Christopher Prometheus Rivhu-
আমাদের অনেকের ভেতর এই প্রবণতা আছে,শরীরে ক্ষত হলে মুখ থেকে লালা এনে লাগিয়ে দেওয়া।কিন্তু ভেতরে ভেতরে প্রশ্ন থেকেই যায় যে,আসলে এটা কতটুকু কার্যকরী।
প্রথমে লালায় কি আছে সেটা দেখে আসতে হবে । লালায় টিস্যু প্রোমোটিং ফ্যাক্টর,লাইসোজাইম,এ্যান্টিবডি পাওয়া যায়।আমাদের মুখের ভেতর প্রতিনিয়ত অসংখ্য জীবাণুর সংস্পর্শে আসে,এবং সেগুলো ধ্বংসও হয়।তাই স্বাভাবিক ভাবেই ধরে নেওয়া যায় ,ক্ষতস্থানে লালা লাগালে তাড়াতাড়ি সেরে যাবে।হ্যা,সারে তবে এটা ক্ষতস্থানের গভীরতা এবং আকারের উপর নির্ভরশীল।একদল বিজ্ঞানীরা গবেষণা করে দেখিয়েছেন,লালায় নাইট্রেট থাকে যা ক্ষতস্থানের সংস্পর্শে এসে ভেঙে গিয়ে নাইট্রিক অক্সাইড এ পরিণত হয়,যা জীবাণু ধ্বংসে ভূমিকা রাখে। অন্য গবেষণায় দেখা গেছে,লালায় থাকা টিস্যু প্রোমোটিং ফ্যাক্টর ক্ষতের টিস্যুর বিকাশে এবং হিস্টাটিন নামক প্রোটিন ব্যাকটেরিয়া ধ্বংসে ভূমিকা রাখে।
আমাদের মনে রাখতে হবে,লালার কার্যকরীতা ক্ষতস্থানের গভীরতা এবং আকারের উপর পুরোপুরি নির্ভরশীল !খুব বড় বা গভীর ক্ষততে লালা কাজ করে না,বা খুব কম কাজ করে
এই প্র্যাকটিসের কিছু স্বাস্থ্যগত ঝুকিও আছে।অনেক সময় ছোট ক্ষতে লালা লাগিয়েও কাজ হয় না,এটা ডায়বেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে বেশি হয় ।আনকন্ট্রোলড ডায়বেটিস পায়ের নার্ভ এর ক্ষতি করে,ইমিউন রেসপন্স কমিয়ে দ্যায়।ফলে ক্ষত গভীর থেকে গভীরতর হতে থাকলেও রোগী কোন রেসপন্স পায় না।সেখানে পরে আক্রমণ করে aerobic gram-positive cocci, mainly Staphylococcus species একসময় এটা গ্যাংগ্রিন দিয়ে শেষ হয়।
এছাড়া আমাদের মুখে কিছু ব্যাকটেরিয়া থাকে যারা আপাতত নিরীহ হলেও,বাইরের পরিবেশে গিয়ে ফিরে এলে ভয়ংকর হয়ে ওঠে।বিজ্ঞানীরা কেস পেয়েছেন এমন ইনফেকশন এর যা সাধারণত সেসব ব্যাকটেরিয়া দিয়ে হয়েছে যারা খুবই নিরীহ,কিন্তু দুর্বল ইমিউন সিস্টেম এর সুযোগ নিয়ে গ্যাংগ্রিন ঘটিয়ে দিয়েছে ! তাই বলা হয় , It is well known that the bite of a human can often be more serious than the bite of an animal (assuming the animal is free of rabies).
যাই হোক,বিজ্ঞ ডাক্তারদের পরামর্শ হল,ক্ষত যেমনই হোক না কেন,বড় বা ছোট,সেটাকে সাবান ,পানি দিয়ে ভাল করে পরিষ্কার করে শুকিয়ে ফেলতে হবে।