Nishat Tasnim-
ক্রেতারা মধুর জমাকে ভেজাল মনে করেন। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে মধু জমে যাওয়া একটি প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া। তরল থেকে দানাদার অর্ধ-কঠিন অবস্থায় যাওয়ার এ প্রক্রিয়াকে গ্র্যানুলেশন (granulation) বা কঠিন বাংলায় স্ফটিকায়ন বলে। জমে যাওয়া মধুর একটি স্বাভাবিক রূপ। এতে মধুর গুণগতমানের কোন পরিবর্তন হয়না। মৌচাক থেকে আলাদা করার পর মধু যত দ্রুত জমে, চাকের ভেতর মোমের কোষে থাকলে তত দ্রুত জমে না। জমে যাওয়া মধু হালকা গরম পানিতে কিছুক্ষণ চুবিয়ে রাখুন অথবা কিছুক্ষণ রোদের মধ্যে রাখুন।
মধু হলো একটি ঘন শর্করা দ্রবণ। সাধারণত এতে ৭০% এর বেশি শর্করা বা কার্বোহাইড্রেট ও ২০% এর কম পানি থাকে। স্বাভাবিকভাবে পানিতে যে পরিমাণ চিনি দ্রবীভূত হয়, মধুতে তার চেয়ে অনেক বেশি পরিমাণে চিনি থাকে। মধুতে চিনির মাত্রাতিরিক্ত উপস্থিতি দ্রবণকে অস্থিতিশীল করে। একারণেই মধুর জমাট বাধা শুরু হয়। পানি থেকে গ্লুকোজ আলাদা হয়। গ্লুকোজ স্ফটিক আকারে জমতে থাকে। আর দ্রবণটি আস্তে আস্তে সাম্যাবস্থার দিকে যায়। এখন প্রশ্ন আসতে পারে, একই সময়ে কেনা দুটো মধুর মধ্যে একটা মধু জমে যাচ্ছে, আরেকটা যাচ্ছে না কেন?
মধুর শর্করাতে প্রধানত দুটি অণু থাকে, যা হচ্ছে- গ্লুকোজ ও ফ্রুক্টোজ। যদি কোনো মধুতে গ্লুকোজের পরিমাণ ফ্রুক্টোজের চেয়ে বেশি থাকে তখন সে মধু অতি দ্রুত দানাদার হয়। আবার মধুতে পর্যাপ্ত পোলেন এবং বুদবুদ থাকলেও সে মধু সহজে দানাদার হয়। গ্লুকোজ ও ফ্রুক্টোজের পরিমাণ একেক মধুতে একেকরকম থাকে। সাধারণভাবে ফ্রুক্টোজ ৩০-৪৪% এবং গ্লুকোজ থাকে ২৫-৪০%। কিছু মধু পুরোপুরি জমে যায় (সরিষা ফুলের মধু)। আবার কিছু মধুতে নিচে স্ফটিক আর উপরে তরলের একটি স্তর থাকে আবার কিছু মধু নাও স্ফটিক (জমতে পারে) হতে পারে। মধুর প্রকারের ভিত্তিতে স্ফটিকের আকারও বিভিন্ন রকম হয়।
তথ্যসূত্রঃ খাটিমধু ডট কম