পাখি বলতে আমরা যা বুঝি, তা হলো আকাশে উড়তে পারে। উড়ে বেড়ানোই পাখির সহজাত বৈশিষ্ট্য। তবে পাখি হয়েও উড়তে না পারা পাখির কথাও আমরা শুনেছি।বন্ধুরা, এখন যদি কেউ প্রশ্ন করে, কোন পাখি উড়তে পারে না? সবার আগে নিশ্চয় তোমাদের মাথায় আসবে উট পাখির কথা। ঠিক বলেছি না?
হ্যাঁ, উট পাখি হয়েও উড়তে পারে না। এটা ছোট বড় সবাই জানে। তবে উটই কিন্তু একমাত্র পাখি নয়। উটের মতো উড়তে না পারা পাখিদের দলে আরও কয়েকটি পাখি আছে। তাদের একটি হলো পেঙ্গুইন। চোখ বন্ধ করে পাখিদের কথা ভাবো তো। নিশ্চয় চোখে ভাসছে আকাশে উড়ে বেড়াচ্ছে পাখিদের দল। কিন্তু এবার চোখ বন্ধ করে শুধু পেঙ্গুইন পাখির কথা ভাবো। এবারও কি পেঙ্গুইন পাখিদের দল আকাশে উড়ে বেড়াচ্ছে এমন দৃশ্য চোখে ভাসছে?একটুও না। কারণ, আমরা কখনো এমন দৃশ্য দেখিনি।
দেখেছি বরফ রাজ্যে হেঁটে বেড়াচ্ছে পেঙ্গুইন। অথবা পানিতে সাঁতার কাটছে। কাজেই চোখ বন্ধ করলে পেঙ্গুইনের এমন দৃশ্যই আমাদের চোখে ভাসবে স্বাভাবিকভাবে।এখন আসা যাক মূল কথায়। পাখি হয়েও কেন উড়তে পারে না পেঙ্গুইন! তার আগে মনে করিয়ে দেই যে পেঙ্গুইন কিন্তু সাঁতারে ভীষণ পটু। গবেষকদের ধারণা, সাঁতারে ভীষণ পটু হওয়ার গুণই কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে পেঙ্গুইনের। গবেষকরা মনে করেন, একসময় উড়তে পারার সাহজাত ক্ষমতাটি ছিল পেঙ্গুইন পাখিরও। কিন্তু উড়ে গিয়ে শিকার করার মতো প্রানী বা খাবারের অভাব ছিল তাদের বসত এলাকায়। অন্যদিকে, খাবারের খোঁজ মেলে পানিতে। যারজন্য সহজেই খাবার জোগাড়ে শুরু হয় তাদের পানিতে দাপাদাপি।
এভাবেই একসময় পানিতে সাঁতার কাটতে ও শিকার করতে বেশ পটু হয়ে ওঠে পেঙ্গুইন । আর বিবর্তনের কারনে হারিয়ে গেলো তাদের আকাশে উড়ে বেড়ানোর ক্ষমতা। ধীরে ধীরে তাদের ডানা ছোট এবং হাড়গুলো হয়ে উঠলো ভারী। যা পানিতে সাঁতার কাটার জন্য উপযোগী। তবে আকাশে উড়ে বেড়ানোর জন্য অনুপযোগী।
স্কটল্যান্ডের অ্যাবারডিন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জন স্পিকম্যান একটি ব্যাখ্যা দিয়েছেন। তার মতে, শারীরিক শক্তি ব্যয়ের ব্যাপারটিও খুব গুরুত্বপূর্ণ। পানিতে সাঁতার কাটাতে পারা গতিশীল পাখির শরীরে উড়ে বেড়ানোর মতো শক্তি আর থাকে না। এসব কারনেই পেঙ্গুইন আকাশে উড়তে পারে না।
©️সংগ্রহীত