কয়েলের ধোঁয়া আবদ্ধ স্থানে মশা তাড়াতে ভালো কাজ করে। কিন্তু মশা তাড়ানোর কয়েলের ধোঁয়ায় বিদ্যমান বিবিধ বিষাক্ত জৈব ও অজৈব বাষ্প, প্রচুর পরিমাণে সূক্ষ্ম ও অতিসূক্ষ্ম ভাসমান কণা (পার্টিকুলেট ম্যাটারস ২.৫) এবং কয়েলের দহনে উৎপন্ন ফরম্যালডিহাইড, বেনজিন, বেনজোপাইরিন, বেনজোফ্লিউরোঅ্যানথিন ইত্যাদি বিষাক্ত ও উদ্বায়ী যৌগ মশা তাড়ানোর পাশাপাশি মারাত্মক ক্ষতি করে মানুষেরও, বিশেষত শিশু ও কিশোর কিশোরীদের। এসব যৌগের অনেকগুলো মানুষের সম্ভাব্য ক্যানসার সৃষ্টিকারী পদার্থ হিসেবে পরিচিত। একটি মশার কয়েল প্রায় ৮ ঘণ্টা জ্বলে। এ রকম মশার কয়েল জ্বেলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা, দিনের পর দিন বিষাক্ত ধোঁয়ায় শ্বাস নিতে থাকলে শ্বাসকষ্টজনিত শ্বাসতন্ত্রের নানা রোগ সহ ফুসফুসের ক্যানসার হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটাই বেড়ে যায়। একটি মশার কয়েল জ্বালালে যে পরিমাণ ফরম্যালডিহাইড জাতীয় বিষাক্ত জৈব বাষ্প তৈরি হয়, তা প্রায় ৫০টি সিগারেট জ্বালানোর সমান। এ ছাড়া ২.৫ মাইক্রোমিটারের কম সূক্ষ্ম ও অতিসূক্ষ্ম ভাসমান কণা আমাদের নিশ্বাসের সঙ্গে ফুসফুসের একেবারে ভেতর পর্যন্ত পৌঁছে যেতে পারে। সবচেয়ে সূক্ষ্ম কণাগুলো রক্তেও মিশে যেতে পারে। মানুষের স্বাস্থ্যের ওপর এই কণাগুলোর প্রভাব মারাত্মক। এগুলো শুধু যে ফুসফুস, হার্ট, মস্তিষ্ক ও রক্ত সংবহনতন্ত্রের ক্ষতি করে তাই নয়; দীর্ঘমেয়াদি ফল হিসেবে ক্যানসারের সম্ভাবনাও বাড়িয়ে তোলে। একটি মশা তাড়ানোর কয়েল জ্বালালে যে পরিমাণ সূক্ষ্ম কণা উৎপন্ন হয় তা প্রায় ১০০টি সিগারেট জ্বালানোর সমতুল্য।