সূর্য হল বিশাল একটি গ্যাস পিণ্ড। এতে হাইড্রোজেনের অবিরাম জ্বলনের মাধ্যমে হিলিয়াম তৈরি হয়ে চলেছে। এই জ্বলনকে বৈজ্ঞানিক শব্দে বললে বলা যেতে পারে নিউক্লিয় বিক্রিয়া। আমরা জানি সূর্য নিজের চারিদিকে প্রবলগতিবেগে ঘোরার পাশাপাশি সমস্ত সৌরজগৎ নিয়ে সেকেন্ডে ১৯.২ কিলোমিটার বেগে মহাশুন্যের ভেতর দিয়ে গমন করে। এই সময় মহাকর্ষগত টানের ফলে সূর্যের গ্যাস-কণিকাগুলো প্রবল বেগে ছুটে চলার সময় কনিকায় কনিকায় ঘর্ষণের ফলে প্রচণ্ড উত্তাপের সৃষ্টি হয়। এই উত্তাপের ফলেই ফিউশান প্রক্রিয়ায় হাইড্রোজেন নিউক্লিয়াস একীভূত হয়ে হিলিয়াম নিউক্লিয়াসে রূপান্তরিত হয়। এই প্রক্রিয়ায় হিলিয়াম তৈরি ক্ষেত্রে চারটি হাইড্রোজেন নিউক্লিয়াস থেকে একটি হিলিয়াম নিউক্লিয়াসের রূপান্তর ঘটে। এই নিউক্লিয় রূপান্তর প্রক্রিয়ার সময় কিছু পরিমাণ বস্তু খোয়া যায়। যেমন- এক কিলোগ্রাম হাইড্রোজেন রূপান্তরিত হয়ে ৯৯২ গ্রাম হিলিয়াম তৈরি করে। এই বাকি আট গ্রাম যে বস্তু খোয়া যায় তা রূপান্তরিত হয় শক্তিতে। এই শক্তিই হল আলো। এই আলোর মধ্যে তাপ থেকে শুরু করে অনেক কিছু বিদ্যমান। এভাবেই সূর্যের মধ্যে প্রতি সেকেন্ডে ৪০ লাখ টন বস্তু খোয়া যায় এবং এ থেকে প্রতি সেকেন্ডে ৩.৭ লাখ কোটি ওয়াট শক্তি বিকীর্ণ হয়। প্রতি সেকেন্ডে সূর্য হতে এই বিপুল পরিমাণ আলোর খুব নগণ্য পরিমাণ আমরা পেয়ে থাকি। পৃথিবীর যে অংশে সূর্যের আলো পড়ে সেখানে প্রতি সেকেন্ডে যে পরিমাণ আলো আমরা গ্রহণ করি তার পরিমাণ প্রতি সেকেন্ডে সূর্যের উৎপন্ন হওয়া আলোর দুইশো কোটি ভাগের একভাগ। সূর্যের স্থিতিঅবস্থা চলাকালীন সময়ে অর্থাৎ আরো কয়েক হাজার কোটি বছর ধরে এই আলো এভাবেই উৎপন্ন হয়ে যাবে।