ঘূর্ণিঝড় কীভাবে সৃষ্টি হয়? ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ যেমন, ফণি, ফেথাই, তিতলি ইত্যাদি কীভাবে করা হয়? - ScienceBee প্রশ্নোত্তর

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রশ্নোত্তর দুনিয়ায় আপনাকে স্বাগতম! প্রশ্ন-উত্তর দিয়ে জিতে নিন পুরস্কার, বিস্তারিত এখানে দেখুন।

+2 টি ভোট
954 বার দেখা হয়েছে
"পরিবেশ" বিভাগে করেছেন (135,490 পয়েন্ট)

2 উত্তর

0 টি ভোট
করেছেন (135,490 পয়েন্ট)

মজার ব্যাপার হচ্ছে, এদের উৎপত্তির স্থানের উপরে ভিত্তি করে এদের সাধারণ নাম (যেমন টাইফুন, হারিকেন বা সাইক্লোন) দেয়া হয়। যে অঞ্চলে যে নামই থাকুক না কেন, এদের বৈজ্ঞানিকভাবে ট্রপিকাল সাইক্লোন বলা হয়ে থাকে।

image

ঘূর্ণিঝড়ের সৃষ্টি

বিষুবীয় অঞ্চলে আর্দ্র এবং উষ্ণ হাওয়া মহাসাগরের পৃষ্ঠ থেকে স্বাভাবিকভাবেই উপরের দিকে উঠতে থাকে। এভাবে উষ্ণ হাওয়া উপরের দিকে ওঠার ফলে এটি মহাসাগরীয় পৃষ্ঠে একটি কম বায়ুচাপের একটি এলাকা সৃষ্টি করে। তখন চারপাশ থেকে তুলনামূলক উচ্চ বায়ুচাপ বিশিষ্ট বাতাস সেই কম বায়ুচাপের এলাকায় প্রবেশ করে এবং সেটিও আর্দ্র এবং উষ্ণ হতে থাকে। আগের মত এরাও উষ্ণতার জন্য উপরে উঠতে থাকে। এভাবে একটি চক্রের সৃষ্টি হয়। এই উষ্ণ বাতাস উপরে উঠে ঠান্ডা হওয়ার ফলে বাতাসে পানির অণুগুলো জমাট বেঁধে মেঘের তৈরী করে। ক্রমাগত এই উষ্ণ এবং আর্দ্র বাতাসের উপরে ওঠার কারণে একটি পাকের সৃষ্টি হয়। এই পাক তখন বাতাস এবং মেঘ নিয়ে ঘুরতে ঘুরতে আরও শক্তি সঞ্চয় করতে থাকে। এ ক্ষেত্রে এর জ্বালানী হিসেবে কাজ করে মহাসাগরের উষ্ণ এবং আর্দ্র বাতাস। (আরও সঠিকভাবে বলতে গেলে মহাসাগরের পৃষ্ঠের তাপমাত্রা। কারণ তাপমাত্রার ফলেই বাতাস উষ্ণ হয়ে উপরের দিকে উঠে যায়।) ঠিক এই কারণেই এদেরকে বিষুব অঞ্চলে হতে দেখা যায়।

পাকের ঘূর্ণনগতি বাড়ার সাথে সাথে ঝড়টির কেন্দ্রে একটি 'চোখ' উৎপন্ন হয়।

image

যেহেতু এরকম ঝড়ের জ্বালানী আসে সাগরপৃষ্ঠের তাপমাত্রা থেকে, এজন্য এরা ভূমিতে গিয়ে 'জ্বালানী'র অভাবে খুব একটা সুবিধা করতে পারে না। তবে মহাসাগরে থাকা অবস্থায় এর ব্যাপ্তি এবং গতির উপর নির্ভর করে এটি অনেকসময় ভূমিতে বেশ ভালোরকমের তান্ডব সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়।

এই ঝড়ের বাতাসের বেগ ঘন্টাপ্রতি ৩৯ মাইল এ পৌঁছলে একে ট্রপিকাল ঝড় বলা হয় এবং যখন ঘন্টাপ্রতি বাতাসের বেগ প্রায় ৭৪ মাইল হয়, তখন এটিকে আনুষ্ঠানিকভাবে ট্রপিকাল সাইক্লোন বলা হয়। এদের গতির উপরে ভিত্তি করে এদের বিভিন্ন বিভাগে ভাগ করা হয়।

