খানিকটা আতঙ্ক বা ভয় থাকা খুবই স্বাভাবিক৷ তবে কেউ কেউ অকারণেই ভীত হন, আতঙ্কে থাকেন৷ এমন কি তাঁদের 'প্যানিক অ্যাটাক'ও হয়৷ বিশেষজ্ঞরা৷ সমীক্ষা বলছে, শতকরা ২০ ভাগ মানুষের জীবনের কোনো এক সময় প্যানিক অ্যাটাক হয় | তাই ভয়কে জয় করে জীবনকে সহজ করার কিছু উপায় দেওয়া হলো ঃ
১. অনুভূতি গুছিয়ে রাখুন!
মনে মনে ভাবুন আপনার কোনো বড় সমস্যা বা অসুবিধা নেই। যে কোনো পরিস্থিতির জন্য আপনি নিজেকে তৈরি রাখুন। তাহলে অকারণে যেটুকু ভয় আপনার হচ্ছে সেটা আস্তে আস্তে চলে যাবে৷ কারণ, মানসিক প্রস্তুতিই হচ্ছে জীবনের সবচেয়ে বড় প্রস্তুতি।
২. ভয় নিয়ে কথা বলুন!
প্লেনে ভ্রমন করতে অনেকেই ভয় পায়। আবার অনেকে উঁচু বা নীচের দিকে তাকালে ভয় পায়। আবার কেউবা জনগণের সামনে বক্তৃতা দিতে গিয়ে ভীষণ নার্ভাস বোধ করেন৷ এমনকি অনেকে শপিং মল বা রাস্তায় বেশি মানুষ দেখলেও আতঙ্কিত হয়ে যান৷ যদিও বা জানেন, এতে ভয় বা আতংকের কোনো কারণই নেই, তার পরেও তাঁদের ভয় হয়৷ এসব ক্ষেত্রে ভয় নিয়ে অন্যদের সাথে কথা বলুন, দেখবেন ধীরে ধীরে ভয় কেটে যাবে।
৩. স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন!
বিশেষজ্ঞরা জানান, সুস্থ জীবনযাত্রাই মানুষকে মে কোনো আতঙ্ক থেকে রক্ষা করতে পারে। ক্যাফেইন, নিকোটিন অ্যালকোহল এড়িয়ে চলুন। খাওয়া-দাওয়া এবং ঘুম সময়মতো করুন।
৪.নিজেকে ভালো করে চিনুন!
ভয়ের কারণ নিয়ে নিজেই একটু ভাবুন৷ এর আগে কী এমন কিছু ঘটছে যার কারণে আপনার এই ভয়? নাকি এমনিতেই ভয়?
৫.নেতৃত্বের প্রস্তুতি নিন!
মনোচিকিৎসক আন্দ্রেয়াস স্ট্রোলে জানান, যেসব পরিস্থিতির কারণে মানুষ ভয় পায়, সেগুলো থেকে দূরে সরে না গিয়ে বরং এই পরিস্থিতিতে কথা বলার বা নেতৃত্ব দেয়ার জন্য নিজেকে প্রস্তুত করা উচিৎ। তাছাড়া আয়নার সামনে নিজে নিজে কথা বললেও ভয় কেটে যায়৷ তবে মানুষের সামনে নাচ, গান আবৃত্তির মতো অনুশীলনের মধ্য দিয়ে খুব সহজেইভয়কে জয় করা সম্ভব৷
৬.খেলাধুলা!
বয়ঃ কালে অনেকেরই মস্তিষ্ক এলোমেলো থাকে, ওরা ঠিক কী করবে বা কি করা উচিৎ তা বুঝতে পারেনা। কথায় কথায় রাগ, দুঃখ, আতঙ্ক কাজ করে মনে মনে৷ মনোচিকিৎসক ডা. আন্দ্রেয়স স্ট্র্যাওলে জানান, ধুলা, শক্তাম বাক্সিং এর মধ্যে নিজের রাগ, দুঃখ, ভয় বা অভিমানকে খুব সহজে বের করে ফেলা সম্ভব৷ সোজা কথায় বলা যায়, আতঙ্ক দূর করতে শারীরিকভাবে সক্রিয় উচিৎ।
৭. ভয়কে জিইয়ে রাখা উচিৎ নয়!
তবে কোনো ভয়কেই জিইয়ে রাখা উচিৎ নয়। ভয়ের কারণ নিয়ে প্রথমে পরিবার বা বন্ধুদের সাথে কথা বলুন। সফল না হলে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন৷ তা না হলে ছোট ছোট ভয়ই পরে প্যানিক অ্যাটাকের মতো বড় আকার ধারণ করতে পারে।
৮. বাড়তি চাপ নয় কিন্তু !
স্কুলে ভালো ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে ক্লাসে সেরা হওয়ার প্রতিযোগিতা ও অনেকসময় মস্তিষ্কে প্রচন্ড চাপও আতঙ্কের কারণ হয়ে দাড়ায়৷ এই পরিস্থিতিতে মেয়ে বা ছেলেটিকে মা-বাবা এবং শিক্ষককে বোঝানোর দায়িত্ব নিতে হবে যে, প্রথম বা দ্বিতীয় হওয়াটাই যেন জীবনের একমাত্র লক্ষ্য না হয়৷ আর এতে দেখা যাবে সন্তানটি কোনোরকম চাপ ছাড়াই ভালো রেজাল্ট করছে।