X-Ray কিভাবে তৈরি করা হয? - ScienceBee প্রশ্নোত্তর

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রশ্নোত্তর দুনিয়ায় আপনাকে স্বাগতম! প্রশ্ন-উত্তর দিয়ে জিতে নিন পুরস্কার, বিস্তারিত এখানে দেখুন।

0 টি ভোট
802 বার দেখা হয়েছে
"পদার্থবিজ্ঞান" বিভাগে করেছেন (43,930 পয়েন্ট)

2 উত্তর

0 টি ভোট
করেছেন (43,930 পয়েন্ট)
 
সর্বোত্তম উত্তর
রঞ্জনরশ্মি বা এক্স-রশ্মি (X-ray) বলতে আলোর চেয়ে অনেক ক্ষুদ্র তরঙ্গদৈর্ঘ্যের, মূলত ০.১ থেকে ১০ ন্যানোমিটার তরঙ্গদৈর্ঘ্য পরিসরে এবং ৩x১০১৬ থেকে ৩x১০২০ হার্জের কম্পাংক পরিসরে অবস্থিত ও উচ্চ ভেদনক্ষমতাবিশিষ্ট তড়িৎচুম্বকীয় বিকিরণকে বোঝায়।


হান্ড মিট রিঙেন (Hand mit Ringen "আংটিসহ হাত"): ভিলহেল্ম র‍্যোন্টগেনের তোলা প্রথম মানবদেহের রঞ্জনরশ্মি চিত্র। র‍্যোন্টগেন ১৮৯৫ এর ২২শে ডিসেম্বর তার স্ত্রী আনা বের্টা র‍্যোন্টগেনের হাতের চিত্র ধারণ করেন।[১][২]

এক্স-রে ছবি(রেডিওগ্রাফ), taken by উইলিয়াম রন্টজেন, of Albert von Kölliker's hand.
১৮৯৫ সালে জার্মান পদার্থবিজ্ঞানী ভিলহেল্ম কনরাড র‍্যোন্টগেন একটি নলে নিম্নচাপে অবস্থিত গ্যাসের মধ্যে উচ্চবিভবে তড়িৎক্ষরণের সময় ক্যাথোড রশ্মির (ইলেকট্রন রশ্মির) ক্রিয়া সম্পর্কে তদন্ত চালানোর সময় আকস্মিকভাবে এই রশ্মিগুলি আবিষ্কার করেন এবং অজানা প্রকৃতির কারণে এগুলির নাম দেন এক্স-রশ্মি; পরবর্তীতে তাঁর সম্মানার্থে এগুলির নাম রঞ্জনরশ্মি রাখা হয়। তিনি মানুষের হাতের হাড়গুলির একটি নাটকীয় আলোকচিত্র সৃষ্টির মাধ্যমে এই রশ্মিগুলির অস্তিত্ব প্রদর্শন করেন। তাঁর এই আবিষ্কার বিশ্বব্যাপী বৈজ্ঞানিক মহলে ও সাধারণ জনগণের মধ্যে সাড়া ফেলে। এর এক বছর পরে ১৮৯৬ সালে তেজস্ক্রিয়তা ও ১৮৯৭ সালে ইলেকট্রনের আবিষ্কারের মাধ্যমে পরমাণুর অভ্যন্তরের জগতের গবেষণা সূচিত হয় এবং আধুনিক পদার্থবিজ্ঞানের জন্ম হয়।

সাধারণত উচ্চ-গতিতে ত্বরিত আধানযুক্ত কণার মন্দনের দ্বারা রঞ্জনরশ্মি উৎপাদন করা হয়। যেমন একটি রঞ্জনরশ্মি নলে ইলেকট্রন কণার রশ্মিগুচ্ছ কোনও ধাতুর (সাধারণত টাংস্টেনের) পাতকে আঘাত করলে কিংবা কোনও কণা ত্বরক যন্ত্রে আবর্তনশীল ইলেকট্রন রশ্মিগুচ্ছের ত্বরণের ফলে রঞ্জনরশ্মি উৎপাদিত হতে পারে। এছাড়া উচ্চমাত্রায় উত্তেজিত পরমাণুর ভেতরে ইলেকট্রনের এক শক্তিস্তর থেকে আরেক শক্তিস্তরে স্থানান্তরের ফলে বিচ্ছিন্ন তরঙ্গদৈর্ঘ্যবিশিষ্ট (যেগুলি পরমাণুর শক্তিস্তরের পার্থক্যের সাথে সংশ্লিষ্ট) রঞ্জনরশ্মি নিঃসৃত হতে পারে। মহাকাশের কিছু বস্তু যেমন কৃষ্ণগহ্বর ও নক্ষত্র (যেমন সূর্য) শক্তিশালী রঞ্জনরশ্মি উৎপাদন করে; এগুলিকে রঞ্জনরশ্মি জ্যোতির্বিজ্ঞান নামক শাস্ত্রে অধ্যয়ন করা হয়। রঞ্জনরশ্মিগুলি আলোর গতিবেগে চলাচল করে।

