হাই তোলা হাসি ও কান্নার মতোই সংক্রামক একটি ব্যাপার। একজনকে হাসতে বা কাঁদতে দেখলে আমরা যেমন হাসি বা কাঁদি তেমনি একজনকে হাই তুলতে দেখলে অন্যজনেরও হাই ওঠে।
হাই তোলার ঘটনা খুবই সাধারণ একটি বিষয়। বাসে, ট্রেনে, কিংবা রাস্তাঘাটে কেউ হাই তুললেই অন্যজনও হাই তুলে তার প্রতিক্রিয়া জানান। কিন্তু কেনো এমন হয়, তা নিয়ে নানা জনমত প্রচলিত থাকলেও এর বেশির ভাগটাই কল্পনা। এর বৈজ্ঞানিক কোনো ভিত্তিও নেই।
চিকিৎসকরা বলছেন, এ রকম হওয়ার কারণ মূলত শরীরে মিরর নিউরোনের উপস্থিতি। অনেক সময়ে দেখা যায় অন্য কাউকে আঘাত করলে, শারীরিকভাবে না হলেও মানসিকভাবে ব্যথা অনুভূত হয়।
মনোরোগ বিশেষজ্ঞদের মতে, মানুষ তো আসলে দলবদ্ধ জীব। তাই সব সময়ে দলগতভাবে চিন্তা-ভাবনা করে কাজ করতে ভালোবাসে। প্রাচীনকাল থেকেই এ ধারা চলে আসছে। কাউকে ঘুরতে যেতে দেখলে তখনই ঘুরতে যেতে ইচ্ছে করে। খেতে দেখলে খেতে ইচ্ছে করে। ঘুমাতে দেখলেও ঘুমিয়ে পড়তে ইচ্ছে করে। একই কারণে হাই তুলতে দেখলেও অসচেতন ভাবেই হাই উঠে যায়।
গবেষণায় দেখা গেছে, এক শিম্পাঞ্জির হাই তোলার ভিডিও করে অন্য এক দল শিম্পাঞ্জিকে দেখানো হয়েছিল। পরে দেখা যায়, শিম্পাঞ্জির হাইয়ের ভিডিও দেখে বাকি শিম্পাঞ্জিদেরও হাই ওঠে। একে ‘মিররিং বিহেভিয়ার’ বলা হয়।
গবেষকরা বলছেন, এ দেখা দেখি হাইয়ের জন্য দায়ী একমাত্র মিরর হরমোন। যে হরমোনের উপস্থিতি মানুষের শরীরে আছে। যার ফলে এমনটা হয়।
(সূত্র: আনন্দবাজার)
মিরর নিরন্তর সিস্টেম সম্পর্কে কিছু জেনে নেওয়া যাক...
মিরর নিউরন সিস্টেম (এমএনএস), যার মধ্যে প্রিমোটর কর্টেক্স, ইনফিরিয়র প্যারিটাল লোব, এবং মোটর এবং সোমাটোসেন্সরি কর্টেক্স জড়িত থাকে, যখন কেউ একটি মোটর অ্যাকশন করে বা অন্য কোনও ব্যক্তিকে একই ক্রিয়া করতে দেখে, এইভাবে একটি সম্ভাব্য নিউরাল মেকানিজম প্রদান করে যার মাধ্যমে আমরা অন্যের বুঝতে পারি। এই মোটর অনুকরণন সামাজিক মিথস্ক্রিয়াতে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে কারণ মিথস্ক্রিয়ায় একজনের সামাজিক অংশীদারের কর্ম এবং উদ্দেশ্যগুলির সাথে চলমান সমন্বয় এবং ভবিষ্যদ্বাণী জড়িত। যাইহোক, MNS-এর বেশিরভাগ নিউরোইমেজিং গবেষণায় অংশগ্রহণকারীদের একটি বস্তুর জন্য একটি বিচ্ছিন্ন হাতের নাগাল দেখা জড়িত, অংশগ্রহণকারীদের মাঝে মাঝে ক্রিয়াটি অনুকরণ করতে বলা হয়। রিয়েল-টাইম সামাজিক মিথস্ক্রিয়ায় অংশীদারদের মধ্যে কাজগুলি অনুকরণীয় নয়, পরিপূরক হতে থাকে। সুতরাং, এই অধ্যয়নগুলি সরাসরি সামাজিক মিথস্ক্রিয়াতে MNS বা মিররিং প্রক্রিয়াগুলির ভূমিকাকে সরাসরি সম্বোধন করে না।( source : science direct)
ধন্যবাদ-