ভূমিকম্পের পূর্বাভাস কি পাওয়া সম্ভব? - ScienceBee প্রশ্নোত্তর

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রশ্নোত্তর দুনিয়ায় আপনাকে স্বাগতম! প্রশ্ন-উত্তর দিয়ে জিতে নিন পুরস্কার, বিস্তারিত এখানে দেখুন।

+2 টি ভোট
190 বার দেখা হয়েছে
"তত্ত্ব ও গবেষণা" বিভাগে করেছেন (1,410 পয়েন্ট)

2 উত্তর

0 টি ভোট
করেছেন (1,410 পয়েন্ট)

ভূমিকম্পের পূর্বাভাস কি পাওয়া সম্ভব?

বাস্তবতা হলো, বৈজ্ঞানিকভাবে আগে থেকেই ভূমিকম্পের পূর্বাভাস পাওয়া খুবই কঠিন।

 
যদিও একটি ঘটনা ঘটে যাবার পর প্রায়শই ভূকম্পনজনিত ডেটা বা তথ্যে মিনিটের সংকেত শনাক্ত করা যায়, তবে কী অনুসন্ধান করতে হবে সেটা বোঝা এবং পূর্বাভাস দেয়ার জন্য এটি ব্যবহার করা আরও বেশি চ্যালেঞ্জিং।
 
ইতালির রোমের সেপিয়েঞ্জা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূ-বিজ্ঞানের এবং যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়ার পেন স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ক্রিস ম্যারোন বলেন,"প্রকৃতিতে অনেক অনিশ্চয়তা থাকায় আমরা প্রায়শই বড় ভূমিকম্প হতে যাচ্ছে এমন কোনো ইঙ্গিত পাই না।"
 
অন্তত ১৯৬০ সাল থেকে ভূতত্ত্ববিদরা ভূমিকম্পের আগাম বার্তা পাওয়ার জন্য আধুনিক বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি ব্যবহারের চেষ্টা করে গেলেও, তাতে সামান্য সফলতাই পেয়েছেন।
 
ক্রিস ম্যারোন বলছেন, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এর কারণ হল বিশ্বের বিভিন্ন দিক দিয়ে যাওয়া চ্যুতিগুলোর জটিলতা।
 
এছাড়াও পৃথিবীর অভ্যন্তরে অনবরত সংঘর্ষের কারণে প্রচুর পরিমাণে আওয়াজ হয় এবং এটি বেশ গর্জন করতে থাকে। এগুলো আবার রাস্তার ট্র্যাফিক, নির্মাণ কাজ এবং দৈনন্দিন জীবনের কোলাহলের সাথে মিশে যাওয়ায় সেখান থেকে ভূমিকম্পের স্পষ্ট সংকেত বাছাই করা কঠিন হয়ে পড়ে।
 
যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ অনুসারে, একটি সত্যিকারের ভূমিকম্পের পূর্বাভাসের ক্ষেত্রে তিনটি বিষয় জরুরি- এটি কোথায় ঘটবে, কখন ঘটবে এবং কত বড় আকারের হবে।
 
সংস্থাটি বলছে, এখন পর্যন্ত কেউই নিশ্চিতভাবে এটি করতে পারে না।
 
তার বদলে ভূতত্ত্ববিদরা তাদের সেরা অনুমান দিয়ে 'প্রাকৃতিক বিপদ মানচিত্র' তৈরি করে, যেখানে তারা কয়েক বছরের সময়সীমার মধ্যে ভূমিকম্পের সম্ভাবনা হিসেব করে।
 
এগুলো সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় তোলা দালানের মান উন্নত করার মতো পরিকল্পনায় কিছুটা সাহায্য করতে পারলেও জনসাধারণকে সরিয়ে নেয়া বা নিরাপদ আশ্রয় দেয়ার মতো প্রাথমিক সতর্কতা নিতে প্রয়োজনীয় পূর্বাভাস দেয় না।
 
বেইজিংয়ের ভূমিকম্প পূর্বাভাস ইনস্টিটিউটে জিং লিউয়ের নেতৃত্বে কাজ করা একটি দল বলেছে যে এটি ২০১০ সালের এপ্রিলে ক্যালিফোর্নিয়ার বাজাতে ভূমিকম্প আঘাত হানার ১০ দিন আগে ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থলের উপরে বায়ুমণ্ডলীয় ইলেকট্রনগুলিতে বিশৃঙ্খলা দেখতে পায়।
 
