Nishat Tasnim -
ক্যাপসুলের ওপরের আবরণটি সাধারণত জিলাটিন নামে একটি রাসায়নিক দিয়ে তৈরি, যা আদতে প্রোটিন। এই আবরণ আবার শক্ত বা স্থিতিস্থাপক হতে পারে। ক্যাপসুলের ভেতরের উপাদান কঠিন (পাউডার) এবং তরল বা অর্ধতরল হলে বাইরের আবরণটি যথাক্রমে শক্ত জিলাটিন এবং স্থিতিস্থাপক জিলাটিন হয়। ক্যাপসুল আবরণের দৃঢ়তা কমাতে জিলাটিনের সঙ্গে গ্লিসারিন বা সরবিটল, রঙিন করার উপাদান, প্রিজারভেটিভ, লুব্রিকেন্ট, ডিসইন্টিগ্র্যান্টস ইত্যাদি মিশ্রিত থাকতে পারে। এ ছাড়াও এই আবরণ উদ্ভিজ্জ পলিস্যাকারাইড ও তার ডেরিভেটিভ দিয়েও তৈরি হতে পারে।
আমরা যে ঔষধগুলো বাজার থেকে কিনি তার মধ্যে বিভিন্ন ধরণের ঔষধ বিভিন্ন রূপে পাই।যেমনঃ ট্যাবলেট,ক্যাপসুল,সিরাপ,সাসপেনশন,সাপোজিটরি,ইনজেকশন,ইনহ্যালার আরো অনেক অনেক কিছু।এগুলো কে বলা হয় ঔষধের ডোজেস ফর্ম(Dosage form)।ক্যাপসুলের ক্ষেত্রে ক্যাপসুল শেলের ভিতর ঔষধ পাউডার অথবা ক্ষুদ্র দানা রূপে পাওয়া যায়।প্রশ্নকর্তা যদি ক্যাপসুলের উপরের অংশ বলতে এই ক্যাপসুল শেলকে ই বুঝিয়ে থাকেন তাহলে ক্যাপসুলের শেলের গাঠনিক উপাদান সম্পর্কে এখন কিছু বলি।
সাধারণত বাজারে দুই ধরণের ক্যাপসুল পাওয়া যায়।সেগুলো হলঃ
১। হার্ড শেলড ক্যাপসুল(Hard shelled capsule): এ ধরণের ক্যাপসুলের শেলের ভিতর পাউডার বা ক্ষুদ্র দানা জাতীয় কঠিন উপাদান থাকে।
২। সফট শেলড ক্যাপসুল(Soft shelled capsule): এ ধরণের ক্যাপসুলের শেলের ভিতর তরল বা তেল জাতীয় উপাদান থাকে।ভিটামিন ক্যাপসুলের ক্ষেত্রে এ ধরণের শেলের ব্যবহার বেশি লক্ষ্য করা যায়।
হার্ড বা সফট দুই ধরণের ক্যাপসুলের ক্ষেত্রেই ক্যাপসুল শেল তৈরির গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান হল জেলিং এজেন্ট। ঔষধ শিল্পের অতি পরিচিত ও বহুল ব্যবহৃত একটি জেলিং এজেন্ট এর নাম জেলাটিন।জেলাটিন হল প্রাণিদেহ থেকে প্রাপ্ত কোলাজেন থেকে তৈরি একটি বর্ণহীন,গন্ধহীন, স্বচ্ছ উপাদান।শুধু ঔষধ শিল্পে না, জেলি জাতীয় যে কোন খাবার বা পুডিং এ ও এটি ব্যবহার করা হয়।জেলাটিন ছাড়াও উদ্ভিজ্জ পলিস্যাকারাইড কারাজেনান বা কারাজেনিন থেকে ও ক্যাপসুল শেল তৈরি হতে পারে।ক্যাপসুল শেল তৈরির জন্য জেলিং এজেন্ট ছাড়া ও অন্যান্য উপাদান যেমন গ্লিসারিন,সরবিটল ইত্যাদির মাধ্যমে ক্যাপসুল শেলের কাঠিন্য নিয়ন্ত্রণ করা হয়।এছাড়া এতে কালারিং এজেন্ট,প্রিজারভেটিভস ইত্যাদিও মেশানো হয়ে থাকে।
ক্যাপসুলের জেলাটিন শেল পাকস্থলিতে উপস্থিত হাইড্রোক্লোরিক এসিডের উপস্থিতিতে গলে যায় এবং শেল থেকে ঔষধের প্রধান ঔষধী উপাদান বা একটিভ ইনগ্রিডিয়েন্টস বেরিয়ে এসে শরীরে প্রভাব বিস্তার করে।