আসক্তি মাত্রই ক্ষতিকর আর স্মার্টফোনে আসক্তি যে মারাত্মক ক্ষতির কারণ হতে পারে, তা গবেষক ও চিকিত্সকেরা দীর্ঘদিন ধরে বলে আসছেন। অতিরিক্ত স্মার্টফোনের ব্যবহার এবং স্মার্টফোন থেকে নির্গত আলো দীর্ঘমেয়াদি চোখের সমস্যা তৈরি।
যুক্তরাজ্যের চক্ষুরোগ-চিকিত্সকেরা জানিয়েছেন, মানুষ স্মার্টফোনে এতটাই আসক্ত হয়ে যাচ্ছে যে তাঁরা চোখের সর্বনাশের ঝুঁকি তৈরি করে ফেলছে। বিবিসি অনলাইনের এক খবরে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
অতিরিক্ত সময় ধরে মোবাইল ফোন, কম্পিউটার, ট্যাবলেট ও ফ্ল্যাট স্ক্রিন টিভি দেখার বিষয়ে সতর্ক থাকতে বলেছেন চক্ষুরোগ-বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের দাবি, যে যন্ত্রগুলো থেকে আলো নির্গত হয় তা চোখের দীর্ঘমেয়াদি সমস্যা তৈরি হতে পারে এবং মাথাব্যথা হতে পারে।
দুই হাজার লোকের মধ্যে চালানো এক জরিপের কথা বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। ওই জরিপে ২৫ বছরের কম বয়সীরা দিনে ৩২ বারেরও বেশি মোবাইল ফোনে চোখ রাখেন-এমন তথ্য জানা গেছে।
চক্ষুরোগ-চিকিত্সক অ্যান্ডি হেপওর্থ দাবি করেছেন, মোবাইল চোখের দিকে তাকালে চোখের পলক কম পড়ে এবং স্বাভাবিকের তুলনায় স্মার্টফোন চোখের বেশি কাছাকাছি এনে কোনো বিষয় দেখা হয়। মোবাইল ফোনের আলো চোখের জন্য ক্ষতিকর ও বিষাক্ত হতে পারে। তাই একটানা দীর্ঘক্ষণ স্মার্টফোন স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকা উচিত নয়।
এদিকে, অতিরিক্ত সময় ধরে মুঠোফোন ব্যবহারের ক্ষতিকর দিক নিয়ে টাইমস অব ইন্ডিয়াও এক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এ প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, অতিরিক্ত সময় ধরে মোবাইল ফোনের ব্যবহার শুক্রাণু কমিয়ে দিতে পারে। অধিকাংশ পুরুষই তাঁর মুঠোফোন প্যান্টের পকেটে রাখেন। এ সময় রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি ইলেকট্রো ম্যাগনেটিক রেডিয়েশন পুরুষের প্রজননতন্ত্রের ক্ষতি করতে পারে। এ ধরনের ক্ষতিকর তরঙ্গ শুক্রাণুর ওপর প্রভাব ফেলে এবং শুক্রাণুর ঘনত্ব কমিয়ে দিতে পারে। মুঠোফোন তরঙ্গে শুক্রাণুর ক্ষতি বিষয়ক সাম্প্রতিক এক গবেষণায় যুক্তরারে গবেষকেরা এ তথ্য পেয়েছেন। ভারতের জয়েন্ট প্রতিস্থাপন চিকিত্সক নীরদ ভেং সরকার জানিয়েছেন, অতিরিক্ত সময় ধরে মেসেজ বা বার্তা টাইপ করা হলে আঙুলের জয়েন্টগুলোতে ব্যথা হতে পারে এবং অবস্থা বেশি খারাপ হলে আর্থরাইটিসের মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। অনেকের ঘাড় ব্যথার সমস্যাও দেখা দিতে পারে। অনেকেই অতিরিক্ত ঝুঁকে বসে দীর্ঘ সময় ধরে বার্তা পাঠাতে থাকেন। বসার ভঙ্গির কারণেও শরীরে নানা অসুবিধা দেখা দিতে পারে। চিকিত্সকের পরামর্শ হচ্ছে অতিরিক্ত সময় ধরে মুঠোফোনে বার্তা লিখবেন না, বা অতিরিক্ত সময় স্মার্টফোনের স্ক্রিনে তাকাবেন না।
তথ্য সূত্রঃ রয়র্টাস্