ইলেকট্রিক ইল দিয়ে কী কারেন্ট উৎপাদন করা সম্ভব? - ScienceBee প্রশ্নোত্তর

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রশ্নোত্তর দুনিয়ায় আপনাকে স্বাগতম! প্রশ্ন-উত্তর দিয়ে জিতে নিন পুরস্কার, বিস্তারিত এখানে দেখুন।

+15 টি ভোট
7,954 বার দেখা হয়েছে
"পদার্থবিজ্ঞান" বিভাগে করেছেন (10,910 পয়েন্ট)

3 উত্তর

+1 টি ভোট
করেছেন (10,910 পয়েন্ট)
Nishat Tasnim- ইলেক্ট্রিক ইলের পেটে তিন জোড়া বিদ্যুত্‍ উত্‍পন্নকারী অঙ্গ রয়েছে। তন্মধ্যে প্রধান অঙ্গ হচ্ছে হান্টার'স (Hunter's) এবং স্যাচ'স (Sachs') অঙ্গ। স্যাচ'স অঙ্গের চেয়ে হান্টার'স বা শিকারী অঙ্গ থেকে অধিক বিদ্যুত্‍ উত্‍পন্ন হয়। আলাদাভাবে হান্টার'স অঙ্গ ৬৫০ ভোল্ট ও স্যাচ'স অঙ্গ মাত্র ১০ ভোল্ট পরিমাণ বিদ্যুত্‍ উত্‍পন্ন করতে পারে। এই ১০ ভোল্ট বিদ্যুত্‍ যোগাযোগের জন্য, প্রজননের জন্য বিপরীত লিঙ্গকে খুঁজতে ও শিকার সনাক্তকরণে ব্যবহৃত হয়। এই অঙ্গগুলো হাজার হাজার ইলেকট্রিক সেল বা বৈদ্যুতিক কোষ দিয়ে তৈরি। প্রতিটি কোষ ০.১৫ ভোল্ট বিদ্যুত্‍ উত্‍পন্ন করে। কোষগুলো একটির সাথে আরেকটি শ্রেণী সংযোগে যুক্ত থাকে। কোষগুলো থেকে এরা টানা এক ঘন্টা পর্যন্ত বিরতিহীন বিদ্যুত্‍ উত্‍পন্ন করতে সক্ষম।

ঈলের বৈদ্যুতিক কোষগুলো সারিবদ্ধভাবে স্তুপাকারে বিন্যস্ত থাকে। কোষের সারিগুলোর মাঝে রোধক থাকে। প্রতিটি স্তূপ আলাদা আলাদা ব্যাটারির ন্যায় কাজ করে। আলাদা আলাদা কোষের স্তুপ একত্রে সক্রিয় হয়ে প্রয়োজনীয় পরিমাণ বিদ্যুত্‍ উত্‍পন্ন করে।

ঈলের বৈদ্যুতিক কোষের একটি প্রান্ত মসৃণ ও অপর প্রান্তটি অমসৃণ বা ভাঁজ ভাঁজ থাকে। যখন স্নায়ুতন্ত্রের মাধ্যমে কোষে সংকেত পৌঁছায় তখন মসৃণ প্রান্তে থাকা বিশেষ ধরনের ছিদ্রগুলো খুলে যায়। ফলে ধনাত্মক আয়ন দ্রুত কোষের ভিতর প্রবেশ করে। তখন ক্ষণস্থায়ীভাবে ০.০৬৫ ভোল্ট আধান উত্‍পন্ন হয়। এরপর কোষের ভিতর ঋণাত্মক ও বাইরে ধনাত্মক আধান থাকায় অমসৃণ প্রান্তে ক্ষণস্থায়ীভাবে ০.০৮৫ ভোল্টের পার্থক্য সৃষ্টি হয়। ফলশ্রুতিতে মসৃণ প্রান্তেও ০.০৬৫ ভোল্ট আধান উত্‍পন্ন হয়। এভাবে প্রতিটি কোষের মসৃণ ও অমসৃণ প্রান্ত মিলে ০.১৫ ভোল্ট বিদ্যুত্‍ উত্‍পন্ন করে।

