কানে হঠাৎ কিছু ঢুকে গেলে করণীয় কী? - ScienceBee প্রশ্নোত্তর

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রশ্নোত্তর দুনিয়ায় আপনাকে স্বাগতম! প্রশ্ন-উত্তর দিয়ে জিতে নিন পুরস্কার, বিস্তারিত এখানে দেখুন।

+1 টি ভোট
455 বার দেখা হয়েছে
"স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা" বিভাগে করেছেন (28,320 পয়েন্ট)

2 উত্তর

0 টি ভোট
করেছেন (28,320 পয়েন্ট)
শরীরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হচ্ছে কান। কোনো কিছু শোনার জন্য অঙ্গটি আমাদের যেমন সাহায্য করে; তেমনই পরিপার্শ্বের সাথে ভারসাম্য রক্ষাও কানের একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ। অসাবধানতাবশত কিংবা কান চুলকাতে গিয়ে কাঠি ভেঙে কানের মধ্যে ঢুকে যাওয়া বেশ সাধারণ একটি ঘটনা। আবার পোকামাকড়, মশা-মাছি প্রভৃতিও কানের মধ্যে দুর্ঘটনাক্রমে ঢুকতে পারে। বিশেষ করে শিশুদের ক্ষেত্রে এ ধরনের ঘটনা বেশি ঘটে।

 এ সমস্যা হলে কানে খোঁচাখুঁচির কারণে বিপদ আরও জটিল থেকে জটিলতর হয়ে উঠতে পারে। শিশুদের ক্ষেত্রে ছোটো ছোটো কোনো জিনিস নিয়ে খেলার সময় নাক, কান বা মুখের মধ্যে ঢুকিয়ে দেওয়ার একটি সহজাত প্রবণতা রয়েছে। বড়দেরও অভ্যাস আছে কোনো কিছু (যেমন- কটনবাড, মুরগির পালক, ম্যাচের কাঠি ইত্যাদি) দিয়ে কারণে কিংবা অকারণে কান খোঁচানোর। এতে খোঁচানোর সময় কাঠি ভেঙে বা কটনবাডের অংশ কানে রয়ে যেতে পারে। তাই এসব বিষয়ে সাবধান হওয়া উচিত। পাশাপাশি এরকম ঘটনায় চিকিৎসকের পরামর্শ নিতেও ভুল করবেন না।

 কানে কটনবাড বা তুলার অংশ, ম্যাচের কাঠি, পুঁতির দানা, বল বিয়ারিং, পেন্সিলের শিস, ছোটো রাবার, কাগজ কিংবা ফোমের টুকরা, বোতাম, পাথরের ছোটো কুচি, ছোটোখাটো খেলনার ছোটো ছোটো অংশ, পাখি বা মুরগির পালক, ফলের বীজ, শস্যদানা যেমন- ধান, চাল, ফলের বীজ, মুড়ি, চিঁড়া ইত্যাদি ঢুকলে চিকিৎসকের কাছে যেতে সামান্য দেরি হলেও অসুবিধা নেই।

 তবে মশা-মাছি, তেলাপোকা, পিঁপড়া বা অন্য কোনো জীব কানে ঢুকে পড়লে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে। তা না হলে কানে ব্যথা ও অস্বস্তি হতেই থাকবে। কানে কোনো কিছু হঠাৎ ঢুকে গেলে ব্যথা ও অস্বস্তির পাশাপাশি আক্রান্ত ব্যক্তি কানে কম শুনতে পাওয়া, মাথা ভার-ভার অনুভূত হওয়া, বিরক্তি এমনকি মানসিক ভীতির মতো উপসর্গে ভুগতে পারেন। এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত জিনিস দীর্ঘদিন কানের ভেতরে থাকলে বহিঃকর্ণ, টিম্প্যানিক মেমব্রেন কিংবা মধ্যকর্ণে প্রদাহ হওয়াটাও অস্বাভাবিক কিছু নয়। এরকম ক্ষেত্রে কান থেকে পুঁজ পড়ে ও দুর্গন্ধ তৈরি হয়।

