খেয়ে অসুস্থ হওয়ার ঘটনাকে আমরা খুব কমই ধতর্ব্যরে মধ্যে নিয়ে থাকি।

 

এ প্রসঙ্গে দুই ধরনের ওষুধের কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করতে হয়। একটি হলো অ্যান্টিবায়োটিক, অন্যটি ভ্যাকসিন বা টিকা। রোগ সারানোর পাশাপাশি এ দুই ধরনের ওষুধই মানবসভ্যতার জন্য বিপর্যয়ের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশ্বব্যাপী অ্যান্টিবায়োটিক ও ভ্যাকসিনের ব্যবহার ব্যাপকভাবে বেড়ে গেছে। অ্যান্টিবায়োটিকের অপব্যবহারের কারণে জীবাণুর প্রতিরোধ ক্ষমতা অর্জন ছাড়াও ওষুধটি আমাদের অন্ত্রের উপকারী ব্যাকটেরিয়াগুলোকে ধ্বংস করে শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতাকে নষ্ট করে দেয়।

 

ভ্যাকসিন সরাসরি রক্তপ্রবাহে প্রয়োগ করা হয়। ভ্যাকসিনে থাকে জীবন্ত বা মৃত ভাইরাস, মার্কারি সল্ট, অ্যালুমিনিয়াম সল্ট এবং ফরমালডিহাইডের মতো অপ্রীতিকর পদার্থ, যা প্রয়োগের মাধ্যমে শরীরের প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে উৎপন্ন বা উদ্দীপিত করা হয়ে থাকে। কিন্তু এ ভ্যাকসিনও কখনো কখনো বিপজ্জনক রোগের উৎপত্তির কারণ হতে পারে।

 

তিন. মনস্তাত্ত্বিক রোগের উৎপত্তির অন্যতম কারণ মানসিক চাপ। পর্যাপ্ত ঘুমের অভাবে মানসিক চাপ বা ভারসাম্যহীনতার সৃষ্টি হতে পারে। ঘুমের মাধ্যমে আমাদের শরীরের ক্ষয় ও অন্যান্য অসংগতি মেরামত হয়ে থাকে। সুতরাং পর্যাপ্ত ঘুম না হলে শরীরের মেরামতের কাজে বিঘ্ন ঘটবে এবং নানা রোগের সৃষ্টি হবে। এছাড়া আবেগপ্রবণ গোলযোগ, উত্তেজনা, অবদমিত অনুভূতি, রাগ-বিরাগ, অশান্তি, শোক, দুঃখ-কষ্ট, ভয়ভীতি মানুষকে দুর্বল করা ছাড়াও অসুস্থ করে তুলতে পারে। ডিপ্রেশন বা হতাশা বর্তমানে অন্যতম বিপর্যয় সৃষ্টিকারী রোগ হিসাবে আবির্ভূত হয়েছে। অ্যান্টিডিপ্রেসেন্ট গ্রহণ করে বিশ্বব্যাপী লাখ লাখ মানুষ স্বাভাবিক জীবনযাপনে উদ্বুদ্ধ হলেও এসব ওষুধের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে মুক্তি পাচ্ছে না। দীর্ঘ সময় ধরে এসব সমস্যা নিয়ে বেঁচে থাকলে মানুষ সমস্যাগুলোতে অভ্যস্ত হয়ে পড়ে। ক্রমান্বয়ে মানসিক সমস্যাগুলো অতিদ্রুত গুরুতর রূপ ধারণ করে এবং মারাত্মক শারীরিক ও মানসিক রোগে পরিণত হয়। দুঃসংবাদ হলো-এসব মনস্তাত্ত্বিক রোগের সঙ্গে শরীরের কিছু জটিল রোগ সরাসরি সম্পর্কযুক্ত হওয়ায় পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটে। যেমন-ক্ষোভ, রাগ, উত্তেজনা, মানসিক চাপ ইত্যাদির সঙ্গে উচ্চ রক্তচাপের সরাসরি সম্পর্ক থাকায় স্ট্রোক ও হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে বিশ্বব্যাপী প্রতিবছর লাখ লাখ মানুষ মৃত্যুবরণ করছে।

 

