ড. হায়াত মুহাম্মাদ আলী খাফাজি বলেন, মৃত জীবজন্তুর দেহে অনেক ক্ষতিকারক রোগজীবাণু থাকায় তা ভক্ষণকারীর দেহে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে। এমন অনেক মারাত্মক রোগ আছে, যা সাধারণত পশুদের আক্রান্ত করে এবং পরে তা মানুষের মাঝে সংক্রমিত হয়। যেমন—মৃত প্রাণীর গোশত। কেননা তাতে রক্ত মিশ্রিত হয়ে যায়। ফলে গোশত নষ্ট হয়ে যায় এবং বিষক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। ওই মৃত প্রাণীর গোশত ভক্ষণকারীর হজমে খুব বিঘ্ন ঘটে এবং পাকস্থলীতে গোলযোগ দেখা দেয়। ফলে মারাত্মক পেটের পীড়ায় সে আক্রান্ত হয়ে পড়ে। যেসব ঘাতক ব্যাধিতে জীবজন্তু মারা যায় ওই মৃতের গোশত ভক্ষণের কারণে মানুষের মধ্যে মারাত্মক রোগের সংক্রমণ ঘটে, তন্মধ্যে মহামারি আকারে কলিজা ফুলে যাওয়া রোগটি অন্যতম। এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি যদি ত্বরিত চিকিৎসা গ্রহণ না করে এবং অন্তত চার-ছয় মাস সম্পূর্ণ বিশ্রামে না থাকে, তাহলে সে মরণাপন্ন অবস্থায় উপনীত হয়। ’ (লামাহাত মিনাত তিব্বিল ইসলামী, পৃষ্ঠা ৫৮)
বিজ্ঞানীরা বলছেন যে প্রাণীর শরীর হলো একটা দুর্গ। যতক্ষণ জীবন থাকে ততক্ষণ জীবনীশক্তি ক্ষুদ্র জীবাণুর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে থাকে এবং জীবাণুর প্রতিরোধশক্তি বৃদ্ধি পেতে থাকে। তারা এ ধরনের যেকোনো শত্রুকে প্রতিহত করে পরাজিত করতে থাকে। তাই ভেতরে তার গোশত ও রক্ত ভালো থাকে এবং সে ভালো অবস্থায় থাকে। কিন্তু যদি মারা যায়, শুধু এ জীবন শেষ হওয়ার কারণে পাঁচ-ছয় ঘণ্টা পরই এই মৃত প্রাণীটির শরীর ক্ষুদ্র জীবাণুর একটা গুদামে পরিণত হয়।
যখন কোনো প্রাণী মারা যায়, তার আর জীবন থাকে না, তখন তার এই প্রাচীরের প্রতিরোধশক্তি হারিয়ে যায়। ফলে এই ধংসাত্মক ক্ষুদ্র জীবাণু শরীরের অভ্যন্তর থেকে সেই সব পর্দা ও প্রাচীর ভেদ করে শরীরের সর্বস্থলে প্রবেশ করে। রক্তের স্থানে মিলিত হয়, সব শরীর দখল করে। অসংখ্য জীবাণুর জন্ম দেয়, যা মানুষের স্বাস্থ্যের বড় ধরনের ক্ষতি করতে পারে। (ইসলামী বিধান ও আধুনিক বিজ্ঞান, পৃষ্ঠা ৫৪-৫৫)