প্রসেসর হলো কম্পিউটারের অন্যতম প্রধান হার্ডওয়্যার। মূলত একে CPU = Central Processing Unit (সেন্ট্রাল প্রসেসিং ইউনিট) বলে। প্রকৃত অর্থে মাইক্রো প্রসেসর একটি সয়ংসম্পন্ন এবং প্রোগ্রামেবল গানিতিক ইন্জিন। যা ইন্সটকশনের মাধ্যমে কম্পিউটারের যাবতীয় অপারেশন নিয়ন্ত্রণ এবং সম্পাদন করে। অর্থাৎ আমরা যখন কম্পিউটার চালানোর সময় বিভিন্ন কমান্ড দিয়ে থাকি, সেগুলোকে প্রসেসর প্রসেসিং করে আমাদের ডিসপ্লেতে শো করে।
প্রসেসর কিভাবে কাজ করে?
আমরা যখন কোন প্রসেসর বাছাই করবো, তখন যে বিষয় গুলোর উপর ফোকাস করা উচিৎ সেগুলো হলো-
* CLOCK SPEED - ক্লক স্পিড।
* NUMBER OF CORES - নাম্বার অফ কোর।
* CACHE MEMORY - কেচ মেমোরি।
* FSB - এফ এস বি।
প্রথমে আসি ক্লক স্পিড বিষয়ে। "ক্লক স্পিড" এটাকে গিগাহার্জ ও বলা হয়। প্রতিটা প্রসেসরের গায়ে এটা লিখা থাকে যেমন-
3.00 GHz
3.4 GHz
4.00 GHz ইত্যাদি।
তো এখন আসি ক্লক স্পিড বা গিগাহার্জ এটা কি?
সহজ ভাষায় আপনার কম্পিউটার কত দ্রুত হিসাব করতে পারে তা নির্ধারণ করে। অর্থাৎ প্রসেসর প্রতি সেকেন্ডে কতগুলো ক্যালকুলেশন করতে পারে তা মাপার জন্য ক্লক স্পিড ব্যবহার করা হয়।
তার পর হলো- NUMBER OF CORE - নাম্বার অফ কোর। এই জিনিসটা কি?
সাপোস আমাদের দুটি হাত আছে, আমরা আমাদের দুই হাত দিয়ে একসাথে দুটি কাজ করতে পারি। এখন ধরুন আমাদের যদি চারটা বা পাঁচটা হাত থাকতো, তাহলে ঠিক ঐ পরিমাণ কাজ আমরা একসাথে করতে পারতাম। NUMBER OF CORE - নাম্বার অফ কোর মূলত এভাবেই কাজ করে থাকে। তার মানে প্রসেসরের কোর যত বেশি থাকবে সেই প্রসেসরটি তত বেশি কার্যক্ষমতা সম্পন্ন হবে।
প্রসেসরের NUMBER OF CORE - নাম্বার অফ কোর এরও আবার প্রকারভেদ আছে। ফর এক্সাম্পল- আমরা যখন মার্কেটে কোন স্মার্টফোন কিনতে যাই, তখন সবার প্রথম আমরা ফোনের কনফিগারেশন গুলো দেখি। একই ভাবে আমরা যদি প্রসেসরের দিকে লক্ষ করি তাহলে দেখবো সেখানে-
* Dual Core - ডুয়াল কোর
* Quad Core - কোয়াড কোর
* Hexa Core - হেক্সা কোর
* Octa Core - অকটা কোর
* Deca Core - ডেকা কোর
এই জিনিস গুলো লেখা থাকে।
এখন প্রশ্ন হতে পারে এগুলো কি?
Dual Core হলো দুটি কোর, অর্থাৎ Dual Core কোর প্রসেসরে দুটি প্রসেসিং ইউনিট থাকে। ঠিক তেমনি-
* Quad Core = চারটি
* Hexa Core = ছয়টি
* Octa Core = আটটি
* Deca Core = দশটি প্রসেসিং ইউনিট থাকে।
আবার প্রসেসরের বিভিন্ন সিরিজ থাকে। আমাদের এই সিরিজের উপরও নজর দেওয়া উচি। সিরিজ যত উন্নত হবে প্রসেসরের মান তত বাড়বে।
ইনটেল প্রসেসর সিরিজঃ
* Pentium Series - পেন্টিয়াম সিরিজ
* Seleron Series - সেলেরন সিরিজ
* Core Series - কোর সিরিজ
* i Series - আই সিরিজ
তেমনই AMD এর প্রসেসর গুলো হলোঃ
* Sempron - সেম্পরন
* A Thlon - এ থ্লন
* AMD A Thlon X2 - এ,এম,ডি, এ থ্লন এক্স টু
* AMD A Thlon 2 X2 - এ,এম,ডি, এ থ্লন টু এক্স টু
* AMD Phenom - এ,এম,ডি ফেনম
* AMD FX - এ,এম,ডি এফ এক্স
* AMD APU - এ,এম,ডি এ পি ইউ।
আর তাই সবসময় নতুন মডেলের প্রসেসর কিনা ভালো। তবে হ্যা, প্রসেসরটি যেন আপনার মাদার্বোডে সাপোর্ট করে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
প্রসেসরের আরেকটি বিষয় হলো-
CACHE MEMORY - কেচ মেমোরি।
কম্পিউটারের সবচেয়ে বড় মেমোরি হলো হার্ড ডিস্ক এবং তারপরেই RAM. তো এখান থেকে ডাটা আদানপ্রদান করতে প্রসেসরের বেশ সময় লাগে। আর এসব সময় ক্ষেপণ দুর করতে প্রসেসরে একধরনের মেমোরি যোগ করা হয় যার নাম- CACHE MEMORY - কেচ মেমোরি। এখানে এমনসব ডাটা জমা রাখা হয় যেগুলো খুব অল্প সময়ের মধ্যে বারবার ব্যবহার করা হয়। তো এক্ষেত্রে বলা যায় প্রসেসরের CACHE MEMORY - কেচ মেমোরি যত বেশি হবে, সেই প্রসেসর তত ভালো মানের হবে এবং কার্যক্ষমতা সম্পন্ন হবে। CACHE MEMORY - কেচ মেমোরি মুলত প্রসেসরের প্রকারভেদ অনুযায়ী ২ এমবি, ৪ এমবি, ৬ এমবি, ৮ এমবি ইত্যাদি হয়ে থাকে।
এবার সর্বশেষ যে বিষয় সেটা হলো- FSB - এফ এস বি। FSB মানে হলো-
FSB = Front Side Bus.
FSB হলো আপনার প্রসেসরের সাথে RAM কত স্পিডে যোগাযোগ করতে পারছে সেটা। FSB যত বেশি হবে CPU তত দ্রুত RAM, মাদারবোর্ড ও অন্যান্ন যন্ত্রের সাথে যোগাযোগ করতে পারবে। তাছাড়া FSB বেশি হলে আপনি অনেক বেশি BUS SPEED (বাস স্পিড) এর RAM ব্যবহার করতে পারবেন। তবে হ্যা, আপনার মাদারবোর্ডে একই মাপের FSB সাপোর্ট করে কিনা সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। যদিও নতুন প্রসেসর গুলোতে FSB ব্যবহৃত হয় না, তার পরিবর্তে QPi ব্যবহৃত হয়। আর QPi এটাও মোটামোটি FSB এর মতই কাজ করে।