বসা থেকে বা শোয়া অবস্থা থেকে উঠে দাঁড়ালে আমাদের অনেকেরই মাথা ঘুরে উঠে। এমন সমস্যায় আমরা অনেকেই ভুগি। এই সমস্যা মাত্র কয়েক সেকেন্ডের জন্য স্থায়ী হয় বলে সাধারণত এটি নিয়ে তেমন মাথাও ঘামাই না আমরা। বসা থেকে উঠে দাঁড়ালে হঠাৎ মাথা ঘুরানোর কিছু কারণ :
১. আপনি বসে থাকার মানে হলো শরীরকে গুটিয়ে নেওয়া। বসে থাকা অবস্থায় আপনার শরীরে তুলনামূলকভাবে অধিক বক্রাকারে রক্ত প্রবাহিত হতে থাকে। হঠাৎ করে দাড়িয়ে গেলে শরীর সোজা হয়ে যায়, কিন্তু বক্রাকারে চলিত রক্তপ্রবাহ শরীরের হঠাৎ সরল আকারে পরিবর্তনের সাথে খাপ খাইয়ে নিতে পারেনা, অর্থাৎ রক্তপ্রবাহ নিচ থেকে স্বাভাবিক গতিতে উপরে গিয়ে পৌঁছাতে পারেনা। ফলে শরীরের উপরের অংশ অর্থাৎ মাথায় ক্ষণিকের জন্য রক্ত প্রবাহ হ্রাস পায়। একারনেই বসা থেকে দাড়িয়ে পড়লে মাথা ঘুরায়।
২. এই সমস্যার সঙ্গে নার্ভ বা স্নায়ুর সম্পর্ক আছে। অনেকেরই স্নায়ুর সমস্যার কারণে হঠাৎ শোয়া অবস্থা থেকে উঠলে বা বসা অবস্থা থেকে উঠলে মাথা ঘুরে যায়। কয়েক সেকেন্ডের জন্য চোখে অন্ধকার দেখেন অনেকে। নার্ভের সমস্যা থেকেই এটি হতে পারে বলে জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। তাই এটিকে অবহেলা না করাই ভালো। আপনার যদি এই সমস্যা থেকে থাকে তাহলে এখনই ডাক্তারের পরামর্শ নিন। কারণ নার্ভের সমস্যা অবহেলা করলে তার থেকে ভবিষ্যতে বড় বিপদ হতে পারে। সাইন্স বী
৩. অনেকের সঙ্গে আবার ব্লাড প্রেশারের কারণে এই ঘটনা ঘটে থাকে। রক্ত চাপ কম থাকলে অনেক সময় হঠাৎ করে উঠে দাঁড়ালে মাথায় সঠিক পরিমাণ রক্ত পৌঁছায় না। যার ফলে অনেকের এই মাথা ঘোরার সমস্যা হতে পারে। তাই আপনার এই সমস্যা থাকলে নিজের প্রেশার চেক করিয়ে নিন তারপর ডাক্তারের পরামর্শ মতো প্রেশার স্বাভাবিক করার জন্য উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করুন।
৪. ভার্টিগো থাকলেও হঠাৎ উঠে দাঁড়ালে মাথা ঘুরে যেতে পারে। অনেকের ক্ষেত্রে উচ্চতা থেকে ভার্টিগো হয়। পাহাড়ে বেড়াতে গেলে অনেকের এই সমস্যা দেখা যায়। বেশি উঁচু বাড়িতে উঠলেও অনেকের এই সমস্যা হয়। অনেকের লিফটে হয়। এটিও একপ্রকার স্নায়ুর সমস্যা। এই ক্ষেত্রেও ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। সাইন্স বী
৫. কোনও দুর্ঘটনার ফলে যদি কেউ দীর্ঘক্ষণ অজ্ঞান থাকে, তাহলে সেই সময়টার জন্য মাথার স্নায়ুতন্ত্রে স্থায়ী সমস্যা তৈরি হতে পারে। সেই সমস্যা থেকেও এই রোগ দেখা দিতে পারে।
৬. মাথা ঘোরাটাকে মস্তিষ্কের বিপদসংকেত হিসেবেই ধরা হয়ে থাকে, যা শরীরের বিভিন্ন অংশে নানাভাবে প্রকাশ ঘটায়। কারো ক্ষেত্রে হৃদপিণ্ডের বেশি উঠা-নাম, রক্তচাপ বেড়ে যাওয়া, আবার কারো কারো হয়ত চোখের সমস্যা, অর্থাৎ অস্পষ্ট দেখা, মাথাব্যথা, বমি বা বমিভাবও হয়ে থাকে।
তথ্যসূত্র : কালের কন্ঠ