 কানের ভেতরে পোকামাকড় ঢুকলে তা বের হওয়ার জন্য ছটফট করে, কানের পর্দা কামড়ে ধরে ও হাঁটাচলা করে। কানে মশা-মাছি, তেলাপোকা, পিঁপড়া বা অন্য কোনো জীব ঢুকলে কানের ছিদ্রের সামনে উজ্জ্বল আলোর টর্চলাইট ধরুন। জীবন্ত পোকামাকড় আলোর প্রতি বেশ সংবেদনশীল। এজন্য দুর্ঘটনাবশত কানে ঢুকে যাওয়া ওইসব পোকামাকড় আলোর প্রতি আকৃষ্ট হয়ে কান থেকে বের হয়ে আসতে পারে। জীবিত এসব পোকামাকড় জীবিত অবস্থায় কান থেকে কোনো ধরনের যন্ত্রের সাহায্যে বের করা উচিত নয়, কারণ অনেকসময় এতে সমস্যা আরও বেড়ে যায়। যেমন এসব অবাঞ্ছিত পোকামাকড় তখন কানের ভেতরে আরও বেশি নড়াচড়া শুরু করে এবং ফলশ্রুতিতে ব্যথা আরও তীব্র হয়ে ওঠে৷ তাই আলোর সাহায্যে ওই পতঙ্গকে কানের বাইরে আনতে সমর্থ না হলে জীবিত পোকামাকড়কে প্রথমে মেরে ফেলতে হবে।

 এজন্য কানে পোকা ঢুকলে অলিভ ওয়েল বা নারিকেল তেলের কয়েক ফোঁটা ধীরে ধীরে কানের মধ্যে দিতে পারেন। এতে ওই জীবন্ত পিঁপড়া বা পোকামাকড় কানের ভেতরেই মরে যাবে, ফলে ব্যথা বা অস্বস্তিও কমে যাবে। এরপর আক্রান্ত ব্যক্তিকে নিকটস্থ উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্র কিংবা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অথবা বিশেষজ্ঞ নাক-কান-গলা চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাবেন। কানের ভেতরে ঢুকে যাওয়া বস্তু এবং তার অবস্থান ও প্রকৃতি সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ার পর চিকিৎসক বিভিন্ন যন্ত্র ব্যবহার করে সেই বস্তুটিকে কানের বাইরে বের করে আনবেন।

 কানে জড় পদার্থ ঢুকলে সেটিকে বের করার জন্য অহেতুক কোনো চেষ্টা না করে সরাসরি চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। কারণ বাসায় কানে খোঁচাখুঁচি কিংবা অপচিকিৎসার ফলে কানের পর্দায় ছিদ্র হয়ে যেতে পারে এবং এতে আক্রান্ত ব্যক্তি চূড়ান্তভাবে শ্রবণক্ষমতাও হারিয়ে ফেলতে পারেন। অল্পবয়সী শিশুদের ক্ষেত্রে বাচ্চারা ভয়ে কান্না বা নড়াচড়া করলে এবং অসহযোগিতা করলে কানের ভেতরে ঢুকে যাওয়া বস্তু জোরপূর্বক বের করার চেষ্টা না করে হাসপাতালে নিয়ে শিশুকে সম্পূর্ণ অজ্ঞান করার মাধ্যমে ওই বস্তু শিশুর কান থেকে বের করার প্রয়োজন হতে পারে।

 কানে দুর্ঘটনাবশত হঠাৎ ঢুকে যাওয়া এসব অবাঞ্ছিত জিনিস সময়মতো বের না করলে বা অদক্ষ হাতে চেষ্টা করার ফলে নানামুখী জটিলতা তৈরি হতে পারে, যেমন- বহিঃকর্ণে আঘাত লাগা এবং তা থেকে রক্তক্ষরণ হওয়া, কানের পর্দা ফেটে মধ্যকর্ণের ভেতরে থাকা ছোট অস্থিগুলোতে আঘাত লাগা, সাময়িক ও দীর্ঘ মেয়াদে শ্রবণশক্তি হ্রাস পাওয়া ইত্যাদি।

 মানসম্পন্ন কোম্পানির তৈরি শিশুদের খেলনার প্যাকেটের গায়ে বয়সসীমা দেওয়া থাকে। অনেক ক্ষেত্রেই এসব খেলনার প্যাকেটে আরও লেখা থাকে যে, খেলনাটিতে ছোটো যন্ত্রাংশ আছে এবং তা দুই-তিন বছরের কম বয়সী শিশুদের ব্যবহারের জন্য নয়। বয়স্কদের উচিত শিশুদের এসব খেলনার ব্যাপারে সচেতন থাকা এবং খেলনা দিয়ে খেলার সময় শিশুকে নজরদারিতে রাখা। সেইসাথে অযথা যেকোনো কিছু দিয়ে কান খোঁচানো থেকেও বড়-ছোটো সবারই বিরত থাকা উচিত।

লেখক: এমবিবিএস (ঢামেক), বিসিএস (স্বাস্থ্য), মেডিকেল অফিসার, উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্র, ডুমুরিয়া, খুলনা।
0 টি ভোট
করেছেন (9,000 পয়েন্ট)
১. কানে মশা-মাছি, তেলাপোকা, পিঁপড়া বা অন্য কোনো জীব ঢুকলে উচ্চ আলোর টর্চলাইট ধরুন। এতে জীবন্ত পোকামাকড় আলোর প্রতি সংবেদনশীল হওয়ায় বের হয়ে আসতে পারে।