পরিষ্কার জলের বিদ্যুত্‍ পরিবাহিতা খুবই কম। তাই বৈদ্যুতিক ঈল যেখানে বৈদ্যুতিক ক্ষেত্র তৈরি করবে সেখানকার জলে লবণ ও অন্যান্য খনিজ উপাদান থাকতে হয়। বিদ্যুত্‍ উত্‍পাদনের জন্য ঈল মস্তিষ্ক থেকে স্নায়ুর মাধ্যমে বৈদ্যুতিক কোষগুলোতে সংকেত প্রেরণ করে। তখন মাছের মাথার দিক থেকে জলের মাধ্যমে লেজের দিকে বিদ্যুত্‍ প্রবাহিত হয়। এ সময়ে মাছের চারদিকে বৈদ্যুতিক ক্ষেত্র তৈরি হয়।

ইলেকট্রিক ইলের হান্টার'স (Hunter's) এবং স্যাচ'স (Sach's) অঙ্গ থেকে সহজেই কয়েকশত হার্জ বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব।
+1 টি ভোট
করেছেন (71,300 পয়েন্ট)
এটা সম্ভব নাহ।  কারণ ইলেক্ট্রিসিটি হিসাব করা হয় কিলোওয়াটআওয়ার (kwh) বা ইউনিট এ। এক্ষেত্রে ইউনিট হইল ভোল্টেজ,  কারেন্ট আর সময় এর গুনফল।

এখন ঈল এর তৈরী করা বিদ্যুতের ভোল্টেজ বেশি হইলেও এর কারেন্টের পরিমান অত বেশি থাকেনা, আর এর ডিউরেশন ও অনেক কম সময় থাকে৷  যার ফলে মোট উৎপন্ন বিদ্যুৎ অনেক কম হয় হিসাব করলে।
আর ঈল তো সবসময় এটা তৈরী ও করেনা।  তাই দেখা যাবে উৎপাদন খরচ আরো বেশি পড়ে যাবে এভাবে চিন্তা করলে।

 

@Mujahidul Alom Akash
0 টি ভোট
করেছেন (700 পয়েন্ট)

ইলেকট্রিক ঈল এর বৈজ্ঞানিক নাম Electrophorus electricus। আসলে এটি একটি মাছ, কিন্তু এটি সাপের মতো দেখতে। এর শরীরে বিদ্যুৎ উৎপন্ন করার ক্ষমতা আছে বিশেষ ধরনের কোষের মাধ্যমে, যাকে বলা হয় ইলেকট্রোসাইট (electrocyte)। এই ইলেকট্রোসাইটগুলো একত্রে কাজ করে একটা জৈব-বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যবস্থা তৈরি করে, যা অনেকটা ব্যাটারির মতো কাজ করে।

১. শারীরবৃত্তীয় গঠন

ইলেকট্রিক ঈলের শরীরের প্রায় ৮০% অংশ জুড়ে থাকে তিনটি বিশেষ অঙ্গ: মেইন অর্গান (Main Organ), হান্টার’স অর্গান (Hunter’s Organ) এবং স্যাক্স অর্গান (Sachs Organ)। এই অঙ্গগুলোতে হাজার হাজার ইলেকট্রোসাইট থাকে, যেগুলো সিরিজে সাজানো। একটা ইলেকট্রোসাইট নিজে থেকে খুব কম ভোল্টেজ তৈরি করে (প্রায় ০.১৫ ভোল্ট), কিন্তু যখন হাজার হাজার ইলেকট্রোসাইট একসঙ্গে কাজ করে, তখন এরা ৬০০-৮০০ ভোল্ট পর্যন্ত বিদ্যুৎ তৈরি করতে পারে। এই ভোল্টেজ শিকার ধরতে এবং শত্রু থেকে বাঁচতে ব্যবহৃত হয়।