চার. আমরা আমাদের পিতা-মাতা বা পূর্বপুরুষদের কাছ থেকে অনেক রোগ উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়ে থাকি। বংশানুক্রমিক বিজ্ঞান বলে, পিতামাতা কোনো রোগে ভুগলে সন্তানও সে রোগের শিকার হবে। বংশগতভাবে বা উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত একটি রোগের উদাহরণ ডায়াবেটিস। এভাবে উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত রোগের সত্যতা বা যথার্থতা নিয়ে ইদানীং বিভ্রান্তি দেখা দিয়েছে এবং এ সম্পর্কে বিজ্ঞান এখন অনেক যুক্তিবাদী তথ্যপ্রমাণ উপস্থাপন করছে। পিতা-মাতার কোনো রোগ থেকে থাকলেও জ্ঞান-বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিগত উন্নয়নের ফলে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ ও অভ্যাস পরিবর্তনের ফলে আমরা আমাদের স্বাস্থ্য সমস্যা বহুলাংশে দূর করতে পারি। অভ্যাস পরিবর্তনের মাধ্যমে পিতা-মাতাও তাদের সন্তানদের স্বাস্থ্যের অনেক উন্নতি সাধন করতে পারেন। সুষম খাবার গ্রহণ, ক্ষতিকর ওষুধ বা মাদক বর্জন, নিয়মতান্ত্রিক জীবনযাপন করে বাবা-মা সন্তানের স্বাস্থ্যের ওপর বিরাট প্রভাব ফেলতে পারেন। মা নয় মাস সন্তান পেটে ধারণ করেন। গর্ভাবস্থায় মায়ের চালচলন ও খাদ্যাভ্যাস শিশুর স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব ফেলে।

 

আধুনিক বিজ্ঞানের মতে, মা সুষম খাবার খেলে এবং সুস্থ ও নিয়মতান্ত্রিক জীবনযাপন করলে অসুস্থ শিশু জন্ম নেওয়ার আশঙ্কা বহুলাংশে কমে যায়। পূর্বপুরুষদের মধ্যে কোনো রোগ দৃশ্যমান না হওয়া সত্ত্বেও তা উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত হওয়ার দাবি এখন আর পুরোপুরি যৌক্তিক নয়।

 

অধিকাংশ ক্ষেত্রে পিতা-মাতা নয়, আমাদের নিজস্ব ভুলভ্রান্তি বা অনিয়মতান্ত্রিক ও ভুল জীবনযাপনের কারণে আমরা রোগাক্রান্ত হয়ে পড়ি। এর সঙ্গে বংশানুক্রমিক ধারার কোনো সম্পর্ক নেই।

 

পাঁচ. অন্তর্জাগতিক বা আধ্যাত্মিক অধ্যায়ে সেইসব কারণ অন্তর্ভুক্ত করা হয়, যা উপরের কারণের কোনোটিতেই ফেলা যায় না। আমরা কোনো রোগের বৈজ্ঞানিক কারণ বা যুক্তি খুঁজে না পেলে এবং এসব রোগের প্রতিকারেও কোনো বৈজ্ঞানিক যৌক্তিক ভিত্তি খুঁজে না পেলে তখন তাকে ভাগ্যের লিখন, অতীতের কর্মফল, কুকর্মের খেসারত অথবা অলৌকিক বিস্ময় হিসাবে মেনে নিই। এসব অবর্ণনীয় রোগের চিকিৎসায় মানুষ আধ্যাত্মিক চিকিৎসার শরণাপন্ন হয়। ঝাড়-ফুঁক, পানি পড়া, তাবিজ ও প্রার্থনার মাধ্যমে মানুষ এসব রোগের চিকিৎসায় আত্মনিয়োগ করে থাকে। আধুনিক চিকিৎসাশাস্ত্র কোনো কোনো রোগের প্লাসিবো (যে ওষুধে সক্রিয় উপাদান নেই) প্রয়োগ ও তার কার্যকারিতাকে স্বীকার করে। বর্তমান যুগেও কোনো কোনো চিকিৎসক কোনো কোনো কল্পিত রোগে অনেক রোগীকে প্লাসিবো ওষুধ প্রদান করে থাকেন এবং এতে ভালো ফল পাওয়া যায়। আত্মা বা মনের সঙ্গে শরীরের সম্পর্ক নিবিড়। মনের রোগে যেমন শরীর আক্রান্ত হয়, তেমনই শরীরের রোগের কারণেও মনের অসুখ হতে পারে। এসব ক্ষেত্রে বিশ্বাস ও আধ্যাত্মিকতা এক গুরুত্বপুর্ণ ভূমিকা পালন করে। চিকিৎসক এলে বা চিকিৎসকের কাছে গেলে এবং উৎসাহব্যঞ্জক কথাবার্তা শুনলে রোগের প্রকোপ বহুলাংশে তিরোহিত হয়ে যায়। ধর্মীয় বিশ্বাস নিয়ে সৃষ্টিকর্তার কাছে রোগ মুক্তি চেয়ে প্রার্থনা করে অনেক জটিল রোগ থেকে সেরে ওঠার তথ্য আমরা চিকিৎসাবিজ্ঞানে পাই। সুতরাং রোগ সৃষ্টি ও চিকিৎসায় বিশ্বাস বা আধ্যাত্মিকতাকে খাটো করে দেখার অবকাশ নেই।

