যেকোন গন্তব্যে পৌঁছাতে হলে সেটার সঠিক রাস্তা বা পথ জানতে হয়। যেমন ধরুন,প্লেন,ট্রেন বা অন্যান্য যানবাহন সবগুলোরই নির্দিষ্ট পথ রয়েছে। সেই নির্দিষ্ট পথে অগ্রসর হলেই কেবল সঠিকভাবে গন্তব্যে পৌছানো যায়।
একসময় নাবিকেরা দিক চিহ্নিত করতে আকাশের চাঁদ তারার উপর নির্ভরশীল ছিলো এবং এভাবেই সঠিক স্থানে পৌছাতো। শুধু নাবিকেরা নয় কম্পাস আবিষ্কারের পূর্বে যেকোন দিক নির্ধারণ করতে চাঁদ, সূর্য, তারার উপর নির্ভরশীল থাকতে হতো। কালের পরিক্রমায় এবং বিজ্ঞানের অগ্রগতির ফলে কম্পাস আবিষ্কার হয় এবং সেই সাথে এখন প্রতিটি ফোনে ম্যাপও রয়েছে। যার কারণে পথ হারানোর সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।
আমরা মানুষেরা নাহয় ফোনের মাধ্যমে পথ চিহ্নিত করতে পারি কিন্তু আমরা কি কখনো ভেবেছি কুকুর,বিড়াল কিভাবে পথ নির্ধারণ করে? এইসব প্রাণীরা কখনো পথ হারায় না কেন? পোষা বিড়াল বা কুকুর হারিয়ে গেলে কিংবা দূরে কোথাও রেখে এলে কী করে ঠিক ঠিক বাড়িতে ফিরে আসে? তাদের কাছে তো মোবাইল নেই তারা তো ম্যাপ ইউজ করতে পারে না তাহলে তারা কেন পথ হারায় না?
কিছু কিছু বিজ্ঞানীদের মতে কুকুরের আছে অসাধারণ ঘ্রাণ নেওয়ার ক্ষমতা। তারা এক রাস্তা দিয়ে একবার গেলে সেই ঘ্রাণ শুঁকে শুঁকে আবার সেই রাস্তায় ফিরে আসতে সক্ষম। একইভাবে বিড়ালেরও রয়েছে গন্ধ শুকবার ক্ষমতা,তাছাড়া বিড়াল পৃথিবীর চৌম্বকক্ষেত্র ও ব্যবহার করে পথ চিনতে সক্ষম। বিড়ালের কানে একপ্রকারের আয়রন রয়েছে যা তাকে চৌম্বকক্ষেত্রের নির্দেশনা পেতে সাহায্য করে। ফলে চৌম্বকক্ষেত্রের দরুন আশেপাশের বিভিন্ন শব্দ শ্রবণ করে মস্তিষ্কে প্রেরণ করে তারা পথ নির্ধারণ করতে সফল হয়। এই আমরা মানুষেরাও ঘ্রান নিতে পারি তবে আমাদের চেয়ে তাদের ক্ষমতা ঢের বেশি। একজন সাধারণ মানুষ যেখানে পাঁচ মিলিয়ন গন্ধ চিনে নিতে পারে। সেখানে একটি বিড়াল পারে ১৯ মিলিয়ন পর্যন্ত।
শুধু যে কুকুর বিড়ালই দিক নির্ধারণ করতে পারে এমন নয়। আমার বিভিন্ন ঐতিহাসিক কাহিনি বা ইতিহাস থেকে জানতে পারি,অনেক সময় দাদি নানীরাও গল্প শুনায় যে তারা পায়রা বা কবুতরের মাধ্যমে চিঠি পাঠাতো দূরদূরান্তে। সেই কবুতরগুলো কিভাবে দিক চিহ্নিত করতো? তাছাড়া শীতকালে দেশে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে প্রতিবছর হাজার হাজার অতিথিপাখীর আগমন হয়,আমরা কখনো ভেবেছি,এতো দূরদুরান্ত থেকে আসা এই পাখিগুলো কিভাবে শীত শেষে তাদের আবাসস্থলে পৌছিয়ে যেতে পারে?
এই পাখিগুলোও পৃথিবীর চৌম্বকক্ষেত্র দ্বারা পথ চিহ্নিত করতে সক্ষম। কবুতরের ঠোঁটের মধ্যেও রয়েছে একধরণের আয়রন যার মাধ্যমে ঠিক বিড়ালের মতো তারাও চৌম্বকক্ষেত্র ব্যবহার করতে পারে।
অতএব আমরা কুকুর,বিড়ালকে পথ দেখিয়ে যতদূরেই রেখে আসিনা কেন তারা পথ হারাবে না।
Source: Science bee facebook page