প্রশ্নকর্তার প্রশ্নটি উল্টো হয়েছে। প্রশ্নটি হবে, 'ধমনিতে কপাটিকা থাকে না কেন কিন্তু শিরায় করাটিকা থাকে কেন?'
এই প্রশ্নটির উত্তর দিতে হলে আগে জানতে হবে কপাটিকা কী? কপাটিকা হলো অনেকটা আমাদের ঘরের দরজার মতো যেটা দিয়ে আসা যাওয়া করা যায়। কিন্তু কপাটিকার ক্ষেত্রে শুধু একমুখী কাজ করা যায়। অর্থাৎ রক্ত চলাচল একমুখী করার জন্যই কপাটিকা ব্যবহার করা হয়।
এখন আসি ধমনি এবং শিরার উৎপত্তি নিয়ে।ধমনি মূলত হৃৎপিণ্ড থেকে তৈরি হয়।হৃৎপিণ্ডের বাম নিলয় থেকে মহাধমনি তৈরি হয় আর ডান নিলয় থেকে ফুসফুসীয় ধমনি তৈরি হয়।অর্থাৎ এটি দেহের উর্ধ্বাংশ থেকে তৈরি হয় এবং অক্সিজেনযুক্ত রক্ত সারাদেহে পরিবহন করে(ব্যতিক্রম:পালমোনারি বা ফুসফুসীয় ধমনি)। আর শিরা মূলত দেহের উর্ধাংশ এবং নিম্নাংশ থেকে তৈরি হয়।বিশেষ করে নিম্নমহাশিরা যেটি হৃৎপিণ্ডের ডান অলিন্দে প্রবেশ করেছে সেটি কিডনি থেকে উৎপন্ন রেনাল শিরা থেকে তৈরি হয়েছে।অর্থাৎ দেহের নিম্নাংশ থেকে উৎপন্ন হয়ে কার্বন ডাই অক্সাইডযুক্ত রক্ত দেহের উপরের দিকে অর্থাৎ হৃৎপিণ্ডে নিয়ে যায় এবং সেখান থেকে ফুসফুসে গিয়ে দেহ থেকে কার্বন ডাই অক্সাইড গ্যাস বের করে দেয়।
আবারও বলি কপাটিকা রক্তের চলাচল একমুখী করার জন্য ব্যবহৃত হয়।ধমনি যেহেতু দেহের উর্ধ্বাংশ থেকে উৎপন্ন হয়ে সারাদেহে রক্ত পরিবহন করে অর্থাৎ এটি অভিকর্ষজ ত্বরণের প্রভাবে কাজ করে। যার কারণে ধমনিতে কপাটিকা দিয়ে রক্তের চলাচল একমুখী বা নিচের দিকে করানোর প্রয়োজন নেই। তাই ধমনিতে কপাটিকা থাকে না। কিন্তু শিরার ক্ষেত্রে দেহের নিম্নাংশ থেকে তৈরি হয়ে সারা দেহ থেকে রক্ত ফুসফুসে নিয়ে যায়(উপরের দিকে) অর্থাৎ শিরাকে অভিকর্ষজ ত্বরণের বিপরীতে কাজ করতে হয়।তাই শিরার রক্ত চলাচলের পথ যাতে শুধু উর্ধ্বমুখীই থাকে, নিম্নমুখী না হয়, তাই শিরায় কপাটিকা থাকে।