 

পরিশেষে নিয়তি বা অদৃষ্ট সম্পর্কে চীনে প্রচলিত একটি ধারণা নিয়ে দুয়েকটি কথা বলে আজকের লেখা শেষ করব। এ ধারণাটি অন্ধবিশ্বাসের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত নয়। বরং মানুষ হিসাবে একজন ব্যক্তির সুপ্ত শক্তির সঙ্গে এর সম্পর্ক। মানুষ হিসাবে আমাদের কাজ হলো নিয়তির পরিপূর্ণতা প্রদান করা, এমন একটি বোধশক্তির উদ্ভাবন করা, যার মাধ্যমে আমার নিজেদের চিনতে পারি। এ কাজটি করতে পারলে আমরা ভালো থাকব, আমাদের প্রেরণাশক্তি উৎসারিত হবে এবং আমরা এমন এক আধ্যাত্মিক শক্তির অধিকারী হব, যা আগে আমাদের কোনো সময় ছিল না।

 

অন্যদিকে আমাদের চলার পথে ভয়ভীতি, দুশ্চিন্তা বা আত্মবিশ্বাসের অভাবে যদি কোনো বাধা আসে, আমাদের প্রেরণাশক্তি ক্ষয়প্রাপ্ত হবে এবং এর ফলস্বরূপ আমরা অসুস্থ হয়ে পড়ব। সুতরাং রোগ-বিমারিকে জয় করার জন্য আমাদের মনোবল, আত্মবিশ্বাস ও প্রেরণাশক্তিতে বলীয়ান হতে হবে। তবেই সুস্থ থাকার যুদ্ধে আমরা জয়ী হতে পারব।

 

ড. মুনীরউদ্দিন আহমদ : প্রফেসর ও বিভাগীয় প্রধান, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, ঢাকা
করেছেন (135,480 পয়েন্ট)
ভাইয়া, কপি করলে সম্ভবত হবে না। আপনারটা যুগান্তরে আছে হুবহু ✌
করেছেন (140 পয়েন্ট)
Vaiya salami othoba kono puroskar er jonno dei ni.

Manush ekta jinish shotik ta jante paruk.

ei uddesshe diyechi

Tai source tao diye diyechi

Dhonnobad✌️
0 টি ভোট
করেছেন (135,480 পয়েন্ট)
মূলত যখন কোনো পদার্থ বা অণুজীব আপনার শরীরের শ্বেত রক্তকণিকাকে পরাস্ত করে ফেলবে তখন আপনি রোগাক্রান্ত হবেন। রোগাক্রান্ত হওয়ার কয়েকটি কারণ নিচে বলা হলো:

 

১. পরিবেশ থেকে শরীরে যদি ক্ষতিকারক অণুজীব প্রবেশ করে। যেমন: ভাইরাস, ব্যকটেরিয়া, ছত্রাক ইত্যাদি । এগুলোর ফলে যক্ষ্মা, আমাশয় সহ নানা রকমের রোগ হয়ে থাকে।

 

২. অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপন ও খাদ্যাভ্যাসের ফলে নানা অঙ্গপ্রতঙ্গে রোগ ব্যাধি হয়ে থাকে। যেমন : কিডনির রোগ, চোখের রোগ, হৃৎপিন্ডে রোগ।

