প্রচলিত অর্থে কারও উচ্চতা বাড়ে না। নভোচারী আবার পৃথিবীতে ফিরে এলে তাঁর আগের উচ্চতা ফিরে পান। নিশ্চয় প্রশ্ন জাগছে, এটা কেন এবং কীভাবে ঘটে? আসলে আমরা যখন পৃথিবীতে থাকি, তখন সব সময় পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ শক্তি কেন্দ্রের দিকে আমাদের টেনে রাখে। ফলে মেরুদণ্ডের কশেরুকাগুলোর মধ্যবর্তী শূন্যস্থান সংকুচিত হয়ে আসে। কিন্তু মহাকাশে পরিভ্রমণের সময় শূন্য মহাকর্ষ (জিরো গ্র্যাভিটি) অবস্থানে কশেরুকাগুলোর ওপর আপাত কোনো আকর্ষণ বল কাজ করে না। তখন ওগুলো একটু প্রসারিত হয়। ফলে উচ্চতা বাড়ে। শুধু মহাশূন্যেই নয়, আমরা সারা দিন হাঁটি, চলাফেরা করি। এই সময় মাধ্যাকর্ষণের টানে আমাদের উচ্চতা সামান্য কিছু হলেও কমে। রাতে ঘুমের সময় উচ্চতা আবার কিছুটা বাড়ে। মানুষের মেরুদণ্ডে ৩৩টি কশেরুকা। যদি প্রতি জোড়া কশেরুকার মধ্যের ফাঁকা অংশ সামান্য বাড়ে, তাহলেও হয়তো এক ইঞ্চির ভগ্নাংশ পরিমাণ বেড়ে যেতে পারে। মহাশূন্য স্টেশনে নভোচারীদের উচ্চতা এমনকি ৩ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে পারে। আপনার উচ্চতা যদি ৬ ফুট হয়, তাহলে মহাশূন্যে নির্দিষ্ট কক্ষপথে পরিভ্রমণের সময় উচ্চতা ২ ইঞ্চির সামান্য বেশি বাড়তে পারে। সমস্যা হলো, যদি মহাকাশচারীদের পোশাকে (স্পেস স্যুট) এই বাড়তি স্থানের ব্যবস্থা না থাকে, তাহলে বিপদ হতে পারে। শরীরের তুলনায় পোশাকের মাপ ছোট হয়ে যাবে। তাই প্রতিটি স্পেস স্যুট হিসাব করেই তৈরি করা হয়। আবার পৃথিবীতে ফিরে এলে পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ বলের কারণে উচ্চতা একটু কমে আগের মতোই হয়ে যায়।
-আব্দুল কাইয়ুম