মানুষ হাসে কেন?
~মানুষ নানা কারণে হাসে। কখনো মজার উপলক্ষ পেলে, কখনো আবার বিস্ময়কর কিছু ঘটে গেলে। কেউ আবার সুড়সুড়ি পেলেও হাসে। এমনকি কেউ কেউ ভয় পেয়ে, স্নায়ু চাপে থাকার ফলেও হাসে! মানুষ কেন হাসে—বিজ্ঞানীরা এখন পর্যন্ত এ ব্যাপারে সব কটি কারণ বের করতে পারেননি। এটা সত্যি যে, হাসি একে অপরের মধ্যে সম্পর্ক আরও ভালো করে।
~কিন্তু কেন?
~কথা বলার একটি উপায় হচ্ছে হাসি। আগের যুগের মানুষেরা যখন হাসত, তখনো হাসির মধ্যে ভাষা থাকত। সবকিছু ঠিক থাকলে হাসি দিয়েই তা প্রকাশ করত তারা। এখন যখন মানুষ হাসে, তখন অন্যরা ধরে নেয় তাদের মধ্যে বন্ধুত্বের সম্পর্ক রয়েছে। কিংবা কোনো একটি দলের সদস্য তারা। আমরা সবাই জানি, হাসি সংক্রামক। একজন হাসতে শুরু করলে অন্যরাও না হেসে পারে না।
~হাসলে কী হয়
~তা জানতে হাসিবিজ্ঞানীরা ব্যবহার করেছেন ইইজি, স্টেথোস্কোপ এবং স্ফিগমোম্যানোমিটার। সায়েন্স এবিসি ডটকম থেকে জানা যায়, হাসিতে প্রথমেই আমাদের মুখমণ্ডলের পেশি সংকুচিত হয়। এ ক্ষেত্রে মুখের পনেরোটি পেশি একত্রে কাজ করে। এতে ওপরের পাটির দাঁত উন্মুক্ত হয়। এ সময় অনৈচ্ছিকভাবেই ফুসফুস থেকে কার্বন ডাই-অক্সাইড বের হয়ে যায় এবং ডায়াফ্রাম, তলপেটের পেশির সংকোচন, প্রসারণ শুরু হয়। সেই সময়েই আমাদের স্বরযন্ত্রের ঢাকনা এপিগ্লটিস আংশিকভাবে বন্ধ হয় এবং প্রতিবার একটা ‘হা’ শব্দের সৃষ্টি হয়। এভাবেই আমরা ‘হা হা হা’ করে হাসি। হাসির রিসার্চার রবার্ট প্রোভিনের মতে, আমরা বিভিন্নভাবে হাসতে পারলেও একসঙ্গে হা-হা হো হাসতে পারবে না কেউ। আবার কেউ যখন হাসির চোটে ফেটে পড়ে, তখন তার ল্যাক্রাইমাল গ্রন্থি ও ঘামের গ্রন্থিও সক্রিয় হয়। তাই অতিরিক্ত হাসির জন্য অনেকের চোখ দিয়ে জল গড়িয়ে আসে, শরীর ঘেমে যায়। বাধাহীন হাসির পর দেখা যায়, নিজেকে খুব হালকা লাগছে। একে বলে জেলোটোলেপ্সি। আর মস্তিষ্কে এনডোরফিন হরমোন নিঃসরণের ফলে পুরো প্রক্রিয়াটাই আমাদের আনন্দে ভাসিয়ে দেয়।
~হাসি কেন ভালো?
~এতে শ্বাস–প্রশাস দ্রুত ঘটে, শরীরের পেশি ব্যবহৃত হতে কাজ করে এবং হৃৎপিণ্ড ও ফুসফুস ভালো রাখতে সাহায্য করে। আপনি যদি কোনো কিছু নিয়ে উদ্ধিগ্ন থাকেন বা ভয়ের মধ্যে থাকেন, তাহলে হাসি তা দূর করে দিতে পারে। বিজ্ঞানীরা মনে করেন, মানুষের ইমিউন (যা শরীরকে সহায়তা করে রোগ প্রতিরোধ করতে) ব্যবস্থা ভালো রাখতে সহায়তা করে হাসি। খোশমেজাজে রাখা ও ব্যথা দূর করে স্বাচ্ছন্দ্যে রাখতেও হাসির বিকল্প নেই।
- Khondakar Refat