 

৩. বিষাক্ত পদার্থ খাওয়ার ফলেও রোগ হয়ে থাকে। যেমন: খাদ্যে নানা রাসায়নিক পদার্থ, ফরমালিন ইত্যাদি। এগুলো মারাত্মক রোগের সৃষ্টি করতে সক্ষম।

 

৪. পচা-বাসি, মেয়াদ উত্তীর্ণ খাদ্য খাওয়ার ফলেও রোগ ব্যাধি হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা থাকে।

 

৫. ঔষধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কারণে নানা জটিল রোগের সৃষ্টি হয়ে থাকে। রক্তে কোলেস্টেরল কমানোর স্ট্যাটিনজাতীয় ওষুধ খেলে মাংসপেশির সমস্যা দেখা দেয়। অনেক ব্যথা নিবারক ওষুধের কারণে কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দেয়, যার জন্য আবার ওষুধ খেতে হয়। সাধারণ ওষুধ প্যারাসিটামল ও অ্যাসপিরিনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও বিপজ্জনক হতে পারে।

 

৬. পর্যাপ্ত ঘুমের অভাবে মানসিক চাপ বা ভারসাম্যহীনতার সৃষ্টি হতে পারে। ঘুমের মাধ্যমে আমাদের শরীরের ক্ষয় ও অন্যান্য অসংগতি মেরামত হয়ে থাকে। সুতরাং পর্যাপ্ত ঘুম না হলে শরীরের মেরামতের কাজে বিঘ্ন ঘটবে এবং নানা রোগের সৃষ্টি হবে। ডিপ্রেশন বা হতাশা সৃষ্টি হতে পারে যাকে একটি মারাত্মক রোগ বলা যায়।
0 টি ভোট
করেছেন (150 পয়েন্ট)
রোগ সাধারণত ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়ার দ্বারাই হয়ে থাকে। এছাড়া কোন কারনে দেহের কোন অংশ তার কার্যক্ষমতা হারালে বা দেহের কোন অংশে পুষ্টির অভাব দেখা দিলেও রোগ হয়ে থাকে। যেমন: অস্টিওপোরোসিস সাধারণত ক্যালসিয়ামের অভাবে হয়ে থাকে যা ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়া জনিত রোগ নয়
0 টি ভোট
করেছেন (140 পয়েন্ট)
যখন মানবদেহের অভ্যন্তরীণ সাধারণ কাজকর্ম ব্যাহত হয় তখন মানুষ অসুস্থ বোধ করে।।এমনটা তখন হয় যখন শরীরে ভাইরাস,ব্যাকটেরিয়া প্রবেশ করে।ভাইরাস,ব্যাকটেরিয়ার কাজই হলো যে শরীরে অবস্থান করে সেই শরীরের কোষ থেকে যাবতীয় পুষ্টি গ্রহণ করা এবং নিজের বংশবৃদ্ধি ঘটিয়ে চলা। আপনি অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বাস করেন তাহলে রোগ সহজেই আপনার শরীরে বাসা বাধবে।।অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে মানবদেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হয়ে যায়।ফলে ভাইরাস,ব্যাকটেরিয়া সহজে আক্রমণ করতে পারে।এছাড়া পর্যাপ্ত পুষ্টির অভাব,কায়িক শ্রম না করা,অতিরিক্ত লবণ বা চিনি গ্রহণ ইত্যাদি শরীরের immune system কে দুর্বল করে দিতে পারে।।ফলে রোগব্যাধি হতে পারে। কোনো অসুখ সামান্য ক্ষতি করে বা শরীরের immune system এর জন্য দ্রুত সেরে যায়।আবার কোনো কোনো অসুখ মারাত্মক ক্ষতি করে এমনকি মৃত্যুও ডেকে আনে।।এছাড়া কিছু কিছু রোগ আছে যেগুলো ভাইরাস,ব্যাকটেরিয়া বা ছত্রাক দ্বারা হয়না।যেমন টিউমার,ক্যান্সার,কিডনী বিকল হওয়া ইত্যাদি।টিউমার বা ক্যান্সার অস্বাভাবিক মাইটোসিস কোষ বিভাজনের ফলে হয়।।পরিমাণমতো পানি গ্রহণ না করলে কিডনী বিকল হতে  পারে।

