ঋতুস্রাব (period) হওয়ার সময় জরায়ু (Uterus) সঙ্কুচিত হয়ে যায় এবং জরায়ুর দেওয়াল থেকে অনেকটা সরে যায় ও যোনিপথ (vagina) মাধ্যমে রক্ত প্রবাহ বের হয়। জরায়ু কুঞ্চিত হয়ে যাওয়ার ফলেই পেটে ব্যথা বা কোমরে ব্যথা হয়ে থাকে ঋতুস্রাব শুরু হওয়ার প্রথম দু’দিন। এই সময় বেশিরভাগ মহিলাদের তলপেটে ব্যথা হয়। অনেকেই আবার তলপেট ছাড়াও কোমর, থাই ও কাফ পেশির (cuff muscle) ব্যথাও অনুভব করেন।
মেয়েদের মাসিকের সময় তলপেটে ব্যথা আমাদের দেশে একটা সাধারণ ব্যাপারই বলতে হয়। তবে চিকিৎসাবিজ্ঞানের পরিভাষায় এ ব্যাথার পরিমাণ যখন এমন হয় যে তা দৈনন্দিন স্বাভাবিক কাজকর্ম ব্যাহত করে, তখনই কেবল এটাকে অসুস্থতা বা ডিজমেনোরিয়া বলে গণ্য করা হয়।
ডিজমেনোরিয়া ২ প্রকার হয়ে থাকেঃ
প্রাইমারী ডিজমেনোরিয়া ও সেকেন্ডারি ডিজমেনোরিয়া।
দুধরনের ডিজমেনোরিয়ার মধ্যে এক ধরনের হয় যেটি সাধারণত ১৮ থেকে ২৫ বছর বয়সি মেয়েরা বেশি ভোগেন। একে বলা হয় প্রাইমারি ডিজমেনোরিয়া। এর তেমন সঠিক কারণ নেই। এটি সাধারণত মা হবার আগে অবধি হয়। এইসময় আমাদের শরীরে ডিম্বাণু তৈরি হয়। এই ডিম্বাণু গুলি গর্ভধারণের জন্য তৈরি থাকে। শুক্রাণুর সঙ্গে মিলিত হলেই গর্ভধারণ সম্ভব। তাই মিলিত না হলে, শুক্রাণুর অভাবে এই ডিম্বাণু গুলি নষ্ট হয়ে যায়। এবং একটি সময় অন্তর এগুলি বেরতে থাকে। ক্রমাগত এইভাবে নষ্ট হবার ফলে পেট ব্যাথা করতে থাকে। তাই একবার স্বাভাবিক গর্ভধারণ হলে এই ব্যাথা কমে যায়।
এছাড়াও কিছু কারণ যেমন, পিরিয়ড হলেই ব্যাথা নিয়ে অকারণ চিন্তা, এছাড়াও বিভিন্ন কারণে মানসিক চাপ, অশান্তি, ভাঙ্গা স্বাস্থ্য এসব কারণে হয়। এছাড়াও এই সময় শরীর মন চায় উপযুক্ত বিশ্রাম। খুব বেশি কাজের চাপ থেকে মনে বিরক্তি আসে, সেটিও ব্যাথার একটি কারণ। সাধারণত পিরিয়ড শুরু হবার প্রথম বা দ্বিতীয় দিন অবধি ব্যাথা থাকে তারপর কমে যায়।
সেকেন্ডারি ডিজমেনোরিয়া
এছাড়াও একধরনের হয় যাকে বলা হয় সেকেন্ডারি ডিজমেনোরিয়া। অনেক গাইনি রোগের জন্যও ব্যাথা হবার একটি সম্ভবনা থাকে। যেমন পেটে যদি ইনফেকশন হয়, বা কোন জন্মগত ত্রুটি থাকলে হয়। এছাড়াও জরায়ুতে টিউমার হলে হয়। এক্ষেত্রে ব্যাথাও হয় অন্য রকম। পিরিয়ড শুরু হবার দু তিন দিন আগে থেকেই ব্যাথা শুরু হয়। আবার কমে গেলে বাথাও কমে যায়। এর তেমন কোন আলাদাভাবে চিকিৎসা করা যায় না। শরীরে কোন অসুবিধা বা কোন রোগ থাকলে সেটা বুঝতে হবে। তার চিকিৎসা করাতে হবে। তাহলেই ব্যাথা কমবে।
সাধারণত এই কারণ গুলির জন্যই পিরিয়ডে পেটে ব্যাথা হয়। এছাড়া আর তেমন বিশেষ কোন কারণ নেই। এটি একটি সাধারন ব্যাপার তাই ভয়ের কিছু নেই। কিন্তু অতিরিক্ত হলে একবার চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া দরকার।
Source : Kalerkonto , priyo . ntv , dusbus