কয়েলের ধোঁয়া কী স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর? - ScienceBee প্রশ্নোত্তর

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রশ্নোত্তর দুনিয়ায় আপনাকে স্বাগতম! প্রশ্ন-উত্তর দিয়ে জিতে নিন পুরস্কার, বিস্তারিত এখানে দেখুন।

+2 টি ভোট
3,267 বার দেখা হয়েছে
"স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা" বিভাগে করেছেন (141,850 পয়েন্ট)

4 উত্তর

0 টি ভোট
করেছেন (141,850 পয়েন্ট)
নির্বাচিত করেছেন
 
সর্বোত্তম উত্তর

অন্য সবকিছুর মতোই মশার কয়েলের উদ্ভাবক দেশ হলো চীন। প্রাচীন চীনে চন্দ্রমল্লিকা ফুল থেকে প্রাপ্ত গুঁড়ো পাইরোগ্রাম, গাছের বাকল থেকে পাওয়া আঠা জাতীয় পদার্থের গুঁড়োর সঙ্গে মিশিয়ে মশা বিতাড়ক ধূপ তৈরি হতো। বর্তমানে কাঠের গুঁড়ো ও নারকেলের মালার গুঁড়োর সঙ্গে অ্যারারুটের মাড় মেশানো হয়। এক্ষেত্রে কাঠের গুঁড়ো ও নারকেলের মালার গুঁড়ো জ্বালানি হিসেবে এবং মিশ্রণকে জমাট করতে অ্যারারুটের মাড় ব্যবহার করা হয়। সবুজ রঙ হয় ম্যালাকাইট গ্রিন বা ক্রিস্টাল গ্রিন মেশানোর জন্য। মশার কয়েলের প্রধান উপাদান হলো পাইরোফ্রয়েড। এটা প্রাকৃতিক যৌগ পাইরোগ্রাম থেকে পাওয়া যায়। অ্যালেথ্রিন-এর মতো সমধর্মী যৌগ থেকেও পাওয়া যায়। ম্যাটেও অনুরূপ পাইরোফ্রয়েড থাকে। তবে তাতে অনবরত নির্দিষ্ট তাপমাত্রা প্রয়োগ করতে হয়। তাপ পেলে ম্যাটের পাইরোফ্রয়েড বাষ্পীভূত হয়। নিদির্ষ্ট তাপমাত্রা প্রয়োগের জন্য ম্যাটকে ম্যাটহিটারের হিটপ্লেটে রাখতে হয়। এর আসল সক্রিয় উপাদান হলো কীটনাশক ডিডিটি বা পিন্ডেনের মতো ক্লোরিনেটেড হাইড্রোকার্বন, প্যারাফিনের মতো আরপ্যানো ফসফরাস যৌগ এবং কার্বন।

প্রায় সমস্ত মশার কয়েলের মোড়কে অ্যালেথ্রিন ব্যবহারের কথা উল্লেখ রয়েছে। এর সঙ্গে ফেনল ও ক্রেসল- দুটি জৈবযৌগ ব্যবহার করা হয়। কয়েলে উপরোক্ত উপাদানগুলোর পরিমাণ মানুষের সহনীয় মাত্রার মধ্যেই থাকে বলে দাবি করে ব্যবসা করছে কয়েল প্রস্তুতকারক কোম্পানি। অন্যদিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পরিবেশ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা কতগুলো কীটনাশককে মশার কয়েলে ব্যবহারের জন্য নিরাপদ বলে চিহ্নিত করলেও আজ পর্যন্ত আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত কোনো মান নির্ধারিত হয়নি। কেবলমাত্র উন্নয়নশীল বিশ্বে মশা নিধনে ব্যবহৃত এই কয়েলের ভালো-মন্দ নিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কোনো মাথাব্যথাও সেই। আর তাই ব্যবহারকারীদের উপর মশার কয়েলে উপস্থিত কীটনাশক ও অন্যান্য উপাদানের ক্ষতিকর প্রভাবের দিকে সাধারণ মানুষ ততোটা গুরুত্ব দেয় না। সম্প্রতি জার্মানির ল্যুরেক বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞগণ এক চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছেন। তারা জানান, কয়েল তৈরিতে যে কাঠের গুঁড়ো ও নারকেলের মালার গুঁড়ো ব্যবহার করা হয়, তার ধোঁয়া এতোটাই সুক্ষ্ম যে তা সহজেই আমাদের শ্বাসনালী ও ফুসফুসের বায়ুথলির মধ্যে পৌঁছে সেখানে জমা হতে পারে। আর খুব সূক্ষ্ম হওয়ার জন্য কণাগুলো বাতাসেও কয়েকদিন ভাসমান অবস্থায় থাকতে পারে। অর্থাৎ মশার কয়েল নেভার বহুক্ষণ পরেও ঘরে অবস্থানকারী মানুষের শ্বাসনালীতে কয়েলের ধোঁয়ার কণা ঢুকতে পারে। এর ফলে ফুসফুসের বায়ুথলির কণায় রক্ত জমে যাওয়া থেকে নানা ক্ষতি হতে পারে। তাছাড়া অ্যালেথ্রিন মস্তিষ্ক ও রক্তের বিভেদকে ভেদ্যতা বাড়িয়ে দেয় বলেও তারা জানান।

