ফুলের পাঁপড়ির কোষে বিদ্যমান নানা রকম যৌগিক পদার্থের জটিল মিশ্রণে তৈরি হয় ফুলের গন্ধ। এসব পদার্থের অন্যতম হলো ফুলে বিদ্যমান নানা রকম অত্যাবশকীয় তেলের উপস্থিতি। এসব তেলের রয়েছে উদ্বায়ী স্বভাব ফলে তা ছড়িয়ে দেয় গন্ধ চারপাশের পরিবেশে। নানা রকম অত্যাবশ্যকীয় তেলের নানা রকম সংযোগ তৈরি করে ভিন্ন রকম কিন্তু একেক রকম ফুলের বৈশিষ্ট্য মন্ডিত গন্ধ। প্রায় সব সুগন্ধ প্রদায়ী ফুলে দেখা মেলে তেমন একটি উদ্বায়ী যৌগ হলো মিথাইল বেনজোয়েট। গরম আবহাওয়ায় সুগন্ধি ফুলের বেশি দেখা মেলে। আমাদের কোন কোন খাদ্য যখন চূলায় রান্না করা হয় তখন সুগন্ধি খাদ্যের গন্ধটা সহজেই চারপাশে ছড়িয়ে পরে। সুগন্ধি চালের পোলাও বা ক্ষীর-পায়েস রান্না হলে আশে পাশের দু’চার ঘরে এর সুগন্ধটা পৌঁছে যায় অবলিলায়। উষ্ণ আবহাওয়ায় সূর্যের আলো ফুলের পাঁপড়িকে পোড়ায় এবং এরই ফলশ্রুতিতে উদ্বায়ী তেল এক প্রকার গ্যাসে পরিণত হয়। এই গ্যাসীয় দশায় সবচেয়ে বেশি গন্ধ ছড়িয়ে দেয় ফুল। ফুলের পাঁপড়িতে বিদ্যমান তেলগুলো আসলে নানা রকম এসিড আর অ্যালকোহলের মিশ্রণ। এসব এসিড আর অ্যালকোহলের পরিমাণ, আর এদের অনুপাত তৈরি করে ভিন্ন রকম আর স্বতন্ত্র সুবাস। ফুলের বর্ণ বা আকৃতি একই রকম হলেও দু’টি ভিন্ন গাছের ফুলের গন্ধ কখনও তাই এক রকম হয় না। উদ্বায়ী পদার্থের প্রাচুর্য এবং এদের নানা রকম আন্তঃক্রিয়া তৈরি করে ভিন্ন রকম সুবাস।