 

২. কানে পোকা ঢুকলে প্রথমেই অলিভ ওয়েল বা নারিকেল তেল ধীরে ধীরে কয়েক ফোঁটা কানের মধ্যে দিন। পিঁপড়া বা পোকামাকড় মরে যাবে, ফলে ব্যথা বা অস্বস্তি কমে যাবে।

 

এরপর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অথবা নাক-কান-গলা চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাবেন। কানের ভেতরে ঢুকে যাওয়া বস্তু এবং তার অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ার পর চিকিৎসকরা বিভিন্ন যন্ত্র ব্যবহার করে সেই বস্তুটিকে বাইরে বের করে আনবেন।

 

৩. কানে জড় পদার্থ ঢুকলে সেটিকে বের করার জন্য কোনো ধরনের চেষ্টা না করে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। খোঁচাখুঁচির ফলে কানের পর্দা ছিদ্র হয়ে যেতে পারে।

 

 

 

লেখক:

ডা. মো. আব্দুল হাফিজ (শাফী)

বিসিএস (স্বাস্থ্য)

নাক-কান-গলা বিভাগ

বিএসএমএমইউ (প্রেষণে), ঢাকা।

সম্পর্কিত প্রশ্নগুচ্ছ

+1 টি ভোট
2 টি উত্তর 777 বার দেখা হয়েছে
18 এপ্রিল 2021 "স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন Ubaeid (28,320 পয়েন্ট)
0 টি ভোট
2 টি উত্তর 1,348 বার দেখা হয়েছে
0 টি ভোট
1 উত্তর 208 বার দেখা হয়েছে

10,775 টি প্রশ্ন

18,456 টি উত্তর

4,742 টি মন্তব্য

265,590 জন সদস্য

63 জন অনলাইনে রয়েছে
0 জন সদস্য এবং 63 জন গেস্ট অনলাইনে
  1. Farhan Anjum

    140 পয়েন্ট

  2. Saif Sakib

    110 পয়েন্ট

  3. Tasfima Jannat

    110 পয়েন্ট

  4. LorrieDennin

    100 পয়েন্ট

  5. OctavioCastr

    100 পয়েন্ট

বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় উন্মুক্ত বিজ্ঞান প্রশ্নোত্তর সাইট সায়েন্স বী QnA তে আপনাকে স্বাগতম। এখানে যে কেউ প্রশ্ন, উত্তর দিতে পারে। উত্তর গ্রহণের ক্ষেত্রে অবশ্যই একাধিক সোর্স যাচাই করে নিবেন। অনেকগুলো, প্রায় ২০০+ এর উপর অনুত্তরিত প্রশ্ন থাকায় নতুন প্রশ্ন না করার এবং অনুত্তরিত প্রশ্ন গুলোর উত্তর দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। প্রতিটি উত্তরের জন্য ৪০ পয়েন্ট, যে সবচেয়ে বেশি উত্তর দিবে সে ২০০ পয়েন্ট বোনাস পাবে।


Science-bee-qna

সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয় ট্যাগসমূহ

মানুষ পানি ঘুম পদার্থ - জীববিজ্ঞান চোখ এইচএসসি-উদ্ভিদবিজ্ঞান এইচএসসি-প্রাণীবিজ্ঞান পৃথিবী রোগ রাসায়নিক শরীর #ask রক্ত আলো মোবাইল ক্ষতি চুল কী #science চিকিৎসা পদার্থবিজ্ঞান সূর্য প্রযুক্তি স্বাস্থ্য মাথা প্রাণী গণিত বৈজ্ঞানিক মহাকাশ পার্থক্য #biology এইচএসসি-আইসিটি বিজ্ঞান খাওয়া গরম শীতকাল #জানতে কেন ডিম চাঁদ বৃষ্টি কারণ কাজ বিদ্যুৎ রাত রং উপকারিতা শক্তি লাল আগুন সাপ মনোবিজ্ঞান গাছ খাবার সাদা আবিষ্কার দুধ উপায় হাত মশা শব্দ মাছ ঠাণ্ডা মস্তিষ্ক ব্যাথা ভয় বাতাস স্বপ্ন তাপমাত্রা গ্রহ রসায়ন উদ্ভিদ কালো পা কি বিস্তারিত রঙ মন পাখি গ্যাস সমস্যা মেয়ে বৈশিষ্ট্য হলুদ বাচ্চা সময় ব্যথা মৃত্যু চার্জ অক্সিজেন ভাইরাস আকাশ গতি দাঁত কান্না আম হরমোন বাংলাদেশ
...