কোকের বোতলে মেন্টোস ছেড়ে দিলে বিস্ফোরণের মতো একটি ব্যাপার হয়। এ ব্যাপারটি মানুষকে যেমন মজা দেয় তেমনি অনেকে ভাবেন কোক এবং মেন্টোস একসাথে পেটে গেলে ভয়াবহ কিছু হবে। আসল ঘটনাটা কী? কোক, পেপসি বা এমন ঝাঁঝালো কোনো কোমল পানীয়তে মেন্টস ছেড়ে দিলে মজার একটা সায়েন্স এক্সপেরিমেন্ট হয়ে যায়। ইন্টারনেটে অনেক ভিডিও এবং মেসেজ আছে যাতে বলা হয় এই দুইয়ের মিশ্রণে তৈরি হবে সায়ানাইড যা কিনা আপনার পাকস্থলীকে ফাটিয়ে ফেলবে। এ ছাড়াও দাবি করা হয় ব্রাজিলে দুই কিশোর কোক এবং মেন্টস একসাথে খেয়ে মারা গেছে। কিন্তু কোক আর মেন্টোস একসাথে হলে এমন বিস্ফো্রণ কেন হয় আর এটা কি আসলেই মানুষের মৃত্যুর কারণ হতে পারে? মেন্টোস যখন ঝাঁঝালো কোনো কোমল পানীয়ের বোতলে ফেলা হয় তখন ওই পানীয়ের মাঝে প্রচুর পরিমাণে ফেনা হয় যা বোতলের মুখ দিয়ে ঠেলে বের হয়ে আসে এবং দেখতে বিস্ফোরণের মতো মনে হয়। এর কারণ হলো মেন্টোসের মেনথল ফ্লেভার ফেনা তৈরি করে এবং মেন্টোসের উপরিভাগে থাকা অসংখ্য ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ছিদ্রের কারণে বের হয়ে আসে কোকের কার্বন ডাই অক্সাইড। কোকের সারফেস টেনশন বা পৃষ্ঠটান হঠাৎ করে বেড়ে যায় এ সময়ে, ফলে বিস্ফোরণের মতো ছিটকে বের হয়ে আসে কোক। এ ঘটনাটি হলো একটি ভৌত বিক্রিয়া, মোটেই রাসায়নিক বিক্রিয়া নয়। এ কারণে যদি কেউ বলে যে রাসায়নিক বিক্রিয়ার ফলে কোক ও মেন্টোস থেকে সায়ানাইড উৎপন্ন হয় তাতে কান দেবেন না। এতে দুজন মারা যাবার ঘটনাটিরও সত্যতা পাওয়া যায়নি। কিন্তু এটা অবশ্যই মনে রাখুন যে এই এক্সপেরিমেন্টের ভিডিও দেখে একসাথে কোক এবং মেন্টস খেয়ে বাহাদুরি দেখাতে যাবেন না। আপনি হয়তো মারা যাবেন না, কিন্তু অসুস্থ হয়ে যেতে পারেন সহজেই। কোক এবং মেন্টোস একত্রে প্রচুর পরিমাণে ফেনা এবং গ্যাস তৈরি করে যা আপনার মুখ দিয়ে ঠেলে বের হয়ে আসবে এবং আপনার পরিপাকতন্ত্রের ক্ষতি করে ফেলতে পারে। কোকের বোতলে মেন্টোস দিয়ে রকেট এক্সপেরিমেন্ট করার সময়েও সাবধান থাকুন কারণ ওই রকেট ছুটে এসে বেচারা গবেষকের মাথায় আঘাত করার ঘটনাও ঘটেছে। -সংগৃহীত