আমাদের সকল প্রকার রোগবালাই থেকে বেঁচে থাকার জন্য স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে।বছরে অন্তত একবার ডাক্তারের কাছে ফুল বডি চেকাপ করা উচিত।



Source : https://www.google.com/url?sa=t&source=web&rct=j&url=https://indianexpress.com/article/parenting/learning/science-teacher-explains-why-do-we-fall-sick-facts-for-kids-5635698/lite/&ved=2ahUKEwjuwaXB8b73AhXpSmwGHfbABtsQFnoECAoQBQ&usg=AOvVaw3Ki4nKqfP8Q9cdKEsKwfIE

সম্পর্কিত প্রশ্নগুচ্ছ

0 টি ভোট
1 উত্তর 558 বার দেখা হয়েছে
+1 টি ভোট
1 উত্তর 466 বার দেখা হয়েছে
0 টি ভোট
3 টি উত্তর 772 বার দেখা হয়েছে
30 অক্টোবর 2021 "চিন্তা ও দক্ষতা" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন Anupom (15,280 পয়েন্ট)
+16 টি ভোট
1 উত্তর 346 বার দেখা হয়েছে
25 ফেব্রুয়ারি 2020 "স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন Admin (71,130 পয়েন্ট)

10,775 টি প্রশ্ন

18,459 টি উত্তর

4,742 টি মন্তব্য

266,165 জন সদস্য

63 জন অনলাইনে রয়েছে
0 জন সদস্য এবং 63 জন গেস্ট অনলাইনে
  1. Nafis Hasan

    220 পয়েন্ট

  2. Farhan Anjum

    140 পয়েন্ট

  3. sobujalam

    110 পয়েন্ট

  4. Saif Sakib

    110 পয়েন্ট

  5. Tasfima Jannat

    110 পয়েন্ট

বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় উন্মুক্ত বিজ্ঞান প্রশ্নোত্তর সাইট সায়েন্স বী QnA তে আপনাকে স্বাগতম। এখানে যে কেউ প্রশ্ন, উত্তর দিতে পারে। উত্তর গ্রহণের ক্ষেত্রে অবশ্যই একাধিক সোর্স যাচাই করে নিবেন। অনেকগুলো, প্রায় ২০০+ এর উপর অনুত্তরিত প্রশ্ন থাকায় নতুন প্রশ্ন না করার এবং অনুত্তরিত প্রশ্ন গুলোর উত্তর দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। প্রতিটি উত্তরের জন্য ৪০ পয়েন্ট, যে সবচেয়ে বেশি উত্তর দিবে সে ২০০ পয়েন্ট বোনাস পাবে।


Science-bee-qna

সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয় ট্যাগসমূহ

মানুষ পানি ঘুম পদার্থ - জীববিজ্ঞান চোখ এইচএসসি-উদ্ভিদবিজ্ঞান এইচএসসি-প্রাণীবিজ্ঞান পৃথিবী রোগ রাসায়নিক শরীর #ask রক্ত আলো মোবাইল ক্ষতি চুল কী #science চিকিৎসা পদার্থবিজ্ঞান সূর্য প্রযুক্তি স্বাস্থ্য মাথা প্রাণী গণিত বৈজ্ঞানিক মহাকাশ পার্থক্য #biology এইচএসসি-আইসিটি বিজ্ঞান খাওয়া গরম শীতকাল #জানতে কেন ডিম চাঁদ বৃষ্টি কারণ কাজ বিদ্যুৎ রাত রং উপকারিতা শক্তি লাল আগুন সাপ মনোবিজ্ঞান গাছ খাবার সাদা আবিষ্কার দুধ উপায় হাত মশা শব্দ মাছ ঠাণ্ডা মস্তিষ্ক ব্যাথা ভয় বাতাস স্বপ্ন তাপমাত্রা গ্রহ রসায়ন উদ্ভিদ কালো পা কি বিস্তারিত রঙ মন পাখি গ্যাস সমস্যা মেয়ে বৈশিষ্ট্য হলুদ বাচ্চা সময় ব্যথা মৃত্যু চার্জ অক্সিজেন ভাইরাস আকাশ গতি দাঁত কান্না আম হরমোন বাংলাদেশ
...