মশার কয়েলের ধোঁয়া প্রতিটি মানুষের জন্যই ক্ষতিকারক। এই ধোঁয়া অনেক ধরনের শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত সমস্যার সৃষ্টি করে। বর্তমানে বিভিন্ন ধরনের ইলেক্ট্রনিক্স চাইনিজ র‌্যাকেট ও মশা মারার বিভিন্ন পণ্য পাওয়া যায়। যা থেকে নির্দিষ্ট তরঙ্গ বের হয়। এসব তরঙ্গ মশাকে আপনার কাছ থেকে দূরে পাঠিয়ে দেয়। কিন্তু এগুলো ব্যয়সাপেক্ষ। বিকল্প হিসেবে বাজারে যেসব লিকুইড, যা ইলেক্ট্রিক প্লাগে লাগিয়ে ব্যবহার করতে হয় সেগুলোর ক্ষতিকর দিক রয়েছে কিনা এ বিষয়ে এখনো গবেষণার কথা জানা যায়নি। তবে কয়েলের ধোঁয়া থেকে অনেক কম হবে এতোটুকু নিশ্চিত বলা যায়। সবচেয়ে ভালো হয়, সন্ধ্যার আগে দরজা-জানালা বন্ধ করে দেওয়া। যাতে মশা বাড়িতে ঢুকতে না-পারে। আর মশারি টানিয়ে ঘুমানো সবচেয়ে ভালো অভ্যাস। 

লেখক: বিজ্ঞান লেখক ও গবেষক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়  

+1 টি ভোট
করেছেন (4,990 পয়েন্ট)
মশার কয়েলে রয়েছে অ্যালথ্রিন, মাছি এবং মশা নিয়ন্ত্রণের জন্য ব্যবহৃত একটি বিষাক্ত পদার্থ। অ্যালেথ্রিনও বিষাক্ত প্রকৃতির কারণে মানব স্বাস্থ্যের পক্ষে ভাল নয়।মশার কয়েল দ্বারা তৈরি ছোট ধোঁয়া যদি ভালভাবে রক্ষণ না করে এবং তাতে অংশ না নেওয়া হয় তবে আমাদের ঘরে আগুনের প্রকোপ ঘটতে পারে এবং ক্ষতি হতে পারে।এমন জায়গায় মশার কয়েল ব্যবহার করা ভাল যা বায়ুচলাচল হয় না হাঁপানির মতো শ্বাসকষ্টের কিছু পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারে কারণ ধোঁয়ার ফলে ঘরটি ভরাট হয়ে যায় ফলে শ্বাসরোধ হয়।
গবেষণার উপর গবেষণায় দেখা গেছে যে একটি বদ্ধ ঘরে মশার কয়েল জ্বালানো মোটামুটি ১০০ টি লাঠি সিগারেটের ধূমপানের সমান। ১০০ সিগারেটের লাঠি? আমি আশ্চর্য হয়েছি যে পরিমাণ আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য নিয়ে আসতে পারে। মশার কয়েলগুলি
কার্সিনোজেনগুলি ধারণ করে বলেও পরিচিত কারণ তারা বিভিন্ন ধরণের ক্যান্সার, বিশেষত ফুসফুসের ক্যান্সার হতে পারে। মশার কয়েলগুলি কাশি এবং ছত্রাকের একটি বড় কারণ হতে পারে কারণ এর অনেক ব্যবহারকারী তার ধোঁয়া থেকে বাতাসে শ্বাস নিতে ঝুঁকছেন।
এটি ত্বকের জ্বালা এবং গলা অন্যান্য অস্বস্তির একটি বড় কারণও হতে পারে।
0 টি ভোট
করেছেন (9,000 পয়েন্ট)
মশার যন্ত্রণায় সকলেরই প্রায় নাজেহাল অবস্থা। আর এ মশার অত্যাচার থেকে বাঁচতে কয়েল ব্যবহার করা হয়। কিন্তু আপনি জানেন কি? একটা মশার কয়েল থেকে যে পরিমাণ ধোঁয়া নির্গত হয় তা ১০০টি সিগারেটের সমান ক্ষতিকর। কয়েলের সঙ্গে এলেথ্রিন ব্যবহার করা হয়। অথচ সর্বোচ্চ কী পরিমাণ এলেথ্রিন ব্যবহার করা হয়েছে তার উল্লেখ থাকে না। এলেথ্রিন থাকলেও তা সাবধানতার সঙ্গে ব্যবহার করতে হবে। শিশুদের নাগালের বাইরে রাখতে হবে। বৃদ্ধদের জন্যও এটা দীর্ঘক্ষণ ব্যবহার করা ক্ষতিকর। সাধারণভাবে প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য দীর্ঘক্ষণ কয়েল ব্যবহার করা ঠিক নয়। এটা শ্বাস-প্রশ্বাস, কিডনি ও লিভারের জন্য ক্ষতিকর।

