সিম্ফনি অব দ্য সিস' হল পৃথিবীর সর্ববৃহৎ যাত্রিবাহী ক্রুজ জাহাজ।
(ছবি- 'সিম্ফনি অব দ্য সিস' ক্রুজ জাহাজ)
‘সিম্ফনি অব দ্য সিস’ যেনো সমুদ্রের মধ্যে আরেকটি পৃথিবী। ভূমধ্যসাগর কিংবা ক্যারিবিয়ানে ছুটিছাটায় সর্বোচ্চ বিনোদন দিতে এই জাহাজটিতে অায়োজনের কোনো কমতি রাখেনি কর্তৃপক্ষ। ৩৬১.০১১ মিটার (১১৮৪.৪২ ফুট) লম্বা এবং ৭২.৫ মিটার (২৩৮ ফুট) উচ্চতার জাহাজটি ৬ হাজার ৬৮০ জন যাত্রী বহন করতে সক্ষম।
২০১৫ সালে ফ্রান্সে নির্মাণকাজ শুরু হয় এই জাহাজটির। নির্মাণে কাজ করেছেন ২ হাজারের বেশী শ্রমিক। নির্মানকার্যে ব্যয় হয় প্রায় ১.৩৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
(ছবি- আলোকসজ্জায় 'সিম্ফনি অব দ্য সিস')
এই জাহাজের বিশেষত্ব হলো যাত্রী ধারণক্ষমতা। বিশ্বের সর্বাধিক যাত্রী ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন ভ্রমণ জাহাজ হলো এই ‘সিম্ফনি অব দ্য সিস’। বিশ্বের সবচেয়ে বড় যাত্রীবাহী জেট এয়ারবাস A380 -তে সিটের সংখ্যা ৫২৫টি। তুলনা করলে বলা যায়, ‘সিম্ফনি অব দ্য সিস’ তার চেয়েও দশগুণ বেশি যাত্রী বহন করতে সক্ষম। দ্রুততার দিক হতে জাহাজটি ঘণ্টায় ২৫ কিলোমিটার বেগে ছুটতে পারবে।
‘সিম্ফনি অব দ্য সিস’ এ রয়েছে মোট ১৮টি ডেক। তারমধ্যে ১৬টি ডেকে রয়েছে ২ হাজার ৭৫৯টি কেবিন। যা বর্তমানে যেকোনো জাহাজের থেকেও অনেক বেশি। জাহাজটি এতো বড় যে যাত্রীরা যাতে হারিয়ে না যান, সেজন্য তাদেরকে জিপিএস ব্যবহার করতে হবে!
দুই তলা বিশিষ্ট এই জাহাজের সিগনেচার রুমটিকে বলা হয় রয়েল লফট স্যুট। রয়েল লফট স্যুটের প্রথম তলাতে রয়েছে ১ হাজার ৬০০ স্কয়ার ফুটের একটি লিভিং স্পেস। অন্যদিকে ৮৭৪ স্কয়ার ফুটের ২য় তলাটি শহরের বড় কোনো অ্যাপার্টমেন্টের চেয়েও অনেক বেশি বড়।
যেহেতু ‘সিম্ফনি অব দ্য সিস’ একটি ভ্রমণ জাহাজ সেহেতু এখানে ছুটি কাটাতে আসা যাত্রীদের আনন্দ গ্রহণে যেনো এতোটুকু অসুবিধা না হয় তাই বিশ্বের ৮০টি দেশ হতে প্রায় ২ হাজার ২০০ জন কর্মচারী তাদের সেবায় নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আবার সবচেয়ে এক্সক্লুসিভ কেবিনে যারা থাকবেন তাদের সেবায় থাকবে রয়েল জেনিস উপাধির খানসামা। এরা অতিথিদের মালপত্র খুলতে ও গোছাতে অতিথিদের সহযোগিতা করবে।
ব্রেকফাস্ট, লাঞ্চ বা ডিনার নিয়ে অতিথি বা যাত্রীদের কোনো চিন্তা নেই। ২২টি ডাইনিং অপশন ও বার রয়েছে ‘সিম্ফনি অব দ্য সিস’ জাহাজটিতে। খাবারের মধ্যে রয়েছে হটডগ হতে শুরু করে সুশি পর্যন্ত। জাহাজটিতে খোলা হয়েছে একটি বায়োনিক বার। যেখানে রোবটরা কাস্টমারদের চাহিদা অনুযায়ী ককটেলও বানিয়ে দেবে।
রয়েছে খেলার জায়গা, কমেডি ও জ্যাজ ক্লাব, বুটিক শপ, সি স্পা ও ফিটনেস সেন্টার, ইয়োথ জোন, ২৪টি সুইমিংপুল, স্পের্টস জোন, সেন্ট্রাল পার্ক এবং চিত্তবিনোদন, কেনাকাটা ও শরীরচর্চার জন্য রয়েছে সব ব্যবস্থা। মধ্যখানে অবস্থিত সেন্ট্রাল পার্কে রয়েছে ২০,০০০ এর বেশী গাছও।
সংগৃহীত