image

  • ঘূর্ণিঝড়ের নাম কিভাবে দেয়া হয়

আদতে একসময় ঘূর্ণিঝড়ের নাম দেয়া হত না। গত কয়েক শতাব্দী ধরে আটলান্টিক ঝড়ের নাম দেয়া হয়ে আসছে যেটি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পর্যন্ত বলবৎ থাকে। এরপরে আবহাওয়াবিদরা মিলে মেয়েদের নামে ঝড়গুলোর নামকরণের সিদ্ধান্ত নেন। ১৯৫৩ সালে US Weather Service আনুষ্ঠানিকভাবে Q, U, X, Y, Z ব্যতীত A থেকে W পর্যন্ত আদ্যক্ষরে মেয়েদের নামে ঝড়ের নামকরণের ব্যবস্থা গ্রহণ করে। এ নিয়ে ৬০ এবং ৭০ এর দশকে নারীদের প্রতিবাদের মুখে অবশেষে ১৯৭৮ সালে ছেলেদের নামেও ঝড়ের নামকরণের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

এসব ঝড়ের নামকরণের একটি সুন্দর ব্যাবস্থা ছিলো। বছরের প্রথম ঝড়ের নাম রাখা হত A আদ্যক্ষর দিয়ে, দ্বিতীয় ঝড়ের নাম রাখা হত B আদ্যক্ষর দিয়ে, এভাবে চলতে থাকতো। আবার জোড় সালের বিজোড় ঝড়গুলোর (মনে করি ২০১৪ সালের ৩য় ঝড়) নাম রাখা হত ছেলেদের নামে আর বিজোড় সালের বিজোড় ঝড়গুলোর নাম রাখা হত মেয়েদের নামে!

সাইক্লোনের ঝড়ের নামকরণের ক্ষেত্রে World Meteorological Organization এর পৃষ্ঠপোষকতায় কিছু অঞ্চল ভাগ করে দেয়া হয়েছে। সেই অঞ্চলের দেশগুলো মিটিং এর মাধ্যমে ঝড়গুলোর নাম ঠিক করে থাকে। বাংলাদেশ পড়েছে ভারতীয় মহাসাগর অঞ্চলে। আমাদের অঞ্চলে আমাদের দেশের সাথে আরও আছে, ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ, মিয়ানমার, থাইল্যান্ড এবং ওমান। এসব দেশগুলো ইতোমধ্যে বেশ কিছু নাম দিয়ে রেখেছে।

image

যখন ঝড় হয়, তখন পর্যায়ক্রমিকভাবে এদের সেই নামটি দেয়া হয়ে থাকে। কবে ঝড় হবে, সেটি আমরা না বলতে পারলেও আগামী ঝড়ের কী নাম হবে, সেটি কিন্ত আমরা জানি।

 

 

 

জয়তু

0 টি ভোট
করেছেন (6,150 পয়েন্ট)

রাশিক আজমাইন-

একটি নির্দিষ্ট অঞ্চলে যে সব দেশে ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানে সে সব দেশ ঐ অঞ্চলের ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ করে ৷ ২০০৪ সালে উত্তর ভারত মহাসাগরীয় (আরব সাগর ও বঙ্গোপসাগর) ঘূর্ণিঝড়ের জন্য নামকরণের প্রথা চালু হয় ৷ ২০০৪ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ, ভারত, মালদ্বীপ, মায়াবমার, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা ও থাইল্যান্ড নামকরণ করে ৷ শেষ নামটি ছিল আম্পান ৷ তবে ২০১৯ সাল শেষ হয়ে গেলে আম্পান চলে আসে ২০২০ সালে ৷ ২০২০ থেকে পরবর্তীয় সময়ের ঘূর্ণিঝড়গুলোর জন্য নতুন নাম দেওয়া হয়েছে ৷ তাতে আগের দেশগুলোর সাথে সৌদি আরব, কাতার, ইয়েমেন ও সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) যুক্ত হয়েছে ৷ সমস্ত নাম ছবিতে দেওয়া হলো ৷

পদ্ধতি:

ক্রান্তীয় ঘূর্ণিঝড়ের নাম সাধারণত সংশ্লিষ্ট দেশের আবহাওয়া অধিদপ্তর দিয়ে থাকে ৷ তবে চাইলে শর্ত মেনে জনগণ নাম প্রস্তাব করতে পারবে ৷ বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত আবহাওয়া অধিদপ্তর প্রস্তাব করে ৷ শর্তগুলো হলো:

(১) ছোট ও সহজবোধ্য নাম হতে হবে যেন একবার শুনে মুখস্ত হয়ে যায়,

(২) সংশ্লিষ্ট কোনো দেশের জন্য সংবেদনশীল হবে না (এ কারণে 'মহাসেন' নাম বদলে 'বিয়ারু' রাখা হয়, মহাসেন শ্রীলঙ্কার এক স্বনামধন্য রাজার নাম),

