প্লাস্টিক,মোবাইল,কম্পিউটার,বাল্ব,টেলিভিশন,ডেন্টাল বর্জ্য ইত্যাদি।
ঢাকা-উত্তর সিটি কর্পোরেশনের প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা মো. মঞ্জুর হোসেন বলেন, ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে ডিজিটাল বাংলাদেশে পরিণত করার ভিশন রয়েছে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের। ই-বর্জ্য রিসাইকেল আমাদের দেশকে ডিজিটাল বাংলাদেশের দিকে নিয়ে যাওয়ার পথে দারুণ ভূমিকা রাখছে। এ ছাড়া স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তার ঝুঁকি প্রতিরোধের জন্য ই-বর্জ্যরে সঠিক ব্যবস্থাপনারও প্রয়োজন আছে। বিগত দশ বছরে দেশের ই-বর্জ্য রিসাইকেলের চিত্র আমাদের তাই বলে।
দেশে প্রতি বছর ই-বর্জ্য বাড়ছে ২০ শতাংশ। সীমিত পরিসরে ৮টি প্রতিষ্ঠান এসব ই-বর্জ্য রিসাইকেলের উদ্যোগ নিলেও মূল্যবান ধাতব উপাদান আহরণের সক্ষমতা নেই অধিকাংশেরই। নারায়ণগঞ্জের দেলপাড়ায় বড় পরিসরে গড়ে উঠেছে ই-বর্জ্য প্ল্যান্ট। ই-বর্জ্যরে পর্যাপ্ত প্রাপ্তি ও সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা নিশ্চিতে দ্রুত ই-বর্জ্য বিধিমালা তৈরির তাগিদ তাদের।
রিসাইকেলারদের সব ধরনের নীতি সহায়তার আশ্বাস দিয়ে সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, যেহেতু ই-বর্জ্য রিসাইক্লিংয়ে পরিবেশ ও মানবস্বাস্থ্যের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব রোধে কাজ করে তাই দ্রুত ই-বর্জ্য রিসাইকেল ব্যবস্থা গড়ে তোলা হবে। তিনি বলেন, বর্জ্যকে যদি সম্পদে পরিণত করা হয়, তাহলে রাষ্ট্র তার পাশে দাঁড়াবেই।বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০১৬ সালের জুলাই এর শেষ নাগাদ সেলফোন সাবস্ক্রিপশন সংখ্যা মোট ১২৮.৯৩৯ মিলিয়ন অতিক্রম করেছে। সুতরাং সহজেই বোঝা যায় আগামী কয়েক বছরে এসব ফোনের মেয়াদ শেষ হলে দেশে কী পরিমাণ ইলেক্ট্রনিক বর্জ্য জমা হবে। অন্যদিকে পরিবেশ ও সামাজিক উন্নয়ন সংস্থার (ইএসডিও) এক গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতিবছর বাংলাদেশে টেলিভিশন, কম্পিউটার, মোবাইল ফোন, বাল্ব, থার্মোমিটার, চিকিৎসা ও ডেন্টাল বর্জ্য থেকে ১২৪ মিলিয়ন মেট্রিক টন ই-বর্জ্য উৎপন্ন করে।
অপরদিকে বুয়েট ও পরিবেশ অধিদফতরের পরিচালিত যৌথ গবেষণায় দেখা গেছে, ১ মেট্রিক টন প্রিন্টেড সার্কিট বোর্ড ও রেম থেকে পাওয়া যেতে পারে ২৮ হাজার ডলার বা ২৪ লাখ টাকা মূল্যের সোনা, রূপা, তামা ও টিন। এ ছাড়া পাওয়া সম্ভব অ্যালুমিনিয়াম, লোহা, নিকেলসহ মূল্যবান ধাতব উপাদান। পরিবেশ অধিদফতরের পরিচালক (জলবায়ু পরিবর্তন ও আন্তর্জাতিক কনভেনশন) মির্জা শওকত আলী বলেন, ই-বর্জ্য রিসাইক্লিংয়ে যে পরিমাণ সোনা, রূপা পাওয়া যায় তা লাভজনক।
আমাদের দেশে যদি ই-বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণ করা হয় তাহলে তা হতে পারে মূল্যবান সম্পদ। বিদেশে ভালো চাহিদা থাকায় রাজধানীর অনেক ভাঙারির দোকানে আলাদা করা হচ্ছে নষ্ট ইলেক্ট্রনিক পণ্যের মূল্যবান যন্ত্রাংশ।
সূত্র: মানবকণ্ঠ