নিশাত তাসনিম-
গৃহপালিত শুকোর বা Pig এর মাংসকে Pork বলা হয়। এটি বর্তমান বিশ্বের অনেক দেশেই বর্তমানে জনপ্রিয় খাবার, বিশেষ করে পূর্ব এশিয়াতে। ধর্মীয় নিষেধাজ্ঞা থাকায় অনেক দেশেই পর্ক খাওয়া বেআইনী। পর্ক রান্না করে এবং রান্না ছাড়া তাজা খাওয়ারও প্রচলন আছে। তাছাড়া পর্ক দিয়ে তৈরি বেকন, হ্যাম, সসেজ জনপ্রিয় খাবার। পিগ এর মাংস খেলে নানা ধরনের রোগ হতে পারে। প্রথমে পিগ এর মাংসের এর পুষ্টিগুণ সম্পর্কে জানা যাক,
পর্ক উচ্চ প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার। ১০০ গ্রাম পিগ এর মাংসে আছে:-
ক্যালরি - ২৯৭
পানি - ৫৩%
প্রোটিন - ২৫.৭ গ্রাম
ফাইবার - ০ গ্রাম
চিনি - ০ গ্রাম
কার্বোহাইড্রেট - ০ গ্রাম
ফ্যাট - ২০.৮ গ্রাম
বেশিরভাগ মাংসের মতো পর্ক এ প্রোটিনের পরিমাণ বেশি। পর্ক থায়ামিন, সেলেনিয়াম, জিংক, ভিটামিন বি ১২, ভিটামিন বি ৬, নায়াসিন, ফসফরাস, আয়রন এর ভালো উৎস। তাছাড়া পিগ এর মাংসে আছে নয় ধরণের প্রয়োজনীয় অ্যামাইনো এসিড। সাইন্স বী
ক্ষতিকর দিক : অতিরিক্ত পরিমাণে কাঁচা মাংস সেবন করলে ক্যান্সার এর ঝুঁকি আছে। কাঁচা মাংসের ক্যান্সারজনক উপাদান heterocyclic amines থাকে। যেসব খাবারে উচ্চমাত্রায় heterocyclic amines থাকে তারা স্তন ক্যান্সার, প্রস্টেট ক্যান্সার, কোলন ক্যান্সার এর ঝুঁকি বাড়ায়। তাছাড়া কাঁচা পিগ এর মাংসে নানা ধরনের প্যারাসাইট থাকে। যেমনঃ- Tapeworm (Taenia solium)। কাঁচা মাংস সেবন করলে মানুষের অন্ত্রে এর সংক্রমণ হতে পারে। এর ফলে cysticercosis রোগ হওয়ার সম্ভাবনা আছে। তাছাড়া কাঁচা পিগ এর মাংসে Parasitic roundworms (Trichinella) থাকে। এর থেকে trichinosis বা trichinellosis রোগ হতে পারে। এই রোগের লক্ষণ হিসেবে ডায়েরিয়া, পেটে ব্যথা, বমি, হৃদস্পন্দন বেড়ে যেতে পারে। বেশিকিছুর মধ্যে আছে দুর্বলতা, মাংসপেশিতে ব্যথা, জ্বর, চোখের আশাপাশে ফুলে যাওয়া, ইত্যাদি। আবার কাঁচা মাংস সেবন করলে Toxoplasma gondii নামক প্যারাসাইটিক প্রোটোজোয়ার প্রভাবে যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল তাদের মাঝে toxoplasmosis দেখা দিতে পারে। অতিরিক্ত পরিমাণে রান্না করা পিগ এর মাংস খেলেও হৃদরোগ, ডায়েবিটিস, আর্থাইটিস, আলজেইমার, অ্যাজমা, ইত্যাদি রোগ হতে পারে।
© নিশাত তাসনিম (সাইন্স বী)