জীবনে যা যা অর্জন করেছেন তার কোনোটির জন্যই আপনি যোগ্য নন! এমনটিই কি আপনার মনে হয়?
তবে এটি কি ইমপোস্টার সিন্ড্রোম (Imposter Syndrome)?
আমরা জীবনে অনেকেই অনেক কিছু অর্জন করে থাকি। কিন্তু এমন অনেকেই আছেন যারা মনে করেন তাদের নিজস্ব অর্জনগুলোর জন্য সে আসলে যোগ্য ব্যক্তি নন এবং মনে মনে নিজেকে প্রতারক (Fraud) ভাবতে শুরু করেন। অন্যরা তাদের বুদ্ধিমান ভাবলেও তারা নিজেদেরকে উপযুক্ত বুদ্ধিমান মনে করে না এবং সবসময় ভাবতে থাকে মানুষ হয়তো তাদের সম্পর্কে সত্যিটা জেনে যাবে - কিন্তু বাস্তুবে এর কোনো ভিত্তি নেই। যারা ইমপোস্টার সিন্ড্রোমে ভুগে থাকে তাদের অধিকাংশই বড় বড় ডিগ্রী অর্জনকারী কিংবা অফিসে উচ্চপদস্থ ব্যক্তি হয়ে থাকে।
ইমপোস্টার সিন্ড্রোমে আক্রান্ত ব্যক্তি কেন নিজেকে প্রতারক ভাবে?
ইমপোস্টার সিন্ড্রোমে আক্রান্ত ব্যক্তিরা নিজেদের অর্জনগুলোকে সৌভাগ্য হিসেবে চালিয়ে দেয়। তারা মনে করে হয়তো ভাগ্য তাদের সঙ্গ দিয়েছিল বলেই তারা সেটি অর্জন করতে পেরেছে। এমনকি তারা স্নায়ুবিকতা (Neuroticism), পূর্ণতা (Perfectionism) ও নিজের কার্যক্ষমতা (Self Efficacy) এর সাথে অনেক সংগ্রাম করে। বরং প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশই এর জন্য দায়ী। তাছাড়াও, ছোটবেলায় পরিবার ও একাডেমিক পড়াশুনার জন্য চাপ প্রদানের ফলে এমন হয়ে থাকে।
ইমপোস্টার সিন্ড্রোম কি সবার মাঝেই প্রকাশ পায়?
সাধারণত যারা জীবনে অনেক কিছু অর্জন করে তাদের মধ্যে প্রায় ২৫-৩০ ভাগ মানুষের মধ্যে এর প্রভাব দেখা যায় এবং ৭০ ভাগ প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি জীবনে একবার হলেও ইমপোস্টার সিন্ড্রোম এর প্রভাব অনুভব করে।
ইমপোস্টার সিন্ড্রোম কি ডায়াগনোজ করা যায়?
সত্যি বলতে, ইমপোস্টার সিন্ড্রোম অফিসিয়াল ভাবে সাইকেয়াট্রিস্টে ডায়াগনোসিস এর অন্তর্ভুক্ত নয়। তবে যারা এই সিন্ড্রোমে ভুগেন তারা বেশিরভাগ সময়ই চিন্তিত থাকেন ও ডিপ্রেশনে থাকেন।
ইমপোস্টার সিন্ড্রোম থেকে কিভাবে মুক্তি পাওয়া যায়?
এজন্য ব্যক্তিকে তার জীবনের উদ্দেশ্যের প্রতি এককেন্দ্রিক (Focused) হতে হবে। আশেপাশে কি করেছে, কে কি বলেছে সেদিকে নজর না দিয়ে নিজেকে উদ্যমী হতে হবে। সবকিছুতে পারফেকশনিজম মনোভাব হ্রাস করতে হবে এবং নিজের অন্তরের কথাগুলো খুব কাছের কেউ কিংবা পরিবারের সাথে শেয়ার করতে হবে। এতে করে এই সিন্ড্রোম এর প্রভাব কিছুটা হলেও হ্রাস পাবে।