ইসরায়েল ভিত্তিক আরেকটি দল সম্প্রতি দাবি করেছে যে মেশিন-লার্নিংয়ের মাধ্যমে তারা গত ২০ বছরের আয়নমন্ডলে ইলেকট্রনের পরিবর্তন পরীক্ষা করে ৮৩শতাংশ নির্ভুলতার সাথে ৪৮ ঘন্টা আগেই বড় ভূমিকম্পের পূর্বাভাস দিতে সক্ষম হয়েছে।
 
স্পষ্টভাবেই চীন আয়নমন্ডলের এই সূত্রে আশা রাখছে। পৃথিবীর আয়নমন্ডলে বৈদ্যুতিক অসঙ্গতি নিরীক্ষণ করতে ২০১৮ সালে চায়না সিসমো-ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক স্যাটেলাইট (সিএসইএস) চালু করেছে চীন। গত বছর বেইজিংয়ে চীনের ভূমিকম্প নেটওয়ার্ক সেন্টারের বিজ্ঞানীরা দাবি করেন যে ২০২১ সালের মে মাসে ও ২০২২ সালের জানুয়ারিতে চীনা মূল ভূখণ্ডে আঘাত হানার ১৫ দিন আগে আয়নমন্ডলে ইলেকট্রনের ঘনত্ব কমে গেছে।
 
"ভূত্বক এবং দুই স্তর উপরের বায়ুমণ্ডল এবং আয়নমন্ডলের মধ্যে একটি শক্তির স্থানান্তর ঘটতে পারে," বলেন চীনের ভূমিকম্প নেটওয়ার্ক সেন্টারের গবেষক মেই লি। কিন্তু তিনি বলেছেন এটি ঘটার প্রক্রিয়াটি এখনও বিতর্কিত এবং তিনি সতর্ক করেছেন, স্যাটেলাইটের তথ্য দিয়েও আসন্ন ভূমিকম্পের পূর্বাভাস দেয়ার সক্ষমতা থেকে তাদের অনুসন্ধান এখনও বেশ দূরে।
 
"আসন্ন ঘটনা কোথায় ঘটবে তার সঠিক অবস্থান আমরা এখনও নির্দিষ্ট করতে পারি না," এর ফলাফল সম্পর্কে এক গবেষণায় বলেন গবেষকরা।
 
আরও একটি জটিলতার দিকেও ইঙ্গিত করে মিজ লি বলেন- বড় ভূমিকম্পগুলো তাদের কেন্দ্রস্থল থেকে অনেক দূরের আয়নমন্ডলেও পরিবর্তন আনতে পারে, যার ফলে সঠিক অবস্থান নিশ্চিত করা আরও কঠিন হয়ে যায়।
 
 
"আয়নমন্ডলের অসংগতি একটি ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থলের পাশাপাশি অন্য গোলার্ধে চৌম্বকীয়ভাবে সংযোজিত বিন্দুর চারপাশে উপস্থিত হতে পারে, যা আসন্ন ঘটনার অবস্থান নিশ্চিত করা আরও কঠিন করে তোলে," বলেন তিনি।
 
অন্যান্য গবেষকরা বিভিন্ন সংকেতের উপর ভরসা করছেন। জাপানে কেউ কেউ পূর্বাভাসের জন্য ভূমিকম্প অঞ্চলের উপরে জলীয় বাষ্পের পরিবর্তন সম্ভব বলে দাবি করেন। পরীক্ষাগুলোতে দেখা গেছে, এই পূর্বাভাসের ৭০ শতাংশ নির্ভুল, যদিও তারা কেবল বলতে পারেন যে পরের মাসে যে কোনো সময়ে ভূমিকম্প হতে পারে। অন্যরা পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণে মিনিটের তরঙ্গ যা ভূমিকম্পের আগে ঘটে থাকতে পারে, সেটি ব্যবহারের চেষ্টা করছে।
 
কিন্তু এসব দাবি সত্ত্বেও, ভূমিকম্প হওয়ার আগে কোথায় এবং কখন হবে তা কেউই সফলভাবে ভবিষ্যদ্বাণী করতে সক্ষম হয়নি।
 