এছাড়া কয়েলের ক্ষতিকর প্রভাবে গলা শুকিয়ে যাওয়া, মাথা ঘুরানো, বমিবমি ভাব, শ্বাস নিতে কষ্ট হওয়া, দম বন্ধ হয়ে আসার অনুভূতি হতে পারে। কয়েল তৈরিতে যে কাঠের গুঁড়ো ও নারকেলের মালার গুঁড়ো ব্যবহার করা হয়, তার ধোঁয়া এতোই সূক্ষ্ম যে তা সহজেই শ্বাসনালী ও ফুসফুসের বায়ুথলির মধ্যে পৌঁছে সেখানে জমা হতে পারে। আর খুব সূক্ষ্ম হওয়ার জন্য কণাগুলো বাতাসেও কয়েকদিন ভাসমান অবস্থায় থাকে। অর্থাৎ, মশার কয়েল নিভে যাওয়ার পরেও ঘরে অবস্থানকারী মানুষের শ্বাসনালীতে কয়েলের ধোঁয়ার কণা ঢুকতে পারে। এর ফলে ফুসফুসের বায়ুথলির কণায় রক্ত জমে যাওয়া থেকে নানা ক্ষতি হতে পারে। বিশেষ করে আপনার যদি শ্বাসকষ্ট বা এলার্জির সমস্যা থাকে। সূত্র- ডেইলি বাংলাদেশ
0 টি ভোট
করেছেন (141,850 পয়েন্ট)
কয়েলের ধোঁয়া আবদ্ধ স্থানে মশা তাড়াতে ভালো কাজ করে। কিন্তু মশা তাড়ানোর কয়েলের ধোঁয়ায় বিদ্যমান বিবিধ বিষাক্ত জৈব ও অজৈব বাষ্প, প্রচুর পরিমাণে সূক্ষ্ম ও অতিসূক্ষ্ম ভাসমান কণা (পার্টিকুলেট ম্যাটারস ২.৫) এবং কয়েলের দহনে উৎপন্ন ফরম্যালডিহাইড, বেনজিন, বেনজোপাইরিন, বেনজোফ্লিউরোঅ্যানথিন ইত্যাদি বিষাক্ত ও উদ্বায়ী যৌগ মশা তাড়ানোর পাশাপাশি মারাত্মক ক্ষতি করে মানুষেরও, বিশেষত শিশু ও কিশোর কিশোরীদের। এসব যৌগের অনেকগুলো মানুষের সম্ভাব্য ক্যানসার সৃষ্টিকারী পদার্থ হিসেবে পরিচিত। একটি মশার কয়েল প্রায় ৮ ঘণ্টা জ্বলে। এ রকম মশার কয়েল জ্বেলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা, দিনের পর দিন বিষাক্ত ধোঁয়ায় শ্বাস নিতে থাকলে শ্বাসকষ্টজনিত শ্বাসতন্ত্রের নানা রোগ সহ ফুসফুসের ক্যানসার হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটাই বেড়ে যায়। একটি মশার কয়েল জ্বালালে যে পরিমাণ ফরম্যালডিহাইড জাতীয় বিষাক্ত জৈব বাষ্প তৈরি হয়, তা প্রায় ৫০টি সিগারেট জ্বালানোর সমান। এ ছাড়া ২.৫ মাইক্রোমিটারের কম সূক্ষ্ম ও অতিসূক্ষ্ম ভাসমান কণা আমাদের নিশ্বাসের সঙ্গে ফুসফুসের একেবারে ভেতর পর্যন্ত পৌঁছে যেতে পারে। সবচেয়ে সূক্ষ্ম কণাগুলো রক্তেও মিশে যেতে পারে। মানুষের স্বাস্থ্যের ওপর এই কণাগুলোর প্রভাব মারাত্মক। এগুলো শুধু যে ফুসফুস, হার্ট, মস্তিষ্ক ও রক্ত সংবহনতন্ত্রের ক্ষতি করে তাই নয়; দীর্ঘমেয়াদি ফল হিসেবে ক্যানসারের সম্ভাবনাও বাড়িয়ে তোলে। একটি মশা তাড়ানোর কয়েল জ্বালালে যে পরিমাণ সূক্ষ্ম কণা উৎপন্ন হয় তা প্রায় ১০০টি সিগারেট জ্বালানোর সমতুল্য।