রঞ্জনরশ্মির তরঙ্গদৈর্ঘ্য দৃশ্যমান আলোকরশ্মির চেয়ে অনেক কম বলে এগুলি অদৃশ্য। তড়িৎ-চুম্বকীয় বর্ণালীর রঞ্জনরশ্মি অঞ্চলটি দৃশ্যমান তরঙ্গদৈর্ঘ্যের অঞ্চলটি থেকে বহুদূরে অবস্থিত। রঞ্জনরশ্মির চেয়ে হ্রস্ব তরঙ্গদৈর্ঘ্যের (১০-১১ মিটার অপেক্ষা হ্রস্ব তরঙ্গদৈর্ঘ্য) রশ্মিগুলিকে গামা রশ্মি বলা হয়। গামা রশ্মিগুলি পরমাণুকেন্দ্রের (নিউক্লিয়াসের) ভেতর থেকে উৎপাদিত হয়, অন্যদিকে রঞ্জনরশ্মিগুলি পরমাণুকেন্দ্রের বাইরে অবস্থতি প্রক্রিয়াসমূহের কারণে উৎপাদিত হয়। এর বিপরীতে অতিবেগুনি রশ্মির তরঙ্গদৈর্ঘ্য রঞ্জনরশ্মিগুলির চেয়ে দীর্ঘ হয়। অর্থাৎ তড়িৎ-চুম্বকীয় বর্ণালীতে রঞ্জনরশ্মিগুলি অতিবেগুনি রশ্মি ও গামা রশ্মির মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থিত।

কোনও তড়িৎ-চুম্বকীয় বিকিরণের তরঙ্গদৈর্ঘ্য যত ছোট হয়, সেটির পদার্থ ভেদ করার ক্ষমতা তত বেশি হয়। তাই রঞ্জনরশ্মিগুলি পদার্থকে ভেদ করে অতিক্রম করতে পারে। এভাবে ভেদ করা রঞ্জনরশ্মিগুলিকে আলোকচিত্রগ্রাহী পর্দা ও অন্যান্য ধরনের শনাক্তকারকের সাহায্যে লিপিবদ্ধ করা যায়। মানবদেহের মধ্য দিয়ে রঞ্জনরশ্মি অতিক্রম করিয়ে সেগুলির আলোকচিত্র গ্রহণ করে সেটিকে দেহের বিভিন্ন রোগনির্ণয়ে ব্যবহার করা হয়; তাই রঞ্জনরশ্মি আধুনিক চিকিৎসাশাস্ত্রের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উপকরণ। হাড়ের ভাঙন, দাঁতের গর্ত, কর্কটরোগ (ক্যানসার), দেহাভ্যন্তরে বহিরাগত বস্তু, ইত্যাদি শনাক্ত করতে এগুলি বহুল ব্যবহৃত হয়। তবে মাত্রাতিরিক্ত রঞ্জনরশ্মি মানবদেহে আপতিত হলে তা স্বাস্থ্যের জন্য বিপজ্জনক হতে পারে। জীবন্ত দেহকলার ভেতর দিয়ে অতিক্রম করার সময় রঞ্জনরশ্মিগুলি বংশাণু (জিন), বংশসূত্র (ক্রোমোজোম) ও দেহকোষের অন্যান্য উপাদানের প্রাণ-রাসায়নিক ক্ষতিসাধন করতে পারে। রঞ্জনরশ্মির প্রকৃতি ও স্থায়িত্বকালের উপর নির্ভর করে বিকিরণের জৈব প্রভাব জটিল হতে পারে, এবং বিকিরণজনিত জখমের উপরে গবেষণা চলমান আছে। আবার রঞ্জনরশ্মি বিকিরণকে কাজে লাগিয়ে দুষ্ট অর্বুদ বা টিউমারের বৃদ্ধি রুখতে রঞ্জনরশ্মি বিকিরণ চিকিৎসা প্রদান করা হয়। এছাড়া ধাতব বস্তু শনাক্ত করতেও রঞ্জনরশ্মি ব্যবহৃত হয়ে থাকে। শিল্পখাতে কাঠামো বিশ্লেষণে ও এগুলির মধ্যে ত্রুটি শনাক্ত করতে রঞ্জনরশ্মির প্রয়োগ আছে।


