পেইন কিলার বলতে যেটা বোঝানো হয় তা হল NSAID অর্থাৎ non steroidal anti-inflammatory drugs। এই প্রসঙ্গে একটা কথা বলে রাখি যে, প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধ জ্বরের সাথে সাথে ব্যাথা উপশমের জন্য ব্যবহার করা হলেও প্যারাসিটামল কিন্তু পেইন কিলার বা NSAID নয়। তাই দুটোর ক্ষেত্রে মোড অফ অ্যাকশনের মধ্যেও যথেষ্ট পার্থক্য আছে।
আমাদের শরীরে সর্বত্র স্নায়ু বা নার্ভ এন্ডিংস উপস্থিত। কোনো জায়গায় ব্যাথা লাগলে সেখানে উপস্থিত কিছু নার্ভ সেই ব্যাথাকে সেন্স করতে পারে এবং তৎক্ষণাৎ ব্রেনকে স্নায়ুতন্ত্রের মাধ্যমে সিগন্যাল প্রেরণ করে। আঘাত প্রাপ্ত টিস্যুর কোষগুলি prostaglandin নামে একটি রাসায়নিক পদার্থ নিঃসরণ করে এবং আমাদের দেহের নার্ভ এই রাসায়নিকটির প্রতি যথেষ্ট সেনসিটিভ। তাই prostaglandin রিলিজ হওয়ার সাথে সাথে তা নার্ভ এন্ডিং এর মাধ্যমে ব্রেনে পৌঁছায়। এবং আমাদের ব্রেনও মুহূর্তে সচেতন হয়ে যায় যার বহিঃপ্রকাশ হিসাবে ব্যথার অনুভব হয়। শুধুমাত্র আঘাতের উপস্থিতিই নয়, আঘাত কতটা গুরুতর অথবা আমাদের দেহে কোথায় তার অবস্থান সবকিছুর তথ্যই ব্রেনে পৌঁছে দেয় আমাদের স্নায়ুতন্ত্র যার ওপর নির্ভর করে ব্যথার তীব্রতা।
পেইন কিলার আমাদের শরীরে প্রবেশ করে আঘাতপ্রাপ্ত কোষগুলি থেকে prostaglandin এর নিঃসরণকে কমিয়ে দিতে চায়। ফলে নার্ভ আমাদের ব্রেনে আর ব্যাথা সংক্রান্ত কোনো বার্তা প্রেরণ করতে পারে না। অন্যদিকে প্যারাসিটামল সরাসরি ব্রেনে কাজ করে ব্যথার অনুভূতিকে কমানোর চেষ্টা করে। যেহেতু পেইন কিলার ব্রেইন এবং আঘাত প্রাপ্ত কোষ, এই দুইয়ের সংযোগটাকেই বিচ্ছিন্ন করে দেয় তাই ব্যাথা কমানোর ক্ষেত্রে পেইনকিলার প্যারাসিটামলের থেকে অনেক বেশি কার্যকরী।
ক্রেডিট: শ্রীময়ী চক্রবর্তী