সম্পর্কিত প্রশ্নগুচ্ছ

+5 টি ভোট
2 টি উত্তর 362 বার দেখা হয়েছে
+1 টি ভোট
1 উত্তর 453 বার দেখা হয়েছে
+3 টি ভোট
1 উত্তর 402 বার দেখা হয়েছে
+9 টি ভোট
1 উত্তর 1,863 বার দেখা হয়েছে
+14 টি ভোট
1 উত্তর 306 বার দেখা হয়েছে

10,775 টি প্রশ্ন

18,456 টি উত্তর

4,742 টি মন্তব্য

265,567 জন সদস্য

39 জন অনলাইনে রয়েছে
0 জন সদস্য এবং 39 জন গেস্ট অনলাইনে
  1. Farhan Anjum

    140 পয়েন্ট

  2. Saif Sakib

    110 পয়েন্ট

  3. Tasfima Jannat

    110 পয়েন্ট

  4. DorothyGsell

    100 পয়েন্ট

  5. IsidroHigh46

    100 পয়েন্ট

বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় উন্মুক্ত বিজ্ঞান প্রশ্নোত্তর সাইট সায়েন্স বী QnA তে আপনাকে স্বাগতম। এখানে যে কেউ প্রশ্ন, উত্তর দিতে পারে। উত্তর গ্রহণের ক্ষেত্রে অবশ্যই একাধিক সোর্স যাচাই করে নিবেন। অনেকগুলো, প্রায় ২০০+ এর উপর অনুত্তরিত প্রশ্ন থাকায় নতুন প্রশ্ন না করার এবং অনুত্তরিত প্রশ্ন গুলোর উত্তর দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। প্রতিটি উত্তরের জন্য ৪০ পয়েন্ট, যে সবচেয়ে বেশি উত্তর দিবে সে ২০০ পয়েন্ট বোনাস পাবে।


Science-bee-qna

সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয় ট্যাগসমূহ

মানুষ পানি ঘুম পদার্থ - জীববিজ্ঞান চোখ এইচএসসি-উদ্ভিদবিজ্ঞান এইচএসসি-প্রাণীবিজ্ঞান পৃথিবী রোগ রাসায়নিক শরীর #ask রক্ত আলো মোবাইল ক্ষতি চুল কী #science চিকিৎসা পদার্থবিজ্ঞান সূর্য প্রযুক্তি স্বাস্থ্য মাথা প্রাণী গণিত বৈজ্ঞানিক মহাকাশ পার্থক্য #biology এইচএসসি-আইসিটি বিজ্ঞান খাওয়া গরম শীতকাল #জানতে কেন ডিম চাঁদ বৃষ্টি কারণ কাজ বিদ্যুৎ রাত রং উপকারিতা শক্তি লাল আগুন সাপ মনোবিজ্ঞান গাছ খাবার সাদা আবিষ্কার দুধ উপায় হাত মশা শব্দ মাছ ঠাণ্ডা মস্তিষ্ক ব্যাথা ভয় বাতাস স্বপ্ন তাপমাত্রা গ্রহ রসায়ন উদ্ভিদ কালো পা কি বিস্তারিত রঙ মন পাখি গ্যাস সমস্যা মেয়ে বৈশিষ্ট্য হলুদ বাচ্চা সময় ব্যথা মৃত্যু চার্জ অক্সিজেন ভাইরাস আকাশ গতি দাঁত কান্না আম হরমোন বাংলাদেশ
...