"যে ধরনের পর্যবেক্ষণ দরকার তা করার জন্য আমাদের কাছে অবকাঠামো নেই," বলেন ম্যারোন। "কোনো ত্রুটি নিরীক্ষণের জন্য আমরা ল্যাবে যে ধরণের সিসমোমিটার ব্যবহার করি তার সেট স্থাপনের জন্য ১০০ মিলিয়ন ডলার কে দেবে? আমরা জানি কিভাবে পরীক্ষাগার ভূমিকম্পের পূর্বাভাস দিতে হয়, কিন্তু আমরা জানি না এগুলো সত্যিই বাস্তব-বিশ্বের জটিল চ্যুতির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য কি না৷ উদাহরণস্বরূপ, পূর্ব আনাতোলিয়ান ফল্টটি বিশ্বের একটি জটিল অঞ্চলে রয়েছে - যা একটি সাধারণ ফল্ট বা চ্যুতি নয় বরং এখানে একগুচ্ছ জিনিস একসাথে আসছে।"
 
এমনকি আরও ভাল পূর্বাভাস দেওয়ার ক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও, তথ্য দিয়ে কী হবে তা নিয়ে এখনও প্রশ্ন রয়েছে। তথ্যের যথাযথতা না থাকা পর্যন্ত, পুরো শহর খালি করা বা বাসিন্দাদের ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের বাইরে থাকতে বলাটা যদি ভুল হয়, তবে তা ব্যয়বহুল হতে পারে। কিন্তু যদি তথ্যের উন্নতি হয় তাহলে কী ঘটতে পারে সেজন্য আবহাওয়ার পূর্বাভাসে কিছু ইঙ্গিতের ওপর নজর দিচ্ছেন ম্যারোন।
 

সোর্সঃ BBC News

0 টি ভোট
করেছেন (4,270 পয়েন্ট)

সংক্ষিপ্ত উত্তর: না, এখনও পর্যন্ত ভূমিকম্পের নির্ভুল পূর্বাভাস দেওয়া সম্ভব নয়। তবে, ভূমিকম্পের সম্ভাব্য এলাকা এবং সময় সম্পর্কে কিছু সতর্কতামূলক সংকেত দেওয়া সম্ভব।

দীর্ঘ উত্তর:

ভূমিকম্প হল পৃথিবীর ভূত্বকের একটি আকস্মিক এবং তীব্র কম্পন। এটি টেকটোনিক প্লেটের নড়াচড়ার কারণে ঘটে। ভূমিকম্পের পূর্বাভাস দেওয়া একটি অত্যন্ত জটিল কাজ, কারণ এটি অনেকগুলি কারণ দ্বারা প্রভাবিত হয়, যার মধ্যে রয়েছে:

  • টেকটোনিক প্লেটের অবস্থান এবং গতি
  • ভূত্বকের ভিতরের চাপ এবং উত্তেজনা
  • ভূমিকম্পের ইতিহাস
  • আবহাওয়া এবং অন্যান্য পরিবেশগত কারণ

বিজ্ঞানীরা বিভিন্ন পদ্ধতি ব্যবহার করে ভূমিকম্পের পূর্বাভাস দেওয়ার চেষ্টা করছেন, যার মধ্যে রয়েছে:

  • ভূকম্পন সনাক্তকরণ এবং পর্যবেক্ষণ
  • ভূত্বকের ভিতরের চাপ এবং উত্তেজনা পরিমাপ
  • ভূমিকম্পের ইতিহাসের উপর ভিত্তি করে মডেলিং

এই পদ্ধতিগুলির কিছু কিছু কিছু সফলতা অর্জন করেছে, তবে এখনও পর্যন্ত ভূমিকম্পের নির্ভুল পূর্বাভাস দেওয়া সম্ভব নয়।

২০২৩ সালে এসে, ভূমিকম্পের পূর্বাভাস দেওয়ার ক্ষেত্রে বিজ্ঞান কিছুটা অগ্রগতি করেছে। বিশেষ করে, ভূকম্পন সনাক্তকরণ এবং পর্যবেক্ষণের জন্য নতুন প্রযুক্তিগুলি ভূমিকম্পের সম্ভাব্য এলাকা এবং সময় সম্পর্কে কিছু সতর্কতামূলক সংকেত দিতে সাহায্য করতে পারে। তবে, এই সংকেতগুলি এখনও অত্যন্ত অনিশ্চিত এবং ভূমিকম্পের সম্ভাব্যতা সম্পর্কে শুধুমাত্র একটি সাধারণ ধারণা দেয়।

