আজ আমরা জানবো ল্যাপটপ কি, ল্যাপটপ কম্পিউটার দিয়ে কি কি কাজ করা যায় বিস্তারিত। কারণ ছোটরা অনেকেই ল্যাপটপ সম্পর্কে জানে না যে, ল্যাপটপ ও কম্পিউটার দুইটা একই জিনিস, যার একই কাজ, যা একই ডিভাইস, শুধু পার্থক্য হলো ল্যাপটপ মূলত পোর্টেবল ডিভাইস সাথে রিচার্জেবল হয়ে থাকে। তাহলে চলুন জেনেনি ল্যাপটপ কি? ল্যাপটপ দিয়ে কি কি কাজ করা যায় বিস্তারিত।
সূচীপত্র
ল্যাপটপ কি কাকে বলে:
সাধারণত কম্পিউটাররের জগতে ল্যাপটপকে নোটবুক হিসাবেও ধরা হয়, ল্যাপটপ মুলত পোর্টেবল কম্পিউটার। যা আপনি আপনার সাথে যেকোন স্থানে নিয়ে যেতে পারবেন এবং বিভিন্ন পরিবেশে ব্যবহার করতে পারবেন। যার মধ্যে একটি স্ক্রিন, কীবোর্ড, টাচ প্যাড রয়েছে, যা মাউস হিসাবে কাজ করে। যেহেতু ল্যাপটপ যেকোন স্থানে ব্যবহৃত করা যায় এজন্য সাথে ইন্টারনাল ব্যাটারি থাকে। যা পাওয়ার আউটলেটে এসি প্লাগ না করেও চালু কাজ করা যায় ৬-৮ ঘন্টা কাজ করা যায়। ল্যাপটপে একটি পাওয়ার অ্যাডাপ্টার অন্তর্ভুক্ত থাকে যা এসি আউটলেট থেকে শক্তি ব্যবহার করে এবং ব্যাটারি রিচার্জ করে।
ল্যাপটপ দিয়ে কি কাজ করা যায়:
ল্যাপটপের প্রধানত চারটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ নিচে উল্লেখ করা হলেও সাধারণত ল্যাপটপ ও ডেস্কটপ কম্পিউটারের একই কাজ। তবে ল্যাপটপ এবং ডেস্কটপ কম্পিউটারে মধ্যে পার্থক্য হলো পারফামেন্স ও কাজের গতি। একই কনফিগারেশনের ল্যাপটপ দিয়ে যেকোন ভারি প্রোগ্রামে কাজ করতে সমস্যা হলেও তা ডেস্কটপ কম্পিউটার দিয়ে সেই একই কাজ অনায়াসে করা যায়। সুতরাং বোঝা যায় ল্যাপটপের থেকে ডেক্সটপ কম্পিউটারের শক্তি অনেক বেশি। কম্পিউটার সাইন্স এর ভাষায় ল্যাপটপ কম্পিউটারের প্রধান কাজ গুলো হলো:
১. সমস্যা সমাধানের উদ্দেশ্যে ব্যবহারকারী কর্তৃক তৈরি প্রোগ্রাম (Programs) ল্যাপটপ কম্পিউটার গ্রহণ করে মেমরিতে সংরক্ষণ করে এবং ব্যবহারকারীর নির্দেশে কম্পিউটার প্রোগ্রাম নির্বাহ (Execute) করে।
২. কী-বোর্ড, মাউস, স্ক্যানার, ক্যামেরা, মাইক্রোফোন, সিডি ডিস্ক, ইন্টারনেট ইত্যাদির মাধ্যমে কম্পিউটার ডেটা (Data) গ্রহণ করে।
৩. ব্যবহার কারী যেসকল ডেটা ল্যাপটপে ইনপুট দিয়ে থাকে সে ডেটা প্রক্রিয়াকরণ (Process) করে ল্যাপটপ কম্পিউটার করতে পারে।
৪. সকল ডেটা প্রসেসিং করার পর তা ল্যাপটপ কম্পিউটার থেকে মনিটর, প্রিন্টার ইত্যাদির মাধ্যমে সকল ফলাফল প্রকাশ করে করা ল্যাপটপ কম্পিউটারের শেষ কাজ।
বিভিন্ন ক্ষেত্রে ল্যাপটপের ব্যবহার:
