তিমি আর ডলফিনের নাকি এমন সব বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যা মানুষের বৈশিষ্ট্যের সঙ্গে অনেকখানি মিলে যায়, বলে জানিয়েছেন মেরিন বিজ্ঞানীরা৷ অনেক দিন ধরে গবেষণা করে তাঁরা এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন৷
আত্মসচেতনতা এবং ব্যথা ও দুঃখ-দুর্দশা অনুভব করে তা কীভাবে কমানো যায়- এসব বিষয়ে মানুষ যেমন বুদ্ধি দিয়ে বিবেচনা করে কাজ করে থাকে, ঠিক তেমনভাবেই তিমি আর ডলফিনও প্রতিক্রিয়া জানাতে পারে, বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা৷ এছাড়া একজনের সঙ্গে আরেকজনের মিলেমিশে থাকার মানুষের যে স্বভাব, তাও অনেকটা পাওয়া যায় তিমি আর ডলফিনের স্বভাবে৷ অর্থাৎ আগে যেমন ধারণা করা হতো যে, তিমি আর ডলফিন অনেক স্তন্যপায়ী প্রাণীর চেয়ে বুদ্ধিমান, তারা আসলে তার চেয়েও বেশি বুদ্ধি রাখে বলে বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন।
আটলান্টার ইমোরি বিশ্ববিদ্যালয়ের নিউরোবায়োলজিস্ট লোরি মারিনো একটা ডলফিনের গায়ে চিহ্ন এঁকে দিয়ে তাকে আয়নার সামনে নিয়ে গেলে ডলফিনটি আয়নায় নিজের চেহারা আর ঐ চিহ্নটি দেখে যেভাবে প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে তাতে ঐ বিজ্ঞানী নিশ্চিত হন যে ডলফিনরা অনেক বেশি আত্মপরিচয়বোধসম্পন্ন৷
এছাড়া বিজ্ঞানীরা ‘ওরকা' নামের ডলফিন প্রজাতির একটি প্রাণীর কর্মকান্ড পর্যবেক্ষণ করে দেখেছেন, যে তারা খুব চতুরভাবে ‘লংলাইন'-এ বিদ্ধ মাছ চুরি করতে পারে৷ উল্লেখ্য, বাণিজ্যিকভাবে যারা মাছ শিকার করেন তারা অনেকেই মাছ মারার জন্য বর্শা জাতীয় এক ধরণের অস্ত্র ব্যবহার করেন৷ আর এটাই হলো লংলাইন৷
এদিকে মানুষের মস্তিস্কের আকারের পরই অবস্থান তিমি আর ডলফিনের মস্তিস্কের আকার৷ আর তাই তাদের বুদ্ধির পরিমাণও মানুষের কাছাকাছি৷
তিমি ও তিমি জাতীয় প্রাণীদের নিয়ে কাজ করে এমন একটি সংগঠন ইন্টারন্যাশনাল ওয়েলিং কমিশনের একটি সম্মেলন শুরু হতে যাচ্ছে আগামীকাল সোমবার৷ সপ্তাহব্যাপী এই সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হবে মরোক্কোর আগাডির শহরে৷ এই সম্মেলনে জাপান, নরওয়ে ও আইসল্যান্ডের একটি বিতর্কিত প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হতে পারে৷ আরও ১০ বছর যেন তারা তিমি শিকার করতে পারে সেই অনুমোদন চাইবে দেশগুলো৷ এছাড়া একটি ইন্টারন্যাশনাল ওয়াইল্ডলাইফ পলিসি' তৈরির ব্যাপারেও আলোচনা হবে সম্মেলনে৷ তিমি আর ডলফিন নিয়ে বিজ্ঞানীরা যে নতুন তথ্য পেয়েছেন সেগুলোকে ভিত্তি করে এবার ঐ নতুন পলিসি তৈরির ওপর জোর দিয়েছেন বিজ্ঞানীরা৷
‘হারপুন' গ্রেনেড ছাড়াও আরো কত মানবিকভাবে তিমি শিকার করা যায়, সে বিষয়েও সম্মেলনে আলোচনা হবে বলে জানা গেছে৷
DW