মানবদেহে প্রায় প্রতিটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের আলাদা আলাদা কাজ থাকে। যেকোনো একটি অঙ্গ হারালে তা মানবদেহের স্বাভাবিক ক্রিয়া ব্যাহত করে। মানবদেহের যেসব অঙ্গের প্রকৃতপক্ষে কোন কাজ নেই তাদের বলা হয় vestigiality। বিশ্বাস করা হয় যে মানুষের পূর্বপুরুষের এইসব অপ্রয়োজনীয় অঙ্গ এক সময়ে প্রয়োজন ছিলো যদিও সময়ের সাথে সাথে এইসব অঙ্গ নিজেদের মূল কাজ করার ক্ষমতা হারিয়েছে। অনেকে আবার বিশ্বাস করেন এইসব স্ট্রাকচার মানব বিবর্তনের উদাহরণ, অন্যরা বিশ্বাস করেন যে এইসব অঙ্গের কাজ আছে কিন্তু এখনও তা আবিষ্কৃত হয়নি। Vestigiality এর কিছু উদাহরণ :
- আক্কেল দাঁত
- অ্যাপেন্ডিক্স
- দেহের চুল
কিছু মানুষের মাঝে আবার Vestigial Tail লক্ষ্য করা যায়। যদিও বিরল তবে মানুষের দৃশ্যমান লেজের ইতিহাস ইতোমধ্যে নোট করা হয়েছে।
কারণ : মানবদেহে লেজ বিরল হলেও ভ্রূনাবস্থার শিশুর দেহে অস্থায়ী লেজের মতো গড়ন লক্ষ্য করা যায়। এই ধরনের লেজ গর্ভকালের ৫ থেকে ৬ সপ্তাহের মাঝে দেখা যায় এবং এতে ১০ থেকে ১২ টি কশেরুকা থাকে। বেশিরভাগ মানুষ লেজ নিয়ে জন্মগ্রহণ করেনা কারণ এই লেজের মতো গড়ন ভ্রুণের বিকাশের সাথে ধীরে ধীরে বিলুপ্ত হয়ে কক্সিক্স গঠন করে। গর্ভাবস্থায় ৮ম সপ্তাহের মধ্যে লেজ বিলুপ্ত হয়ে যায়। কিছু মানুষের ক্ষেত্রে ভ্রণ ক্রমবিকাশকালে কিছু ত্রুটির জন্য লেজ থেকে যেতে পারে। কিছু মানুষ আবার Pseudotail নিয়ে জন্মগ্রহণ যা মূলত জন্মগত ত্রুটির জন্য সৃষ্টি হয় এবং অনেক ক্ষেত্রে কক্সিক্স এর অংশ হিসেবে থাকে। অন্যদিকে True Vestigial Tail এর কারণ এখনও অজানা হয়েছে।
Vestigial Tail শিশুর জন্মের পর কক্সিক্স থেকে আলাদা থাকে। এমন লেজে হাড় না থাকলেও কেবল ত্বক থাকে এবং পাশাপাশি থাকে স্নায়ু, রক্ত, টিস্যু, মাংসপেশী ইত্যাদি। কিছু মানুষ আবার লেজ নাড়াতেও পারেন। এই ধরনের লেজ প্রায় ৫ ইঞ্চি পর্যন্ত দীর্ঘ হতে পারে। এই ধরনের লেজে হাড় না থাকার ব্যথা হয়না তবে সিওডোটেইল এর ক্ষেত্রে হাড় থাকার ব্যথা হয়। নবজাতক জন্মের সাথেই সার্জারীর মাধ্যমে এমন লেজ অপসারণ করা যায়।
© নিশাত তাসনিম
রেফারেন্স : https://www.healthline.com/health/vestigial-tail#removal