বাড়ির জিনিসপত্রকে অনেক সময়ই নষ্ট করে নানা কীটপতঙ্গ। বিশেষ করে, বইখাতা বা কাঠের জিনিসে একবার উইপোকা ধরলে তা থেকে নিস্তার পাওয়া দুষ্কর। এ দিকে বাড়িতে কাগজপত্র বা কাঠের জিনিসপত্র রাখতেই হয়। তাই এর ভয় থেকে গৃহস্থ মুক্ত হতে পারেন না একেবারেই।
সচরাচর সাধারণ কোনও কীটনাশকে এই পোকা সম্পূর্ণ নির্মূল হয় না। উইয়ের উপস্থিতি টের পেলেই সেগুলো ভেঙে দেওয়া বা পেস্ট কন্ট্রোলের সাহায্যে উইপোকা নিয়ন্ত্রণ- কোনওটাই খুব একটা কার্যকর নয়। কারণ এ সবের ফলে সাময়িকভাবে উইপোকা দূর হলেও আবারও তা ফিরে আসে। তা ছাড়া এই সব রাসায়নিক শিশুদের শরীরের জন্যও ক্ষতিকারক। শ্বাসের মাধ্যমে এই রাসায়নিক শরীরে প্রবেশ করলে তা খুব একটা স্বাস্থ্যকর নয়।
অনেকেরই ধারণা কেবলমাত্র স্যাঁতসেতে দেওয়ালের কারণেই বোধ হয় উইপোকা বাসা বাঁধে। তাই বাড়ি প্লাস্টার করার সময় স্যাঁতসেতে ভাব প্রতিরোধক রাসায়নিকও মেশান অনেকেই। কিন্তু বাস্তবিক ক্ষেত্রে দেখা গেছে, এ সব উপায়ও উইপোকার আক্রমণ পুরোপুরি ঠেকাতে পারা যায় না। বরং এর সঙ্গে লড়তে গেলে ধারাবাহিক কিছু অভ্যাস আয়ত্তে রাখতে হয়। জানেন সে সব কী কী?
১. যে দেওয়ালে উইপোকার আক্রমণ বেশি, সেখানে কর্পূরের গুঁড়া ও তরল প্যারাফিন মিশিয়ে একটি দ্রবণ তৈরি করুন। দিন চার-পাঁচ অন্তর তা লাগিয়ে রাখুন দেওয়ালের কোণায়।
২. নিমপাতা শুকিয়ে গুঁড়া করে নিন। বইয়ের আলমারির তাকে, বা কাঠের আসবাবের কোণায় মাঝে মাঝেই ছড়িয়ে দিন তা। নিম পাতার গন্ধ উইপোকা সহ্য করতে পারে না।
৩. কাগজপত্র দীর্ঘ দিন একই জায়গায় ফেলে রাখবেন না। মাঝে মাঝেই তা নাড়াচাড়া করুন। রীতিমতো নাড়াচাড়া করা হয়, এমন জায়গায় কখনও বাসা বাঁধে না উইপোকা।
৪. ন্যাপথলিনের বল রেখে দিন বইয়ের আলমারিতে। কাঠের ডেস্কের ভিতর বা আলনার কোণাতেও রাখুন ন্যাপথলিন বল। এর কড়া কীটনাশকের গন্ধ উইপোকাকে ঘেঁষতে দেয় না।
৫. কালো জিরা যে কোনও কীট দমনে ওস্তাদ। বিশেষ করে বই কাটে যে সব পোকা, তাদের ক্ষেত্রে কালো জিরা খুব ভাল সমাধান। প্রতিটা বইয়ের নানা পাতার ভাঁজে অল্প কয়েকটা কালো জিরা রাখুন। ফল মিলবে হাতেনাতে।
ঘরোয়া উপায়ের পরেও আরও বাড়তি সতর্কতা নিতে চাইলে হার্ডওয়ারের দোকানে উইপোকা ঠেকানোর রাসায়নিকের খোঁজ করতে পারেন। তবে এ সব রাসায়নিকের চেয়ে ঘরোয়া উপায় পকেটসই ও স্বাস্থ্যকর।