ধারণা করা হয় মাইটোকন্ড্রিয়া নিজেই প্রাককেন্দ্রিক কোষ হিসেবে আদি সুকেন্দ্রিক কোষের ভিতরে ঢুকে পড়েছিল।
কেননা, প্রাককেন্দ্রিক কোষে মাইটোকন্ড্রিয়া থাকে না। আবার কোনো কোনো সুকেন্দ্রিক কোষেও মাইটোকন্ড্রিয়া থাকে না। তাই হয়তোবা মাইটোকন্ড্রিয়া কিছু কিছু আদি কোষের ভিতর কোনোভাবে ঢুকে গিয়েছিল এবং পরবর্তীতে কোষের অঙ্গাণুতে রূপান্তরিত হয়েছিল।
আবার, প্রাককেন্দ্রিক কোষের কোষঝিল্লিতে শক্তি উৎপন্ন হয়। একইভাবে মাইটোকন্ড্রিয়াও তার ঝিল্লিতে শক্তি উৎপাদন করে। এছাড়া সুকেন্দ্রিক কোষের মাইটোকন্ড্রিয়ার আকার প্রাককেন্দ্রিক কোষের আকারের কাছাকাছি। মাইটোকন্ড্রিয়ার ভিতরে তার নিজস্ব DNA, RNA ও রাইবোজোম থাকে; নিজেই প্রোটিন উৎপন্ন করতে পারে, যেমনটা কোষের মধ্যে হয়। এক্ষেত্রে ক্লোরোপ্লাস্ট ছাড়া শুধুমাত্র মাইটোকন্ড্রিয়ারই স্বাধীন কোষের মতো এমন নিজে নিজে প্রোটিন তৈরির ক্ষমতা আছে। মাইটোকন্ড্রিয়ার DNA সুকেন্দ্রিক কোষের DNA- এর চেয়ে আলাদা, কিন্তু এর জিনোম প্রাককেন্দ্রিক কিছু কোষের জিনোমের মতো। এছাড়াও, স্বাধীন ব্যাকটেরিয়ার মতো মাইটোকন্ড্রিয়া নিজে নিজেই বিভাজিত হয়ে সংখ্যাবৃদ্ধি করতে পারে।
অতএব, স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে যে, মাইটোকন্ড্রিয়া অতীতে প্রাককেন্দ্রিক কোষ ছিল যা কোনো আদিম সুকেন্দ্রিক কোষকে সংক্রমণ করেছিল, যেমনটা রোগ-জীবাণু আমাদের কোষকে আক্রমণ করে। কিন্তু এই সংক্রমণের ফল ভালোই হয়- মাইটোকন্ড্রিয়া কোষের ভিতর থাকার সুযোগ পায়; আবার কোষও মাইটোকন্ড্রিয়ার মাধ্যমে অনেক শক্তি উৎপাদনে সক্ষম হয়। সেই থেকে মাইটোকন্ড্রিয়া কোষের অঙ্গাণু রূপে থেকে যায়।