(৩) নামের অর্থ ভয়ানক, পরিবেশবিরোধী বা এমন কিছু হবে না যা পরে সমালোচনার কারণ হয় ৷

(৪) একই নাম দ্বিতীয়বার ব্যবহারযোগ্য নয় ৷

(৫) গৃহীত নামের তালিকা অনুযায়ী ধারাবাহিকভাবে একে একে নাম আসবে ৷

নামকরণের প্রয়োজনীয়তা

(১) প্রত্যেকটা ঘূর্ণিঝড়কে আলাদাভাবে চেনা যায়,

(২) কতটা শক্তিশালী হলো নাকি দুর্বল হলো, কবে কোথায় আঘাত হানবে ইত্যাদি জানতে সাহায্য করে,

(৩) স্বতন্ত্র নামের কারণে দ্বিতীয় পড়ার সম্ভাবনা নেই,

(৪) কিছু কিছু ঘূর্ণিঝড় নামের কারণে ঐতিহাসিক হয় ৷

নিচের তালিকা অনুযায়ী ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং এর পরেরটার নাম হবে মানদউস, তারপর মোচা, তারপর বিপর্যয় এবং এভাবে চলতে থাকবে ৷

সম্পর্কিত প্রশ্নগুচ্ছ

+9 টি ভোট
2 টি উত্তর 404 বার দেখা হয়েছে
+13 টি ভোট
2 টি উত্তর 928 বার দেখা হয়েছে
0 টি ভোট
2 টি উত্তর 409 বার দেখা হয়েছে
01 ডিসেম্বর 2022 "প্রাণিবিদ্যা" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন Sakimon Rayhan (220 পয়েন্ট)
+12 টি ভোট
2 টি উত্তর 487 বার দেখা হয়েছে

10,826 টি প্রশ্ন

18,535 টি উত্তর

4,745 টি মন্তব্য

841,235 জন সদস্য

74 জন অনলাইনে রয়েছে
0 জন সদস্য এবং 74 জন গেস্ট অনলাইনে
  1. mehrob.durjoy

    140 পয়েন্ট

  2. Curious

    140 পয়েন্ট

  3. Shihabuddin

    130 পয়েন্ট

  4. Muntasir Imteaz

    110 পয়েন্ট

  5. Shoumik

    110 পয়েন্ট

বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় উন্মুক্ত বিজ্ঞান প্রশ্নোত্তর সাইট সায়েন্স বী QnA তে আপনাকে স্বাগতম। এখানে যে কেউ প্রশ্ন, উত্তর দিতে পারে। উত্তর গ্রহণের ক্ষেত্রে অবশ্যই একাধিক সোর্স যাচাই করে নিবেন। অনেকগুলো, প্রায় ২০০+ এর উপর অনুত্তরিত প্রশ্ন থাকায় নতুন প্রশ্ন না করার এবং অনুত্তরিত প্রশ্ন গুলোর উত্তর দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। প্রতিটি উত্তরের জন্য ৪০ পয়েন্ট, যে সবচেয়ে বেশি উত্তর দিবে সে ২০০ পয়েন্ট বোনাস পাবে।


Science-bee-qna

সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয় ট্যাগসমূহ

মানুষ পানি ঘুম পদার্থ - জীববিজ্ঞান চোখ পৃথিবী এইচএসসি-উদ্ভিদবিজ্ঞান এইচএসসি-প্রাণীবিজ্ঞান রোগ রাসায়নিক শরীর #ask রক্ত আলো মোবাইল ক্ষতি চুল #science কী চিকিৎসা পদার্থবিজ্ঞান সূর্য প্রযুক্তি মাথা স্বাস্থ্য প্রাণী গণিত মহাকাশ বৈজ্ঞানিক পার্থক্য #biology এইচএসসি-আইসিটি বিজ্ঞান গরম খাওয়া #জানতে শীতকাল ডিম বৃষ্টি চাঁদ কেন কারণ কাজ বিদ্যুৎ রং রাত শক্তি উপকারিতা সাপ লাল আগুন গাছ মনোবিজ্ঞান খাবার সাদা মস্তিষ্ক আবিষ্কার দুধ উপায় হাত শব্দ মাছ মশা ঠাণ্ডা ব্যাথা ভয় বাতাস স্বপ্ন তাপমাত্রা গ্রহ রসায়ন কালো উদ্ভিদ পা মন কি বিস্তারিত রঙ পাখি গ্যাস সমস্যা মেয়ে বৈশিষ্ট্য বাচ্চা হলুদ বাংলাদেশ সময় ব্যথা মৃত্যু চার্জ অক্সিজেন ভাইরাস আকাশ গতি কান্না দাঁত বিড়াল আম
...