শ্বাস গ্রহণের সময় অবশ্যই ধুলাবালুসহ অন্য সব গ্যাস আমরা গ্রহণ করি। সাধারণ হিসাব অনুযায়ী বাতাসের শতকরা প্রায় ৭৮ ভাগ নাইট্রোজেন। এটি একটি নিষ্ক্রিয় গ্যাস। এরপরই অক্সিজেন। শতকরা প্রায় ২১ ভাগ। আর রয়েছে সামান্য পরিমাণ কার্বন ডাই-অক্সাইড, নিয়ন, হিলিয়াম, হাইড্রোজেন প্রভৃতি গ্যাস। এর মধ্যে শুধু অক্সিজেন গ্রহণ করে আমাদের রক্ত পরিশোধিত হয় এবং কার্বন ডাই-অক্সাইড শরীর থেকে বের করে দেয়।
আমরা নিশ্বাসে যে বাতাস গ্রহণ করি তাতে ধুলোবালিসহ সব গ্যাসই থাকে। নাকের মধ্যে মিউকাস মেমব্রেনসহ নানান ব্যবস্থা আছে ধুলোবালিকে আটকে দেওয়ার। ফুসফুসে তাই ধুলোবালিমুক্ত গ্যাসগুলোই পৌঁছে। ফুসফুস থেকে অ্যালভিলার থলিতে ফিল্টার হয়ে শুধু অক্সিজেন যায় হূদপিণ্ডে। সেখানে রক্তের সংস্পর্শে আসে গ্যাসগুলো। রক্তে উপস্থিত বিশেষ একটি পদার্থ হিমোগ্লোবিন। এই পদার্থের সন্নিবেশ সমযোজী বন্ধনে যুক্ত হয় অক্সিজেন। নাইট্রোজেন বা কার্বন ডাই অক্সাইড যুক্ত হতে পারে না। এরপর অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্ত পুরো শরীরে ছড়িয়ে পড়ে। কোষগুলো রক্ত থেকে অক্সিজেন গ্রহণ করে। সেখানে গ্লুকোজের সঙ্গে বিক্রিয়া করে উত্পন্ন হয় কার্বন ডাই অক্সাইড ও পানি। উচ্চ চাপে রক্তে দ্রবীভূত হয়ে সে কার্বন ডাই অক্সাইড আসে হূদপিণ্ডে। হূদপিণ্ডে এসে কম চাপে তা মুক্ত হয়ে ফুসফুসে চলে যায়। এরপর অন্য গ্যাসগুলোর সঙ্গে কার্বন ডাই অক্সাইড দেহ থেকে বাইরে বেরিয়ে যায়। হিমোগ্লোবিনের সঙ্গে কার্বন মনোক্সাইড যুক্ত হতে পারে। তাই কার্বন মনোক্সাইডকে বেশি ক্ষতিকর বলা হয়।
আমরা বাতাস থেকে যে পরিমাণ কার্বন ডাই-অক্সাইড গ্রহণ করি, তার প্রায় দ্বিগুণ নিশ্বাসের সঙ্গে বের করে দিই। সেই সঙ্গে নাইট্রোজেন, হিলিয়াম প্রভৃতিও বের করে দিই। আর ধুলাবালু? সেটা যেন ফুসফুস পর্যন্ত না যায়, সে জন্য আমাদের নাকের ভেতর রয়েছে ঘন লোম ও আরও কিছু ব্যবস্থা। অন্তত কোনো বালুকণা যেন ফুসফুসে না যায়, সে ব্যবস্থা নাকের ভেতরেই রয়েছে। এখন প্রশ্ন হলো অন্যান্য গ্যাস, যত সামান্যই হোক না কেন, আমাদের ক্ষতি করে কি না। আমরা তো জানি, বায়ুদূষণ বেশি হলে অবশ্যই ক্ষতি হয়। সে জন্য বাতাসে যেন কার্বন ডাই-অক্সাইড বেশি না থাকে, সে চেষ্টা আমরা করি। সবুজ গাছপালা বাতাসের কার্বন ডাই-অক্সাইড গ্রহণ করে বাতাসে অক্সিজেন ফিরিয়ে দেয়। তাই পরিষ্কার বাতাসের জন্য দরকার অনেক বেশি সবুজ গাছ। -সংগৃহীত