রঞ্জনরশ্মি নলের প্রধান অংশের চিত্র
পরিবাহী সূত্র বা ফিলামেন্ট F-এর ভিতর দিয়ে প্রবাহিত তড়িৎপ্রবাহ ঋণাত্মক তড়িৎদ্বার বা ক্যাথোড C-কে উত্তপ্ত করলে ইলেকট্রন তাপীয় নিঃসরণ প্রক্রিয়ায় একটি রঞ্জনরশ্মি নলের প্রয়োজনীয় অংশ ক্যাথোড থেকে মুক্ত হয়ে আসে। তারপর একটি অতি উচ্চ বিভব প্রভেদ V-এর দ্বারা ইলেকট্রনগুলি ত্বরিত হয় ও ধনাত্মক তড়িৎদ্বার তথা আ্যনোডরূপী লক্ষ্যবস্তু T-তে আঘাত করে। ফলে রঞ্জনরশ্মি উৎপন্ন হয়।
0 টি ভোট
করেছেন (8,580 পয়েন্ট)
Crooks Tube নামক এক ধরনের টিউবের ভিতর একটি ধনাত্মক তড়িৎদ্বার এবং একটি ঋণাত্নক তড়িৎদ্বার থাকে এবং ভিতরে হালকা গ্যাস থাকে। এই ঋণাত্মক তড়িৎদ্বার থেকে উচ্চ ভোল্টেজে ইলেকট্রনকে ধনাত্মক তড়িৎদ্বারের দিকে ছোঁড়া হয়। ফলে ওই ইলেকট্রন ধনাত্মক তড়িৎদ্বারে গিয়ে আঘাত করে এবং উচ্চ কম্পাংকের আল বা ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক রশ্মি X-ray নির্গত করে। এভবেই X-ray উৎপন্ন হয়।

সম্পর্কিত প্রশ্নগুচ্ছ

+1 টি ভোট
1 উত্তর 520 বার দেখা হয়েছে
20 ফেব্রুয়ারি 2022 "প্রযুক্তি" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন R Atiqur (43,930 পয়েন্ট)
+2 টি ভোট
5 টি উত্তর 742 বার দেখা হয়েছে
+10 টি ভোট
1 উত্তর 388 বার দেখা হয়েছে
06 নভেম্বর 2020 "বিবিধ" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন বিজ্ঞানের পোকা ৫ (123,400 পয়েন্ট)
0 টি ভোট
1 উত্তর 844 বার দেখা হয়েছে
25 জুন 2023 "পদার্থবিজ্ঞান" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন Rafikul Al Imran (5,380 পয়েন্ট)
0 টি ভোট
1 উত্তর 133 বার দেখা হয়েছে

10,772 টি প্রশ্ন

18,455 টি উত্তর

4,742 টি মন্তব্য

262,962 জন সদস্য

51 জন অনলাইনে রয়েছে
2 জন সদস্য এবং 49 জন গেস্ট অনলাইনে
  1. Tasfima Jannat

    110 পয়েন্ট

  2. IsidroHeiman

    100 পয়েন্ট

  3. MelodeeHethe

    100 পয়েন্ট

  4. Lonnie82D843

    100 পয়েন্ট

  5. Dusty27J8179

    100 পয়েন্ট

বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় উন্মুক্ত বিজ্ঞান প্রশ্নোত্তর সাইট সায়েন্স বী QnA তে আপনাকে স্বাগতম। এখানে যে কেউ প্রশ্ন, উত্তর দিতে পারে। উত্তর গ্রহণের ক্ষেত্রে অবশ্যই একাধিক সোর্স যাচাই করে নিবেন। অনেকগুলো, প্রায় ২০০+ এর উপর অনুত্তরিত প্রশ্ন থাকায় নতুন প্রশ্ন না করার এবং অনুত্তরিত প্রশ্ন গুলোর উত্তর দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। প্রতিটি উত্তরের জন্য ৪০ পয়েন্ট, যে সবচেয়ে বেশি উত্তর দিবে সে ২০০ পয়েন্ট বোনাস পাবে।


Science-bee-qna

সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয় ট্যাগসমূহ

মানুষ পানি ঘুম পদার্থ - জীববিজ্ঞান চোখ এইচএসসি-উদ্ভিদবিজ্ঞান এইচএসসি-প্রাণীবিজ্ঞান পৃথিবী রোগ রাসায়নিক শরীর রক্ত #ask আলো মোবাইল ক্ষতি চুল কী চিকিৎসা #science পদার্থবিজ্ঞান সূর্য প্রযুক্তি স্বাস্থ্য মাথা প্রাণী গণিত বৈজ্ঞানিক মহাকাশ পার্থক্য #biology এইচএসসি-আইসিটি বিজ্ঞান খাওয়া গরম শীতকাল #জানতে কেন ডিম চাঁদ বৃষ্টি কারণ কাজ বিদ্যুৎ রাত রং উপকারিতা শক্তি লাল আগুন সাপ মনোবিজ্ঞান গাছ খাবার সাদা আবিষ্কার দুধ উপায় হাত মশা শব্দ মাছ ঠাণ্ডা মস্তিষ্ক ব্যাথা ভয় বাতাস স্বপ্ন তাপমাত্রা গ্রহ রসায়ন উদ্ভিদ কালো পা কি বিস্তারিত রঙ মন পাখি গ্যাস সমস্যা মেয়ে বৈশিষ্ট্য হলুদ বাচ্চা সময় ব্যথা মৃত্যু চার্জ অক্সিজেন ভাইরাস আকাশ গতি দাঁত কান্না আম হরমোন বাংলাদেশ
...