২. ইলেকট্রোসাইটের কাজের প্রক্রিয়া

ইলেকট্রোসাইট হলো বিশেষ ধরনের পেশি কোষ, যেগুলো বিবর্তনের মাধ্যমে বিদ্যুৎ তৈরির জন্য রূপান্তরিত হয়েছে। এদের কাজ অনেকটা নিউরন বা স্নায়ুকোষের মতো, কিন্তু উদ্দেশ্য ভিন্ন। প্রতিটি ইলেকট্রোসাইটের দুটি দিক থাকে: একটা স্নায়ু দ্বারা নিয়ন্ত্রিত (নার্ভ-ইনারভেটেড) এবং অন্যটা না। এখানে বিদ্যুৎ তৈরির জন্য যে প্রক্রিয়া কাজ করে, তা হলো মেমব্রেন পটেনশিয়াল (Membrane Potential) এবং আয়ন ট্রান্সপোর্ট (Ion Transport)।

  • বিশ্রামের অবস্থা (Resting State): সাধারণ অবস্থায়, ইলেকট্রোসাইটের ভেতরে পটাশিয়াম আয়ন (K⁺) বেশি থাকে, আর বাইরে সোডিয়াম আয়ন (Na⁺) বেশি থাকে। এই আয়ন গ্রেডিয়েন্ট মেমব্রেনের ওপর একটা সম্ভাব্য তফাৎ (potential difference) তৈরি করে, যাকে বলে রেস্টিং মেমব্রেন পটেনশিয়াল (প্রায় -৭০ mV)।

  • অ্যাকশন পটেনশিয়াল (Action Potential): যখন ঈলের স্নায়ুতন্ত্র থেকে সংকেত আসে, তখন ইলেকট্রোসাইটের মেমব্রেনে থাকা ভোল্টেজ-গেটেড সোডিয়াম চ্যানেল (Voltage-gated Na⁺ channels) খুলে যায়। Na⁺ আয়ন কোষের ভেতরে ঢুকে পড়ে, ফলে মেমব্রেন পটেনশিয়াল ইতিবাচক হয়ে যায় (প্রায় +৪০ mV)। এরপর পটাশিয়াম চ্যানেল (K⁺ channels) খুলে K⁺ বাইরে বেরিয়ে যায়, যাতে পটেনশিয়াল আবার শূন্যের কাছে ফিরে আসে।

  • সিরিজে সংযোগ: একটা ইলেকট্রোসাইটের এই ভোল্টেজ তফাৎ খুব কম (০.১৫ V), কিন্তু হাজার হাজার ইলেকট্রোসাইট যখন সিরিজে সংযুক্ত হয়, তখন ভোল্টেজ যোগ হয়ে বড় হয়। এটাই বিদ্যুৎ তৈরির মূল কারণ।

৩. রাসায়নিক ও জৈবিক ভিত্তি

এই প্রক্রিয়ার জন্য শক্তি আসে এটিপি (ATP) থেকে। Na⁺/K⁺ পাম্প (Sodium-Potassium Pump) নামে একটি প্রোটিন আয়ন গ্রেডিয়েন্ট বজায় রাখে। এটি সক্রিয় পরিবহন (active transport) প্রক্রিয়ায় ATP ভেঙে Na⁺ বাইরে এবং K⁺ ভেতরে পাঠায়। এই শক্তি ব্যয়ের ফলে ইলেকট্রোসাইট প্রতিবার বিদ্যুৎ তৈরির জন্য প্রস্তুত থাকে।

৪. ব্যবহার ও নিয়ন্ত্রণ

ইলেকট্রিক ঈল এই বিদ্যুৎ দুইভাবে ব্যবহার করে:

  • শিকার ধরা: উচ্চ ভোল্টেজ (৬০০-৮০০ V) দিয়ে শিকারকে অজ্ঞান বা মেরে ফেলে।

  • নেভিগেশন: কম ভোল্টেজ (১০ V) দিয়ে ইলেকট্রোলোকেশন (electrolocation) করে, যাতে পানির মধ্যে বস্তু শনাক্ত করতে পারে।

