কণা আর বস্তুর মধ্যে মূল পার্থক্যকারী বস্তু হল আমাদের চোখ৷ বস্তুকে আমরা চোখে দেখতে পাই আর অপরদিকে কণাকে আমাদের দেখতে অসুবিধে হয়৷
(ছবিসূত্রঃ : Eye)
আমরা প্রতিদিনই কণা ও বস্তু এই দুইটি শব্দই নিজের অজান্তে অনেকবার ব্যাবহার করে থাকি। যেমন: লবণের কণা, বালু কণা, ধুলি কণা ইত্যাদি। আর অন্যন্য বড় বড় সবকিছুই যা আমরা সহজে দেখতে পারি সেগুলো হল বস্তু। যেমন : চেয়ার, টেবিল, বই ইত্যাদি। এগুলো আমরা সচরাচর যা দেখি তার উদাহরণ।
কিন্তু পদার্থ বিজ্ঞানে কণা হল পরমাণু, ইলেকট্রন, প্রোটন, নিউট্রন, কোয়ার্ক ইত্যাদি ছোটো ছোটো জিনিস( কণা)। ছোটো বললেও ভুল হয়, এগুলো অতিমাত্রায় ছোটো। এখনো পরমাণুকে দেখার জন্য বিজ্ঞানীরা নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন।
(ছবিসূত্রঃ: Microscopic sand particles | Things under a microscope, Grain of sand)
সহজ ভাবে বললে সকল বস্তুই কণা দ্বারা গঠিত হয়। এক কেজি ভরের একটি লোহা হল বস্তু আর লোহার ভেতর থাকা লোহার ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র(আণুবীক্ষণিক) টুকরোই হল কণা।
স্বাভাবিকভাবেই বস্তুর ভর কণার তুলনায় অনেক বেশি। একটি লোহার টুকরোর ভর ১ কেজি অন্যদিকে লোহার একটি পরমাণুর ভর ৯.২৭৩২৭৯৬×১০−২৬৯.২৭৩২৭৯৬×১০−২৬কেজি।
লোহার পরমাণুটির ভর লোহার টুকরোটির তুলনায়
১.০৭৮৩৭×১০^২৫ গুণ কম
কণা দেখার জন্য আমাদের শক্তিশালী মাইক্রোস্কোপের প্রয়োজন হয়।
(ছবিসূত্র : Titan microscope will take Penn State to a new nanoscale | Penn State)
লোহার উদাহরণে তো আমরা শুধু পরমাণুকেই কণার উদাহরণ হিসেবে দেখালাম। কিন্তু পরমাণুর ভেতর ও রয়েছে আরো অতি সূক্ষ কণা। আমরা জানি, পরমাণুতে কক্ষপথে বিচরণ করছে ইলেকট্রন, পরমাণুর কেন্দ্রে রয়েছে প্রোটন ও নিউট্রন। ইলেকট্রনকে মৌলিক কণা হিসেবে মনে করা হয়। কিন্তু, প্রোটন ও নিউট্রন যৌগিক কণা। কারণ, প্রোটন ও নিউট্রন একাধিক কোয়ার্ক দ্বারা গঠিত। কোয়ার্ক ও একপ্রকার কণা। কোয়ার্কের বিভিন্ন প্রকারভেদ রয়েছে। আরো কিছু কণা হলো মিউওন, টাও, টাকিওন।
(ছবিসূত্রঃ : Matter vs Particle - What's the difference?)
একটি প্রোটন দুইটি আপ কোয়ার্ক ও একটি ডাউন কোয়ার্ক দ্বারা গঠিত। ছবিটাতে u দ্বারা আপ কোয়ার্ক ও d দ্বারা ডাউন কোয়ার্ক বুঝানো হচ্ছে। অপরদিকে নিউট্রন দুইটি ডাউনকোয়ার্ক ও একটি আপকোয়ার্ক দ্বারা গঠিত।
এরকমভাবে কৃষ্ণগহ্বর, নক্ষত্র, চাঁঁদ, পৃথিবী, অন্যান্য গ্রহ এগুলো সবই বস্তু।