বাঁচতে গলে শ্বাস তো নিতেই হবে। কিন্তু এ খবর কি রাখেন যে মাঝে-মধ্যে গভীর শ্বাস নিলে শরীরের দারুন উপকারে লাগে। কীভাবে? জোরে শ্বাস নেওয়ার সঙ্গে শরীরের ভাল-মন্দের কী সম্পর্ক? সেই উত্তর খোঁজারই তো চেষ্টা চালানো হল বাকি প্রবন্ধজুড়ে।
কাজের ফাঁকে বা বাসে যেতে-আসতে কয়েক মিনিট লম্বা শ্বাস নিন আর ছাড়ুন। এমনটা করলে শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা বৃদ্ধি পায়। ফলে নিমেষ মন ভাল হয়ে যায়। সেই সঙ্গে শরীরের প্রতিটি অঙ্গে অক্সিজেনের যোগান বেড়ে যাওয়ার কারণে নানাবিধ রোগ ব্যাধিও কমতে শুরু করে। তবে এখানেই শেষ নয়। মাঝে মাঝে লম্বা শ্বাস নেওয়ার অভ্যাস করলে আরও আনেক উপকার মেলে। যেমন...
উপকারিতা ১:
শরীরে টক্সিক উপাদান জমে থাকা মোটও স্বাস্থ্যকর নয়। তাই তো শরীর কখনও প্রস্রাবের সঙ্গে তো কখনও ঘামের মাধ্যমে এই বিষকে বাইরে বের করে দেয়। আরেকভাবেও এই কাজটি হয়ে থাকে। কীভাবে জানেন? আমরা যখন লম্বা শ্বাস নি, তখন অক্সিজেন শরীরে প্রবেশ করে, আর কার্বন ডাইঅক্সাইড বাইরে বেরিয়ে আসে। যত কার্বন ডাইঅক্সাইড বরতে থাকে, তত টক্সিক উপাদানের মাত্রাও কমতে থাকে শরীরে।
উপকারিতা ২:
জোরে জোরে শ্বাস নিলে স্ট্রেস লেভেল নিমেষে কমে যায়। কারণ এক্ষেত্রেও অক্সিজেন বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা বৃদ্ধি পেলে পেশীদের কমক্ষমতা বেড়ে যেতে শুরু করে। সেই সঙ্গে রক্ত প্রবাহের উন্নতি ঘটার কারণে মানসিক চাপও কমে যায়। তাই এবার থেকে যখন স্ট্রেসের কারণে পাগল পাগল লাগবে, তখনই এক টানা লম্বা শ্বাস নিতে থাকবেন। তাহলেই দেখবেন উপকার মিলছে।
উপকারিতা ৩:
বিশেষ মুহূর্তে স্বামী-স্ত্রীর শারীরিক সক্ষমতা বাড়াতে শ্বাস-প্রশ্বাস বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। আসলে জোরে জোরে শ্বাস নিলে দেহে রক্ত প্রবাহ বেড়ে যায়। ফলে সার্বিকবাবে শরীরের সক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
উপকারিতা ৪:
অল্পতেই ক্লান্ত বোধ করেন নাকি? তাহেল কিছু সময় অন্তর অন্তরই জোরে জোরে শ্বাস নেওয়ার অভ্যাস করুন। এমনটা করলে দেখবেন ক্লান্তি তো দূর হবেই। সেই সঙ্গে ফুসফুসে অক্সিজেনের মাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে সহজে হাঁপিয়ে পরার সমস্যাও দূরে পালাবে। এই কারণেই তো অ্যাথেলিটদের জোরে জোরে শ্বাস নেওয়ার ট্রের্নিং দেওয়া হয়, যাতে তারা সহজে হাপিঁয়ে না পরতে পারেন।
উপকারিতা ৫:
একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে টানা ৬ মাসা নিয়মিত জোরে জোরে শ্বাস নেওয়ার অভ্য়াস করলে ধূমপানের নেশা ছাড়তে কোনও সমস্যাই হয় না। তাই তো যারা স্মোমিকং ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেয়ে ফেলেছেন তারা শ্বাস-প্রশ্বাসের উপর গুরুত্ব দেওয়া শুরু করুন। দেখবেন লক্ষ পূরণে কোনও কষ্টই হবে না।
উপকারিতা ৬:
লম্বা শ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়ার সময় ফুসফুসের সংকোচন-প্রসারণ বেড়ে যায়। ফলে ধীরে ধীরে লাং-এর কর্মক্ষমতা বাড়তে শুরু করে। আর একবার ফুসফুসের ধকল নেওয়া ক্ষমতা বেড়ে গেলে ঠান্ডা লাগা, ব্রঙ্কাইটিস এবং সাইনুসাইটিসের মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও একেবারে কমে যায়।
উপকারিতা ৭:
দেহে অক্সিজেনের মাত্রা যত বৃদ্ধি পাবে, তত রক্ত পরিশুদ্ধ হয়ে ওঠবে। ফলে একাদিক যেমন রোগের প্রকোপ হ্রাস পাবে, তেমনি শরীর ও মন, উভয়ই চনমনে হয়ে উঠবে।
ক্রেডিট : Bengali Boldsky