অবচেতন মন সম্পর্কে জানার আগে আমরা আমাদের মন সম্পর্কে জেনে নিই। আমাদের মন দুটি ভাগে বিভক্ত।একটি অংশের নাম সচেতন মন এবং আরেকটি অংশের নাম অবচেনত মন।সম্পূর্ণ মনের প্রায় ১০% হচ্ছে সচেতন মন এবং ৯০% হলো অবচেতন মন(মতান্তর রয়েছে)।
#সচেতন মন এবং #অবচেতন মন কী?
Roger Sperry নামক একজন গবেষক আবিস্কার করেন যে মস্তিষ্কের ডান এবং বাম অংশ উভয়েরই নিজস্ব বিশেষত্ব রয়েছে। তিনি গবেষণা করে বের করেন যে মস্তিষ্কের বাম অংশ শৃঙ্খলা এবং যুক্তিবিদ্যা বিষয়ক চিন্তায় ব্যবহৃত হয়। অপরদিকে ডান অংশ মুক্ত এবং সৃষ্টিশীল চিন্তায় সহায়তা করে। Sperry তাঁর এই আবিস্কারের জন্য পরবর্তীতে নোবেল পুরস্কার পান। মস্তিষ্কের বাম অংশঃ শৃঙ্খলাবদ্ধ, যৌক্তিক এবং বিশ্লেষণধর্মী।
মস্তিষ্কের ডান অংশঃ মুক্ত, আবেগতাড়িত এবং সৃষ্টিশীল।
মস্তিষ্কের এই বাম অংশটিই হলো আপনার সচেতন মন এবং ডান অংশটি অবচেতন মন।
নিচের পয়েন্ট দুটি মনের মধ্যে গেঁথে নিন:
আমরা প্রায় সম্পূর্ণরূপে আমাদের অবচেতন মন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হই। অবচেতন মন যুক্তি বোঝে না।অর্থাৎ অবচেতন মনের কাছে কোন নেগেটিভ বা পজিটিভ নেই। তার কাছে সবই সমান। সে সবকিছু্কেই পজিটিভ হিসেবে গ্রহণ করে।
আসুন অবচেতন মনের যুক্তি না বোঝার ব্যাপারটা আমরা দুটি উদাহরণের মাধ্যমে ক্লিয়ার হওয়ার চেষ্টা করি:
আচ্ছা আপনি তো অনেক সিনেমা দেখেছেন।কখনো কি এমন হয়েছে যে সিনেমার মধ্যে করুণ কাহিনী দেখে আপনি কষ্ট পেয়েছেন বা কান্না করেছেন।যেমন ধরুন সিনেমাতে নায়ক মারা যাওয়ার ঘটনায় আপনি কষ্ট পেলেন।তাহলে এখন চিন্তা করুন তো আপনি জানেন এটা নিছকই একটা সাজানো কাহিনী,তারপরেও আপনি কষ্ট পেলেন কেন?
এর উত্তর হচ্ছে আপনার সচেতন মন জানে এটি একটি সিনেমা,কিন্তু আপনার অবচেতন মন বুঝবে না যে এটি সিনেমা নাকি বাস্তব।কারণ সে তো যুক্তি বোঝে না।সে এটিকে বাস্তব বলেই ধরে নেবে এবং যেহেতু আমরা অবচেতন মন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হই তাই এসব বিষয়ে কষ্ট পাই। হরর মুভির ক্ষেত্রেও ব্যাপারটা সেইম।আপনি জানেন এটা জাস্ট একটা সিনেমা কিন্ত তারপরেও আপনি ভয় পান।
ধূমপান করা ক্ষতিকর জানা সত্বেও আপনি ধূমপান করেন কেন?
কারণ,আপনার মনের সচেতন অংশ যখন বলছে যে সিগারেট আপনার জন্য খারাপ, কিন্তু আপনার অবচেতন মন অভ্যাসটাকেই তার জন্য সত্য বলে ধরে নিয়েছে ।
তাহলে আমরা এখান থেকে আরেকটি জিনিস বুঝতে পারলাম যে,আমরা সাধারণত আমাদের অবচেতন মনকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারি না।