ইংরেজিতে টিকটিকির লেজ নিয়ে একটা কৌতুক প্রচলিত আছে। কৌতুকটা হলো: A Lizard lost its tail...but it got one back from a retail shop!
কৌতুকে টিকটিকি তার খসে পড়া ‘টেইল’ বা লেজ ফেরত পায় ‘রিটেইল’ শপে। কিন্তু বাস্তবে কীভাবে হারানো লেজ ফেরত পায় এরা? আর কেনই-বা তারা লেজ খসায়?
টিকটিকির লেজ খসে পড়ার দৃশ্য দেখেননি এমন মানুষ পাওয়া বোধ হয় কঠিন। দৃশ্যটা চমকপ্রদই বটে। ঝাড়ু দিয়ে দেয়াল পরিষ্কার করার সময় প্রায়ই ঘটে এটা। এ ছাড়া টিকটিকি তাদের লেজ খসায় যেকোনো শিকারি প্রাণীর খপ্পরে পড়লেই। এ ক্ষেত্রে তাদের প্রধান শত্রু পাখি আর বিড়াল। ফিরে আসি আমাদের প্রশ্ন নিয়ে। টিকটিকি কেন লেজ খসায়? এর উত্তর খোঁজার জন্য বিজ্ঞানীরা বিস্তর গবেষণা করেছেন। ঘেঁটেঘুঁটে দেখেছেন, টিকটিকির শরীরের অন্যান্য অংশের চেয়ে লেজটা ভীষণ দুর্বল।
ফলে এটা নিশ্চিত যে টিকটিকির লেজ খসে পড়ার বিষয়টি কোনো দুর্ঘটনা নয়। বিপদে পড়ার পরও এদের লেজ শরীরের সঙ্গেই লেগে থাকে। কিন্তু তখনই খসে পড়ে, যখন লেজের ভেতরের কোষগুলো বিশেষ এক রাসায়নিক উৎপাদন করে। এই রাসায়নিকের প্রভাবেই ঘটে অদ্ভুত কাণ্ডটা। মজার ব্যাপার হলো, খসে পড়ার পরও কিন্তু লেজটা নড়াচড়া করতে থাকে। এর ফলে শিকারি প্রাণী কিছুক্ষণের জন্য হলেও বিভ্রান্ত হয়। টিকটিকিটাকে ধরবে, নাকি তার জ্যান্ত লেজ? অতএব সহজেই অনুমেয়—টিকটিকির কাছে লেজ খসানো গা বাঁচানো কিংবা প্রাণ বাঁচানোর অন্যতম এক অস্ত্র।
গল্পের শেষ এখানেই নয়। লেজ তো খসল। তারপর? লেজ ছাড়া টিকটিকি চলবে কী করে? এই লেজের কত গুণ! এই লেজ নেড়েই একে-অপরের সঙ্গে ‘কথা বলে’ এরা। এটাকে আপনি বলতে পারেন, গোপন টিকটিকি-ভাষা। এ ছাড়া দেয়াল বেয়ে ওঠার সময় কিংবা লাফ দেওয়ার মুহূর্তে শরীরের ভারসাম্য রক্ষা করতেও লেজ বড় দরকারি। তাই লেজ খসানো যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি লেজ গজানোও কম জরুরি নয়। লেজ খসানো আর গজানোয় ওস্তাদ আর্জেন্টিনার বিশেষ এক প্রজাতির টিকটিকি। এরা জীবনে ছয়বার পর্যন্ত লেজ খসায় আর লেজ গজায়!
সূত্র: মেন্টাল ফ্লস
ক্রেডিট: প্রথম আলো