১. মাইক্রোসফট্ ওয়ার্ড প্রসেসিং বা লেখা-লেখি, ইন্টারনেট, ইমেইল দেওয়া-নেওয়া কাজে, টাইপ রাইটারের বিকল্প হিসেবে অফিস আদালতে সহজে বহন যোগ্য বলে ল্যাপটপ বর্তমানে বেশি ব্যবহৃত হয়।
২. যেকোন ব্যাংকিং, শেয়ার বাজার, ইনস্যুরেন্স ইত্যাদি প্রতিষ্ঠানে লেনদেনের হিসেব তৈরি, সংরক্ষণের কাজে গতানুগতিক পদ্ধতি বাদ দিয়ে বর্তমানের নিজের পার্সোনাল ল্যাপটপে অফিসের যাবতীয় কাজ করা হয়। যেকোন স্থানে সহজে ল্যাপটপ নিয়ে কাজ করা যায়।
৩. শিল্প ক্ষেত্রের যন্ত্রপাতি পরিচালনায়, যন্ত্রপাতি, মোটরগাড়ি, জাহাজ, অ্যারোপ্লেন, ঘরবাড়ি, ব্রিজ ইত্যাদির সকল কিছু ঘরে বসে ল্যাপটপের সাহায্যে নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
৪. বিভিন্ন ধরনের গবেষণামূলক কাজে, একস্থান থেকে অন্যস্থানে সংবাদ প্রেরণের কাজে, র্ভাচুয়াল শিক্ষাক্ষেত্রে, বিনোদনের ক্ষেত্রে, সকল মুদ্রণ শিল্পে প্রকাশনা মুলক যেকোন কাজে, সকল যোগাযোগ ব্যবস্থার কাজে, ট্রান্সপোর্টের ডিরেকশন ও নির্ণয়ের কাজে, আধুনিক নিরাপত্তা রক্ষীর কাজে। বায়ু-আবহাওয়া পূর্বাভাস পর্যবেক্ষণের কাজের মত নানা কাজে ল্যাপটপ কম্পিউটর বেশি ব্যবহৃত হচ্ছে।
৫. অনলাইনের সকল কাজ, গ্রাফিক্স ডিজাইন, ওয়েবডিজাইন, সফট্ওয়্যার তৈরী, গেম তৈরী, আর্টিফিসিয়াল মেশিন লার্নিং, ভার্চয়াল মিডিয়া, চ্যানেল পরিচালনা, ডিজিটাল মার্কেটিং, সার্চ ইঞ্জিন নিয়ন্ত্রণ, আপনি যদি একটু ভালোভাবে খেয়াল করেন তাহলে দেখবেন পৃথিবীতে এমন কিছু আর বাকি নাই, যেখানে ল্যাপটপ কম্পিউটার ব্যবহার করা হয় না।
ল্যাপটপ দিয়ে কাজ করার সুবিধা:
আমি বলব ল্যাপটপ মুলত পোর্টেবল কম্পিউটার, যেখানে সেখানে সকল ডিভাইস এক সাথে পাওয়া যায়। যেমন-একটি ল্যাপটপে ডেস্কটপ কম্পিউটারের সকল সুবিধার সাথে অতিরিক্ত ভাবে ক্যামেরা, মাইক্রোফোন, শেয়ারইট, ব্লুতুথ, স্পিকার, এক্সট্র মনিটর লাইন, ব্যাটারী ব্যাকআপ পাওয়া যায়। আর সব থেকে বড় সুবিধা হলো ল্যাপটপ রিচার্জেবল হয়ে থাকে, ফলে বিদ্যুৎ লাইন ছাড়াই ৬-৮ ঘন্টা চালানো যায়। সুতরাং সব সময় অনলাইনে থাকার জন্য ফুল ব্যবস্থাপনা সেট হলো একটা ল্যাপটপ। অর্থাৎ আপনার একটি ল্যাপটপ থাকলে নেট লাইন ব্যবহার করে যেকোন স্থানে যেকোন কাজ খুব সহজে করতে পারবেন।
আজকের পোস্টটি একটি কমেন্ট এর ভিত্তিতে নতুন ল্যাপটপ আগ্রর্হীদের জন্য করেছি। বিষয়টি সাধারণ হলেও যারা ছোট তারা অনেকেই বিষয় গুলো বোঝেনা। যারা বোঝেন, হয়ত বলবেন, এত সাধারণ বিষয় নিয়ে আর্টিকেল দিয়েছেন? আমি তাদের বলি আপনার মনেও একসময় এমন বিষয় জানার আগ্রহ ছিলো কি-না? একবার নিজেকে প্রশ্ন করুন। আর্টিকেলটি ভালো লাগলে একটা কমেন্ট করুন।