ভূমিকম্পের পূর্বাভাস দেওয়ার ক্ষেত্রে আরও গবেষণা চলছে। বিজ্ঞানীরা আশা করছেন যে ভবিষ্যতে আরও নির্ভুল পূর্বাভাস দেওয়া সম্ভব হবে। তবে, এটি একটি জটিল সমস্যা এবং এটি সমাধান করতে আরও অনেক বছর সময় লাগতে পারে।

আশা করি আপনি উত্তরটি পেয়েছেন। ধন্যবাদ!

সম্পর্কিত প্রশ্নগুচ্ছ

0 টি ভোট
1 উত্তর 193 বার দেখা হয়েছে
+7 টি ভোট
1 উত্তর 358 বার দেখা হয়েছে
+3 টি ভোট
1 উত্তর 386 বার দেখা হয়েছে
+13 টি ভোট
2 টি উত্তর 688 বার দেখা হয়েছে

10,772 টি প্রশ্ন

18,455 টি উত্তর

4,742 টি মন্তব্য

263,003 জন সদস্য

150 জন অনলাইনে রয়েছে
1 জন সদস্য এবং 149 জন গেস্ট অনলাইনে
  1. Tasfima Jannat

    110 পয়েন্ট

  2. JeraldLind0

    100 পয়েন্ট

  3. WhitneyWaine

    100 পয়েন্ট

  4. DFPGabriella

    100 পয়েন্ট

  5. WilsonJrx872

    100 পয়েন্ট

বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় উন্মুক্ত বিজ্ঞান প্রশ্নোত্তর সাইট সায়েন্স বী QnA তে আপনাকে স্বাগতম। এখানে যে কেউ প্রশ্ন, উত্তর দিতে পারে। উত্তর গ্রহণের ক্ষেত্রে অবশ্যই একাধিক সোর্স যাচাই করে নিবেন। অনেকগুলো, প্রায় ২০০+ এর উপর অনুত্তরিত প্রশ্ন থাকায় নতুন প্রশ্ন না করার এবং অনুত্তরিত প্রশ্ন গুলোর উত্তর দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। প্রতিটি উত্তরের জন্য ৪০ পয়েন্ট, যে সবচেয়ে বেশি উত্তর দিবে সে ২০০ পয়েন্ট বোনাস পাবে।


Science-bee-qna

সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয় ট্যাগসমূহ

মানুষ পানি ঘুম পদার্থ - জীববিজ্ঞান চোখ এইচএসসি-উদ্ভিদবিজ্ঞান এইচএসসি-প্রাণীবিজ্ঞান পৃথিবী রোগ রাসায়নিক শরীর রক্ত #ask আলো মোবাইল ক্ষতি চুল কী চিকিৎসা #science পদার্থবিজ্ঞান সূর্য প্রযুক্তি স্বাস্থ্য মাথা প্রাণী গণিত বৈজ্ঞানিক মহাকাশ পার্থক্য #biology এইচএসসি-আইসিটি বিজ্ঞান খাওয়া গরম শীতকাল #জানতে কেন ডিম চাঁদ বৃষ্টি কারণ কাজ বিদ্যুৎ রাত রং উপকারিতা শক্তি লাল আগুন সাপ মনোবিজ্ঞান গাছ খাবার সাদা আবিষ্কার দুধ উপায় হাত মশা শব্দ মাছ ঠাণ্ডা মস্তিষ্ক ব্যাথা ভয় বাতাস স্বপ্ন তাপমাত্রা গ্রহ রসায়ন উদ্ভিদ কালো পা কি বিস্তারিত রঙ মন পাখি গ্যাস সমস্যা মেয়ে বৈশিষ্ট্য হলুদ বাচ্চা সময় ব্যথা মৃত্যু চার্জ অক্সিজেন ভাইরাস আকাশ গতি দাঁত কান্না আম হরমোন বাংলাদেশ
...