বিদ্যুৎ মানে চার্জের প্রবাহ। এখানে ইলেকট্রোসাইটগুলো সিরিজে থাকায় ভোল্টেজ (V = IR) বাড়ে, আর পানির মাধ্যমে কারেন্ট প্রবাহিত হয়। ঈলের শরীরে প্রায় ২-১০ অ্যাম্পিয়ার কারেন্ট তৈরি হতে পারে, যা মারাত্মক। এটি একটা জৈব-বৈদ্যুতিক জেনারেটরের মতো কাজ করে।

সম্পর্কিত প্রশ্নগুচ্ছ

+5 টি ভোট
1 উত্তর 631 বার দেখা হয়েছে
+10 টি ভোট
2 টি উত্তর 873 বার দেখা হয়েছে
0 টি ভোট
1 উত্তর 248 বার দেখা হয়েছে

10,852 টি প্রশ্ন

18,553 টি উত্তর

4,746 টি মন্তব্য

854,812 জন সদস্য

75 জন অনলাইনে রয়েছে
0 জন সদস্য এবং 75 জন গেস্ট অনলাইনে
  1. xocdia88aeorg

    100 পয়েন্ট

  2. pu88now

    100 পয়েন্ট

  3. Ggpokerrrcom1

    100 পয়েন্ট

  4. n8gamesorg

    100 পয়েন্ট

  5. hbbet2pro

    100 পয়েন্ট

বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় উন্মুক্ত বিজ্ঞান প্রশ্নোত্তর সাইট সায়েন্স বী QnA তে আপনাকে স্বাগতম। এখানে যে কেউ প্রশ্ন, উত্তর দিতে পারে। উত্তর গ্রহণের ক্ষেত্রে অবশ্যই একাধিক সোর্স যাচাই করে নিবেন। অনেকগুলো, প্রায় ২০০+ এর উপর অনুত্তরিত প্রশ্ন থাকায় নতুন প্রশ্ন না করার এবং অনুত্তরিত প্রশ্ন গুলোর উত্তর দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। প্রতিটি উত্তরের জন্য ৪০ পয়েন্ট, যে সবচেয়ে বেশি উত্তর দিবে সে ২০০ পয়েন্ট বোনাস পাবে।


Science-bee-qna

সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয় ট্যাগসমূহ

মানুষ পানি ঘুম পদার্থ - জীববিজ্ঞান চোখ পৃথিবী এইচএসসি-উদ্ভিদবিজ্ঞান এইচএসসি-প্রাণীবিজ্ঞান রোগ রাসায়নিক শরীর #ask রক্ত আলো মোবাইল #science ক্ষতি চুল চিকিৎসা কী পদার্থবিজ্ঞান সূর্য প্রযুক্তি স্বাস্থ্য মাথা প্রাণী গণিত মহাকাশ বৈজ্ঞানিক #biology পার্থক্য এইচএসসি-আইসিটি বিজ্ঞান গরম খাওয়া #জানতে শীতকাল ডিম বৃষ্টি চাঁদ কেন কারণ কাজ বিদ্যুৎ রং রাত শক্তি উপকারিতা সাপ লাল মনোবিজ্ঞান আগুন গাছ খাবার সাদা মস্তিষ্ক আবিষ্কার শব্দ দুধ উপায় হাত মাছ মশা ঠাণ্ডা ব্যাথা ভয় বাতাস স্বপ্ন তাপমাত্রা গ্রহ রসায়ন কালো উদ্ভিদ পা মন কি বিস্তারিত রঙ পাখি গ্যাস সমস্যা বাচ্চা মেয়ে বৈশিষ্ট্য মৃত্যু হলুদ বাংলাদেশ সময় ব্যথা চার্জ অক্সিজেন ভাইরাস আকাশ গতি কান্না দাঁত বিড়াল আম
...