ভয় মানুষের প্রাচীন অনুভূতি গুলোর একটি। সাধারণত কোনো কিছু থেকে বিপদের বা ক্ষতির আশঙ্কা হলে আমাদের যে অনুভূতি হয়, তা–ই প্রধানত ভয়।
বেশিরভাগ সময় মানুষ ভয় পেলে ‘ফাইট অর ফ্লাইট’ অর্থাৎ ভীতিকর পরিস্থিতির মুখে পড়ে সেটা সামলানোর চেষ্টা করে অথবা সে পরিস্থিতির মুখে পালিয়ে যায় বা সম্পূর্ণ এড়িয়ে যায়। এ সময় মানুষের হৃদপিণ্ডের গতি বেড়ে যায়, যা ক্রমেই বাড়তে থাকে। তবে, অনেকেই ওই পরিস্থিতি সাহসের সঙ্গে মোকাবিলা করে। কেউ আবার ঘটনার আকস্মিকতায় চমকে যান। লাফিয়ে ওঠেন।
এর কারণ মূলত যে ধরনের ঘটনা ঘটতে যাচ্ছে সে সম্পর্কে প্রস্তুতি নেয়ার মতো যথেষ্ট সময় পায়নি আপনার মস্তিষ্ক, কিন্তু আচমকা এবং বিকট ভাবেই সে পরিস্থিতির সামনে পড়েছেন আপনি।
আমাদের ভয় পাবার পেছনে আমাদের মস্তিষ্কের টেম্পোরাল লোবের ক্ষুদ্র আমন্ড আকৃতির একটি অংশ দায়ী। আমরা যখন ভীতিমূলক জিনিস দেখি, শুনি বা চিন্তা করি তখন আমাদের মস্তিষ্কের এই ‘এমিগডালা’ নামক অংশটি কাজ করতে শুরু করে। এই এমিগডালা থেকে নিঃসৃত হয় স্ট্রেস হরমোন ও তা সিম্প্যাথেটিক নার্ভাস সিস্টেমকেও সক্রিয় করে তোলে।
এমিগডালা থেকে এক ধরনের বিপদ সংকেত শরীরের সব অংশে ছড়িয়ে পড়ে। এটি আমাদের মস্তিষ্কের আরো দুটি অংশ, হিপ্পোক্যাম্পাস ও প্রিফ্রন্টাল কর্টেক্সকে সক্রিয় করে, ফলে আমাদের মস্তিষ্ক ভয় পাওয়া মূহুর্তে আরো বেশি সক্রিয় ও সতর্ক ভাবে সিদ্ধান্ত নিতে পারে এবং পরিস্থিতি সামাল দিতে সক্ষম হয়।
ইউনিভার্সিটি অব ম্যানচেস্টারের মনোবিজ্ঞানী এবং ভীতি সংক্রান্ত এক বইয়ের লেখক ড. ওয়ারেন ম্যানসেল বলছেন, এটা অভিব্যক্তিমূলক, এটা জীববিজ্ঞানের সঙ্গে সম্পর্কিত এবং এর মূল ব্যাপার হচ্ছে টিকে থাকা। যে কোনো ধরনের ভীতি বা ঝুঁকির মুখে পালানো বা ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য আমাদের শরীরের একটা প্রস্তুতি থাকা দরকার।
সমাজবিজ্ঞানী ড. মারগী কের বলেছেন, ভয় পেলে ভয়ের কারণ দ্রুত শনাক্ত করা এবং পরিত্রাণের উপায় বের করা জরুরি। এটাই মানুষকে বাঁচিয়ে রাখে।
তথ্যসূত্র: BBC, The conversation, Google.