সুপার সোলজার সিরাম কী? বাস্তবেও কি এর কোনো অস্তিত্ব আছে?
এমসিইউ ফ্যানদের মধ্যে জনপ্রিয় একজন সুপারহিরো হলো স্টিভ রজার্স ওরফে ক্যাপ্টেন অ্যামেরিকা। লেজার বিম, ফ্লাইং, নাইট ভিশন জাতীয় অভিনব ক্ষমতা না থাকা সত্ত্বেও ফ্যানদের মনে সহজেই স্থান করে নিয়েছে সে। শতবছর বয়সী এই সুপার হিরোর ক্ষমতার মূল উৎস অাবিস্কৃত সুপার সোলজার সিরাম।
স্টিভ ছাড়া জোহান স্মিথ, বাকি বার্নস, ব্রুস ব্যানার, এমিল ব্লন্সকি সহ অনেকের উপর সিরামের প্রয়োগ করা হলেও সবথেকে সফল হয় স্টিভের এক্সপেরিমেন্ট।
এমসিইউতে ডক্টর আব্রাহাম আর্স্কাইন সুপার সোলজার সিরাম ডেভেলপ করেন। সিরামের মূল উদ্দেশ্য ছিলো সুপার হিউম্যান অ্যাবিলিটি সমৃদ্ধ পারফেক্ট সোলজার বানানো। সিরাম ইনজেক্টের পর ওই দেহে সুপার স্ট্রেন্থ, স্পিড রান, হাইয়ার স্ট্যামিনা, বুষ্টেড ব্রেন, অ্যালিজিটি, হিলিং ফ্যাক্টর সহ আরো সুপার হিউম্যান অ্যাবিলিটি ফর্ম আপ হয়। প্রথমে জোহান স্মিথের উপর প্রয়োগ করা হলে দেখা যায়, সিরামের প্রভাবে তার ত্বক নষ্ট হয়ে গেছে এবং তার মধ্যে থাকা নেগেটিভিটিও বেড়ে যায়। এরপর ডক্টর আব্রাহাম বুঝতে পারেন সিরাম শারীরিক সক্ষমতার পাশাপাশি মানুষের মনে অন্তঃস্থ পজিটিভিটি-নেগেটিভিটি উভয়ই বৃদ্ধি করে। এজন্য স্টিভের উপর এক্সপেরিমেন্টের সময় তিনি বিটা রে প্রয়োগ করেন, যাতে চেহারা ঠিক থাকে, স্টিভের মধ্যের পজিটিভিটিও বৃদ্ধি পায়। কিন্তু এক্সপেরিমেন্টের পরেই আব্রাহামকে হাইড্রা এজেন্ট গুলি করে হত্যা করে এবং এর ফর্মুলা হারিয়ে যায়।
এখন আসা যাক সুপার সোলজার কতটা রিয়্যালিস্টিক সে বিষয়ে।
বাস্তবে কিছু প্রক্রিয়ার মাধ্যমে গুটি কয়েক হিউম্যান অ্যাবিলিটি অর্জন করা সম্ভব হলেই তার প্রক্রিয়া মুভির মতো হবে না।
এক্সপেরিমেন্টের পর হ্যাংলা পাতলা স্টিভের মধ্যে সবার আগে শারীরিক পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। জীবের মায়োস্ট্যাটিন প্রোটিন দেহের মাংসপেশী বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ করে। জিন মডিফিকেশনের মাধ্যমে দেহের মায়োস্ট্যাটিন প্রোটিন নিয়ন্ত্রিত মাত্রায় কমাতে পারলেটা মাংসপেশীর পাশাপাশি ২০-৩০% শক্তি বৃদ্ধি করতে পারে।
সিরাম স্টিভের মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করে, ফলে স্টিভ প্রতিবার জ্যামিতিকভাবে সফলভাবে শিল্ড ছুড়তে পারে। বাস্তবে ব্রেন বুস্টিং এর জন্য রুবিক্স কিউব, বিশেষ কিছু পাজেল গেম সহ বিভিন্ন ব্রেন বুস্টিং গেম কার্যকরী। এছাড়া ব্রেন বুস্টার পিলের এক্ষেত্রে মৃদু প্রভাব থাকতে পারে, তবে অনেকে একে প্লাসিবো ইফেক্ট বলে ধারণা করেন।
এছাড়াও স্টিভ হ্যান্ড টু হ্যান্ড ক্লোজ কমব্যাটে যথেষ্ট পারদর্শী। এর পিছনে দুটি থিওরি দাঁড় করানো যায়। প্রথমটি হলো, সিরামের প্রভাবে স্টিভের মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি পায় আর সে সহজেই নতুন নতুন কমব্যাট টেকনিক আয়ত্ত্ব করে ফেলে। অপরটি হলো সিরামের মধ্যে পূর্বেই ফাইট স্কিল এমবেডেড ছিলো। বাস্তবে এর রেপ্লিকেশন হিসেবে ইলন মাস্কের নিউরালিংক এর উদাহরণ নেয়া যেতে পারে। নিউরালিংকের সফলতা হিসেবে আমরা ইতোমধ্যে জেনেছি যে, এর সাহায্যে একটু বানর ভিডিও গেম খেলতে পেরেছে। প্রজেক্ট নিউরালিংক সফলতা পেলে তা বাস্তব সুপার সোলজার সৃষ্টির পদচারণাকে ত্বরান্বিত করবে।
তবে বাস্তবে সুপার সোলজার বানানো সম্পূর্ন অান-এথিক্যাল একটি প্রজেক্ট। মানবদেহের জিন মডিফিকেশনে সামান্য ত্রুটির কারণে সহস্রাধিক রোগের উত্থান ঘটতে পারে। অন্যদিকে সুপার সোলজারের সাহায্যে কোনো দেশের সরকার চাইলেই পুরো বিশ্বকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে, যা নিউক্লিয়ার বোমার থেকেও ভয়ানক হবে। ইতোমধ্যে চীন ও রাশিয়ার বিরুদ্ধে এ ধরনের এক্সপেরিমেন্টের আরোপ উঠলে সরকার তা অস্বীকার করে।
লেখকঃ Nadia Islam | Science Bee
#science #bee #facts #super #captain #america #marvel